Main menu

বাংলাদেশের কপাল

This entry is part 16 of 17 in the series রকম শাহ'র বয়ান

কালকে দুই দোস্ত আইলো আমার দরবারে; এমন কিছু কইলো, ‘মনু ভাই, জুলাই রেভলুশনের শামনের মুখগুলা তো শিবির শব, ঘটনা কি, মুভমেন্ট কি তাইলে শিবিরই করলো!?’ ওরা ‘ছিনিয়র শাংবাদিকের’ দেওয়া একটা নয়া টার্মও শিখাইলো আমারে–’শাবেক এক্স-শিবির’ 🙂 !
তো, জুলাই মুভমেন্টের লিডারদের ভিতর এতো এতো শিবির থাকার ব্যাপারটায় মুভমেন্টে জয়েন করা অনেকেই, এস্পেশালি ছেকুলার মর্ডান মোছলমানরা একটু শরমিন্দা আছেন, এমনকি হাসিনা খেদানিতে ওনারাও নামছিলেন, এই ব্যাপারে আফছোছও দেখা জাইতেছে কারো কারো ভিতর।

ওদিকে, জাতিয় নাগরিক কমিটির ভিতর বেশ তুফান দেখা জাইতেছে, এক্স-শিবিরদের নাকি পাট্টিতে ভালো শরিকানা দিতেছে না; আবার জারা দিতেছে না, তারাও জে জিন্দেগির কোন এক ওক্তে শিবিরের ঘাটেও নাকি ভিড়ছিলেন, এখন আবার লুকাইতেছেন শেইটা (এনাদেরকেই ‘শাবেক এক্স-শিবির’ নাম দিছেন মনে হয় ছিনিয়র)। মুভমেন্টের লিডারশিপে শিবিরের পাট কতোটা, শেই ব্যাপারেও ফেছাদ দেখা জাইতেছে। বাকশালি জামানার পেরাকটিছ হিশাবে ‘শিবির ট্যাগ’ দেবার ঘটনাও নাকি ঘটতেছে… এই জদি ছিচুয়েশন, তাইলে নেশনাল মুরুব্বি হিশাবে, শবচে ছিনিয়র (দেমাগে) হিশাবে আমি রকম শা হাজির হইলাম ময়দানে, আজকে একটু তুমুল শালিশি কইরা ফেলবো ভাবতেছি!

শুরুতেই ট্যাগের ব্যাপারে দুইটা কথা কই; কয়দিন আগে হজরত আজহারি একটা কথা কইছেন জে, রাজাকার শব্দটা এখন এওয়ার্ড হইয়া গেছে। দ্যাখেন, হাসিনার হুকুমতে শিবির পরিচয় দেবার উপায় আছিলো না– শিবির ট্যাগ দিয়া খুনের, গুমের, মাইরের ঘটনা তো বেশুমার। ফলে গোপন তো করতেই হইতো, উপায় তো আছিলো না। হাসিনারে আমরা খেদাইয়া দেবার পরে বহু বছরের বান খুইলা গেছে, তাই আমি আন্দাজ করি, শিবির বা এক্স-শিবির গর্ব লইয়াই নিজেদের পরিচয় দিতেছেন, ঐ রাজাকারের মতোই এইটা এওয়ার্ড হইয়া উঠছে। নিজের জেই পরিচয় আপনে শামনে রাখতেই চাইতেছেন, শেই নামে আপনারে ডাকার ঘটনারে ট্যাগ বলা একটু মুশকিল বটে! তবে, এইটা ঠিক জে, দেশে এখনো বেশুমার কালচারাল-পলিটিকেল পকেট আছে, জেইখানে শিবির পরিচয়ে মুশকিলে পড়তে হয়; ওদিকে, ছাত্রদলও একটা এন্টি-শিবির মুডে আছে মনে হয়; ফলে, কোথাও কোথাও ঐটা ট্যাগ হইয়া উঠতে পারে বটে, এবং জুলুমের জাস্টিফায়ার হইয়া ওঠার রিক্স তো আছেই বটে! এই ছিচুয়েশনকে আমি জুলাই রেভলুশনের আফটার ইফেক্ট/টার্বুলেন্ট টাইমছ্ হিশাবে দেখতে কইবো, কিছু দিন পরে জিনিশগুলা অতোটা ঝামেলার হবে না মনে হয়। পরথম আলোতে জামাতের আমিরের ইন্টারভিউ ছাপানো হয়তো শেই শান্তির আগাম নিশানা!

এই বার আশল আলাপে ঢুকি।

আমার বিচার আপনাদের কাছে একই লগে শিবিরের তারিফ এবং নিন্দা মনে হইতে পারে! তবে, আমি তার কোনটাই করতেছি না, আমি ইতিহাশের একটা বয়ান পেশ করতেছি, আমার বিচারে জেইটা টুরুথের শবচে কাছাকাছি!

জুলাই রেভলুশনে আমি শিবিরকে কেরেডিট তো দেই-ই, তারো বেশি জেইটা মনে হইলো, ঐ কেরেডিটটা আরো পিছাইয়া দিয়া, আরো অনেক আগে থিকা শুরু করতে হবে! মুভমেন্টের লিডারদের শিবির কানেকশন ঠিকঠাক বুঝতে জাইয়াই এইভাবে পিছাইতে হইলো আমার।

এইখানে আমি খেয়াল করতে কইবো, হাসিনার বাকশালি আমল এবং বাংগালি নেশনালিজমের হিস্ট্রিওগ্রাফি। এই মুভমেন্টের লিডারদের বয়শ ধরলাম ২৫-৩৫; তাইলে এদের শবার পলিটিকেল এবং হিস্ট্রিকেল বোধ-বুদ্ধি-নজর পুরাটাই পয়দা হইছে হাসিনার তুমুল বাকশালি হুকুমতে, বাংগালি নেশনালিজমের ফেছিস্ট দখলদারির ভিতরে। এই মাইয়াপোলাপান দেখলো, বাংলাদেশ পুরাটাই ইনডিয়ার দখলে, এই দেশের ৯০%+ মানুশের ধর্ম-কালচার জেন একটা শরমের ব্যাপার, জুলুমের শিকার এবং এইটারেই আওমি লিগ-বাকশাল-বাংগালি নেশনালিজম দেশের ইন্ডিপেন্ডেন্স হিশাবে জাহির করে! বাংগালি নেশনালিজমের ইতিহাশ দেখাইতেছে জে, ১৯৪৭ একটা খুব খারাপ ঘটনা, ‘দেশভাগ’ নাম দিয়া হিন্দুস্তান ভাগ হইয়া ইনডিয়া আর পাকিস্তান হওয়াই তাদের শাচ্চা আশুরা; বিটিশ ইনডিয়া জে মোগল হিন্দুস্তান আশলে, শেইটাই মানতে নারাজ ঐ ইতিহাশ, তারা ঐটারে চিনতে কয় মিথিকেল ‘ভারত’ হিশাবে, শেই ভারতই হইলো ইনডিয়া, শেই ইনডিয়া ভাগ হইয়াই নাকি পাকিস্তান পয়দা হইলো! এইখানে তাইলে ইতিহাশের মস্ত ভিলেনের নাম জিন্না।

বাংগালি নেশনালিজম মোতাবেক ইতিহাশের ঐ বয়ানকে হাসিনার তুমুল বাকশাল আর ইনডিয়ার দখলদারির কারনে এই মাইয়াপোলাপান খুব শহজেই ইনডিয়ান নেশনালিজমের ‘নিখিল ভারত’ হিশাবে চিনতে পারার কথা! তাইলে মুশকিলটা দ্যাখেন, বাংলাদেশের শাধিনতা/ইন্ডিপেন্ডেন্সের ইতিহাশ আর বয়ানের ভিতরেই জদি দেশের নাগরিকদের ফিরিডমের শম্ভাবনা না পাওয়া জায়, খোদ বাংগালি নেশনালিজমই জদি বাংলাদেশের বাংগালি আর বাকি নাগরিকদের শকল হক মুলতবি কইরা শবাইরে বন্দি কইরা ইনডিয়ান ওশেনে নাইতে বাদ্ধ করে, এরচে বড়ো আপছেট আর বেদনা কি হইতে পারে!?

এখন খেয়াল করেন, বাংলাদেশের নাগরিকদের মুক্তি চায় জারা, শাচ্চা শাধিনতা জদি আপনের বাশনা হয়, ইনছাফ নামে শকল মাকলুকাতের হকের পক্ষে জদি পলিটিকেল মুভমেন্ট করতে চান আপনে, তাইলে তো অল্টারনেটিভ ইতিহাশ-ভাবনা লাগবে আপনের, কেননা খোদ ‘শাধিনতার বয়ান’ আপনার বাশনারে ধরতে পারতেছে না, বরং আপনে ‘এস্টকহোম ছিনড্রোমে’ ঢুইকা জাইতেছেন!

এখন দ্যাখেন, আপনে দেশের মানুশের মুক্তি চান, ইন্ডিপেন্ডেন্সের পলিটিক্স করবেন, মুভমেন্ট করবেন, আপনের তো তাইলে একটা অর্গানাইজড পলিটিকেল ফোর্ছ লাগবে, শেইখানে আপনের পলিটিকেল দিশা থাকতে হবে। দেশের মানুশকে দাওয়াত দিতে হবে আপনার, তারচে বড়ো কথা, দেশের মানুশের ভরশা হইতে হবে, আপনের দাওয়াতে নাগরিকরা শাড়া না দিলে কেমনে মুভমেন্ট করবেন আপনে!

আপনে তখন অর্গানাইজড পলিটিকেল ফোর্ছের তালাশ করবেন, দেশের পলিটিকেল অর্গানাইজশনগুলায় নজর দেবেন, তাদের বয়ান আর ইতিহাশ-ভাবনা জাচাই-বাছাই করবেন। তখন হাসিনার দুশমন পলিটিকেল ফোর্ছগুলার ভিতর শম্ভাবনা বুঝতে জাইয়া পাইতেছেন বিম্পি, দুয়েকটা বাম দল আর শিবির। বিম্পিরে দেখলেন টর্চার্ড, হাসিনার জুলুমে মরতেছে বিম্পি, জেলে পচতেছে, গুম হইতেছে, ঘরবাড়ি ছাইড়া ধানখেতে ঘুমাইতে হইতেছে; ভালো একটা শম্ভাবনা খুইজা পাইলেন, তখন তাদের ইতিহাশ ভাবনায় নজর দিলেন, কি পাইতেছেন?

ভালো ধরতে পারবেন না আপনে, আন্দাজ করি! একদিকে তাদের ভিতর আপনে ইনডিয়ার দখলদারির ব্যাপারে আপত্তি পাইবেন, ডেমোক্রেছির দাবি পাইবেন আবার ইনডিয়ারে রাজি-খুশি কইরা দেশে ডেমোক্রেছি কায়েমের আশাও পাইবেন–খোদ দখলদারের কাছেই নিজের মুক্তির লড়াইতে মদদ চাইতেছে জেন বিম্পি! বড়োই আজব ঘটনা, বুঝতেই পারার কথা না আপনের, ওদিকে টেক্সট নাই কোন, তার ইতিহাশভাবনা কি, শেই ব্যাপারে কোন বোঝাপড়া জনতার দরবারে পেশ করে নাই বিম্পি!

কারনটা বুঝতে চাইলেন; তখন বিম্পির একটা দাবিতে নজর আটকাইলো আপনার–আওমি লিগের চাইতে বিম্পিতেই ফিরিডম ফাইটার বেশি, মুক্তিজুদ্ধের ঘোশক জিয়া…। আপনের তখন মনে পড়বে, জেই শাধিনতার ডিছকোর্ছ/বয়ানে একিন করায় ‘এস্টকহোম ছিনড্রোম’ ঘটতেছে, শেইটারই আরেকটা ডালের নাম বিম্পি! হাসিনার লগে বিম্পির দুশমনিটা ঐ বয়ানে কার কতোটা এস্টেক, শেই ইশুতে, জেইখানে হাসিনার দাবি–১০০%, বিম্পি শেইটা মানতে নারাজ এবং এই ব্যাপারে ‘জাস্ট শালিশি’ করাটাই ইনডিয়ার কাছে তার আবদার!

ঘটনাটা বুঝতে আবার আপনের জিন্নায় ফিরতে হবে তখন! আপনে তখন দেখবেন, বিম্পির কাছেও জিন্না মস্ত ভিলেন অথবা এই ব্যাপারে কিলিয়ার পজিশনই নাই তাদের! বাংগালি নেশনালিজমের ইতিহাশ-ভাবনা আর বয়ান থিকা বাইরাইতে না পারার কারনেই বিম্পি এইটা বুঝতে পারে না জে, পাকিস্তান ইতিহাশের একটা এছেন্সিয়াল ঘটনা, জাস্ট বিটিশ ইনডিয়ার শাধিনতা, বিটিশদের চইলা জাওয়া মাত্রই হিন্দুস্তানের মোছলমানরা মাইনোরিটি হইয়া পড়তেছে এবং এমন একটা রাশ্টো হইতে জাইতেছে ঐটা জার পাটাতনের নাম ‘ইনডিয়ান নেশনালিজম’, ডেমোক্রেটিক ভ্যালুজ আর আইনের শাশনের বদলে একটা ইউনিয়ন হইয়া ইনডিয়ান নেশনালজমের ‘নিখিল ভারত’ হইয়া ওঠাই জেই রাশ্টের আলটিমেট মনজিল! আপনে খেয়াল করলেন জে, জিন্না এই ‘নিখিল ভারত’কেই কইছিলো ‘মোছলমানদের কাস্ট ছিস্টেমের আন্ডারে চইলা জাওয়া’! আপনে তখন বুঝবেন জে, জিন্না আশলে হিরো, শেই পাকিস্তান নাই বটে, কিন্তু দেশের ৯০%+ মানুশ জে গরু জবাই কইরা আরামে মচ্ছব করতে পারে, শেইটা শম্ভব হইছে ঐ জিন্নার কারনেই! মোছলমান বাংগালির কালচারাল ফিরিডমের পাটাতনের নাম ১৯৪৭ এবং জিন্না! এবং বাংলাদেশের নাগরিকদের ফিরিডমের এই গোড়ার কথাটা বাংগালি নেশনালিজম, বিম্পি, আওমি লিগ এবং বাম ইতিহাশ-ভাবনা আর বয়ানে শমানভাবেই পুরা গরহাজির! অথচ, ইতিহাশের এই জামানায় আইশা বিম্পির ইতিহাশ ভাবনা আরেকটু কিলিয়ার হইয়া ওঠার কথা; অন্তত আজকের ইনডিয়ায় বিজেপির শাশন, ইনডিয়ার তাবত শমাজ রেডিকালাইজড হবার এই ওক্তে, ইনডিয়ার মোছলমান আর দলিত হিন্দুর উপর জুলুমের এই মচ্ছবে এবং শেইটারে পোস্ট-কলোনিয়ালিজম দিয়া জাস্টিফাই করার এই তুমুল পোপাগান্ডিস্ট ইতিহাশের ভিতরে নজর দিয়া বিম্পির এখন বুঝতে পারার কথা জে, জিন্না ইতিহাশের একজন হিরো; এমন কোটি কোটি মানুশের জন্ন ফাইট করতেছেন, নিন্দার কাটা নিতেছেন জাদের জন্ন, নিজে এমনকি তাদের মজহাবের লোকও না! বিটিশ/ইউরোপিয়ান লিবারালিজমের মায়া উতরাইয়া পোতিটা মোছলমানের ভিতর একজন মানুশ পাইয়া গেছেন এবং এইটাই তারে আরেকজন মাওলানা আবুল কালাম আজাদ হইতে না দিয়া জিন্না বানাইছে!

ইতিহাশের আলটিমেট মশকরা হইলো, দেশের মানুশের ফিরিডমের তালাশে আপনের ছফর/কোয়েস্ট তখন আপনারে ভিড়াইয়া দেবে শিবিরের ঘাটে! এইখানে ইতিহাশের মশকরাটা হইলো, জেই মওদুদি এবং জামাত পাকিস্তান ঠেকাইতে চাইছে (ইনডিয়ান কংগেরেছি ডিছকোর্ছের বাইরে থাইকা আলবত), জিন্নার রাস্তায় পলিটিকেল কাট বিছাইছে, শেই জামাতের একটা ডাল শিবিরের কাছেই জিন্নারে হিরো ভাবার ছবক লইতে হয়, জিন্নারে শিবির এতোটাই নিয়া নিছে নিজের ভিতর! এই শিবিরের ঘাটে গেলে শুরুতে আপনের মনে হইতে পারে জে, এইখানেই আছে বাংলাদেশের মানুশের মুক্তির ফুল প্যাকেজ! এই ঘাটে জিন্নারে চেনা জাইতেছে ঠিকঠাক, ইনডিয়ারে চেনা জাইতেছে, বাংগালি নেশনালিজমরে ইনডিয়ান নেশনালিজমের ডাল হিশাবে চেনা জাইতেছে, হাসিনা জে মুক্তিজুদ্ধের নামে ইনডিয়ার দখলদারি, ইনডিয়ান নেশনালিজমের নিশান উড়াইয়া ইনডিয়ার কলোনিয়াল গভর্নর হিশাবে কাম করতেছে এবং ছেরেফ হাসিনা খেদানির কোন ঘটনা ঘটানো জাবে না ইতিহাশে, ইনডিয়ারে জে হাসিনার পিছে দেখতেই হবে, এইটা আপনে শিবিরের ঘাটে গেলে বুঝবেন। আপনের তখন মনে হইতে পারে জে, আচ্ছা, এই কারনেই তাইলে বিম্পির দাওয়াতে দেশের জনতারে ততো পাওয়া জাইতেছে না, বিম্পির উপর, খালেদা জিয়ার উপর হাসিনার এতো এতো জুলুমের পরেও এবং ‘দিল্লি না ঢাকা…’–এই জিকির চিল্লাইয়া করতে পারে না বিম্পি!

এইবার তো তাইলে আপনে একটা অর্গানাইজড পলিটিকেল ফোর্ছ পাইয়া গেলেন, এইবার তো মস্ত হুলাহুলি করতে পারার কথা আপনের, কিন্তু পারলেন কি?

নোপ। আপনের শামনে একটা নয়া মুশকিল, ইতিহাশের একটা নয়া গিট্টু হাজির হইলো: জামাত শিবিরের ডাকেও তো দেশের জনতা আশতেছে না, ঐ জনতার ভিতর তুমুল এন্টি-ইনডিয়ান ছেন্টিমেন্ট থাকার পরেও!? এইটা কি হাসিনার জুলুমের জন্ন পারা জাইতেছেন না, নাকি আরো কারন আছে? জামাতের ব্যাপারে প্যাথলজিকেল লায়ার হাসিনার পোপাগান্ডাতেই কি জনতা একিন করতেছে? এইখানে কেন হাসিনারে বেশ কামিয়াব লাগতেছে, ঘটনা কি!?

এই পোশ্নের জবাব তালাশ করতে জাইয়া আপনে খুব শম্ভব শক খাইছেন বেশ! শুরুতেই খেয়াল করলেন জে, ইছলামে এলেমের ছিলছিলার একটা চিপায় পইড়া গেছেন মওদুদি! ফলে মোছলমানদের ভিতর মওদুদির পলিটিকেল চিন্তার পোরতি একটা শন্দেহ আছে! এইটা একটা কারন হইতে পারে, কিন্তু আপনে আরো দেখলেন, ১৯৭১ লইয়া জামাত/শিবির তেমন আলাপ করে না এখন; একটা বেনিফিট অব ডাউট দিতেও রাজি আপনে: ১৯৪৭ শালের আগের পজিশন থিকা শইরা জামাত পাকিস্তান এবং জিন্নারে জেমন মনে লইছে, বাংলাদেশের ব্যাপারেও হয়তো ঘটনা তেমনই; বিটিশ ইনডিয়ায় নিজেদের পজিশন লইয়া পাকিস্তান আমলে জামাত ততো আলাপ করতো না আর, আগের পজিশন মুইছা ফেলছিলো মোটামুটি, বাংলাদেশের ব্যাপারেও হয়তো জামাত/শিবির তাই ১৯৭১’র আলাপ আর করে না তেমন।

তবু দেখলেন, কিছু খটকা থাইকাই জাইতেছে! জামাত/শিবিরের ন্যারেটিভে ১৯৭১’র ১০০% ইনডিয়ান কন্সপিরেছি–ইনডিয়া আর কতোগুলা গাদ্দার বাংগালির কাম। এতে আনইজি লাগলো আপনার; কেননা, আপনে মানুশের বেদনা, চোখের পানি আর রক্ত চেনেন, এগুলারে দাম না দিয়া পারেন না আপনে। পোরতিটা মোছলমানের কোর্তার নিচে জিন্না জেমন একজন কইরা মানুশ পাইয়া গেছিলেন, আপনে শেই জিন্নার নজর দিয়া পোরতিটা বাংগালির কোর্তার নিচেও একজন কইরা মানুশ পাইয়া গেলেন, ইনডিয়ান কন্সপিরেছি নামের ইরেজার দিয়া শেই মানুশের বেদনা, চোখের পানি আর রক্ত মুছতে পারলেন না! আপনের এই না-পারাই আপনারে খুব শম্ভব এক্স-শিবির বানাইয়া দিলো, আপনে আর জামাতে ঢুকতে রাজি করাইতে পারলেন না নিজেরে! আরেকটা নয়া ছফরে নামতে হইলো আপনার, শেই ছফরে আগাইতে আগাইতে আপনে ‘শাবেক এক্স-শিবির’ হইয়া উঠতে থাকলেন!

আপনার এই নয়া ছফর আর পোশ্ন কোন ঘাটে লইয়া জাবে আপনারে? বাংগালি নেশনালিজম লইয়া একটা আনইজি ভাব খুব শম্ভব আপনে পাইয়া গেছেন রাজ্জাকের পোলা আহমদ ছফায়, কিন্তু ঐখানে পাকিস্তান আর জিন্নার ফয়ছালা নাই পুরা! এর ভিতর ইনডিয়ার ইতিহাশ ইশকুলে একটা নয়া দলিল হাজির হইছে: দেখা গেলো, ১৯৪৭ শালের বাংলা ভাগে জিন্নারে দায়ি করা জাইতেছে না, ঐটা কংগেরেছ আর হিন্দু মহাশভার ভাগে পড়তেছে! পরে আরেকটু কিলিয়ার পলিটিকেল দিশা আপনে খুব শম্ভব পাইতেছেন ফরহাদ মজহারে; তার লালন, নদিয়ার ভাব আর বড়ো বাংলার ভিতর আপনে খুব শম্ভব বাংগালি নেশনালিজমের বাইরে থাইকাই ১৯৭১ শালে বাংগালি মানুশের বেদনা, চোখের পানি আর রক্ত দেখতে পারলেন, জিন্নারে ভিলেন ভাবার বদলে একজন হিরো মাইনাই। এইখানে তাইলে আপনে মোছলমান বাংগালি পাইলেন লগে, ইনডিয়ার দখলদারিও দেখতে পাইলেন আরামে, হাসিনারে খেদাইতে পারার দরকারি ইতিহাশ ভাবনায় মোটামুটি হাজির হইলেন এইভাবে। আর এই দফায় ‘শাবেক এক্স-শিবির’ হইয়াও শিবিরের লগে আপনের মোর্চা হইলো, মোর্চা হইলো বিম্পির লগে, মোর্চা হইলো বাংগালি নেশনালিজমের বাহানার নিচে ইনডিয়ান নেশনালিজমের জুলুমের ভিতর থাকা মোছলমানের লগে, ডেমোক্রেটিক ছেকুলার মর্ডান হিন্দু-মোছলমানের লগে।

তো, এখন? হাসিনা তো পালাইছে, ইতিহাশ ভাবনার ব্যাপারে আপনের ছফর/কোয়েস্ট কি খতম? আমি কইবো, না। খতম হয় নাই।

বড়ো বাংলার আইডিয়াটা আরেকটু খেয়াল করতে কইবো আমি। এইটার ভিতর আপনে ‘নিও-বাংগালি নেশনালিজমে’র শম্ভাবনা পাইবেন একটা (ফলে নিও-বাকশাল/ফেছিজম উকি দিতেছে পেটের ভিতর থিকা!), এইটা বাংলাদেশকে একটা ‘ইন্টেরিম রাশ্টো’ ভাবাইতে চাইবে আপনারে! বড়ো বাংলার আইডিয়ার ভিতর আপনে এখনকার বাংলাদেশের বিহারি-মান্দি-চাকমারে কই রাখতেছেন? নেশনালিজমে বেক্তি ফরহাদ মজহারের নিন্দামন্দ কি বড়ো বাংলার আইডিয়ারে শামলাইতে পারবে? এই আইডিয়া আপনারে আখেরে দিনেশের ‘বৃহৎবংগে’ লইয়া জাবে খুব শম্ভব! দিনেশের ভিতর দিয়া পরে এমনকি ইনডিয়ান নেশনালিজমের ইনফেকশন ঘটার শম্ভাবনা! হজরত মজহারের পোস্ট-কলোনিয়ালিজম ঐ ইনফেকশন ঠেকাবার বদলে উল্টা বাড়াইয়া দিতে পারে! এইখানে ইনডিয়ার বিজেপির ব্যাপারে দুইটা কথা কইয়া রাখি: ছাভারকার গরুভক্তিরে নাকি নিন্দামন্দ করছিলো খুব; ওদিকে, বাজপায়ি কইতেছিলেন, বিজেপির ভিতর দিয়া ছেকুলার ইনডিয়া রাশ্টের চরিত্রের বদল ঘটবে না; আজকের বিজেপি দরকার মতো ছাভারকারকে ছাইটা নিছে, শেই বাজপায়ির পোস্টেই এখন পাওয়া জাইতেছে মোদিরে। এইটাই হইলো, ইশকুল অব থটের মহিমা, বেক্তি থিয়োরিস্ট আখেরে একটা খোলশ, চিন্তাটাই শাপ, বয়ান আখেরে বয়াতি নামের খোলশ ফুইড়া বাইর হইয়া জায়; আমাদের তাই বিচার করতে হবে কোন একটা বয়ানের শম্ভাবনা, বয়াতির কোটেশন তারে আটকাইতে পারে না পেরায়ই!

এইখানে একটা মজার কথা জানানো জায় আপনাদের; বড়ো বাংলা’র আইডিয়ার ভিতর একটা দেমাগ আছে, নেশনালিস্ট দেমাগ, ইতিহাশে জেইটার পয়লা হাজিরা খুব শম্ভব বঙ্কিমে! ওনার দেমাগ আছিলো এমন, ওয়ান্স আপন এ টাইম, শিংহল আছিলো বাংগালির উপনিবেশ। ইতিহাশের এই জামানায় কলোনিয়াল বাশনা আর মোরাল ব্যাপার নাই, কিন্তু এইটা কিলিয়ার জে বড়ো বাংলার আইডিয়া বাংলাদেশের টেরিটরি লইয়া আনহেপি, অন্তত ইনডিয়ান বাংলা দখল করতে চায় ঐটা। দিনেশ এমনকি আশামও দখল করতে চায়, ওনার মতে অহমিয়া হইলো বাংলারই একটা ডায়ালেক্ট, আরেকটা ভাশা না মোটেই। ফলে বড়ো বাংলাও ‘দেশভাগ’ লইয়া কান্দে এবং বাওয়ামি ‘বাংগালি নেশনালিজমে’র বরাবর একটা শোনালি অতিতের ইতিহাশ পয়দা কইরা নেশনাল ফিউচারের টেরিটোরিয়াল নকশা আকতে থাকে! ইনডিয়ান ইম্পেরিয়ালিজমের জবাবে বাংগালি ইম্পেরিয়ালিজমের খোয়াবের ভিতর একটা দেমাগি টক্কর আছে বটে, কিন্তু হেলদি না ব্যাপারটা, ইউএন কনভেনশন মোতাবেক বেআইনিও ভাবতে হয় আমাদের!

ঝামেলা হইলো, আমরা চাই বা না চাই, রাশ্টো বাস্তব এবং মর্ডান রাশ্টোগুলা একেকটা জাতি-রাশ্টো বটে! কিন্তু আইডিয়া হিশাবে নেশন ততো পজিটিভ ব্যাপার না। আমার পোস্তাব তাই নেশন আইডিয়ারে মিনিমাল রাখা। জাতি-রাশ্টের নেশনকে আমি দেখতে কইবো কোন একটা রাশ্টো পয়দা হবার পরের ঘটনা হিশাবে; রাশ্টো আছে তো এই নেশনটা আছে, রাশ্টো নাই তো নেশনটাও নাই। একটা জাতি-রাশ্টের নেশন ছেরেফ একটা ইকোনমিক এনটিটি, একটা পপুলেশনের একটা ছিংগেল ইকোনমিক শার্থ।

তখন তাইলে জাতি-রাশ্টো হিশাবে বাংলাদেশের একটা পপুলেশন আছে, এই পপুলেশনের শার্থ ইনডিয়া বা পাকিস্তানের শার্থের উল্টাদিকে খাড়াইয়া আছে। এই পপুলেশনের আবার বহু ভাগ আছে, বহু ধর্ম-কালচারের লোক/শমাজ আছে এই দেশে, তারা শবাই আইনের নজরে শমান নাগরিক। এই দেশের কোন একটা পলিটিকেল আইডিয়া জদি ইনডিয়া বা পাকিস্তানের লগে এফিলিয়েটেড ফিল করে, বাড়তি মাখামাখি করতে চায়, শেইটা এই রাশ্টের জাতি এনটিটির শার্থের দুশমন।

এই রাশ্টের পলিটিকেল পাট্টি/ইশকুল/আইডিয়াগুলারে আমি কইবো, মানুশের বেদনা, চোখের পানি আর রক্ত মোছার কোন ইরেজার নাই। কিন্তু ইনডিয়া বা পাকিস্তানে ফিরতে বহু বেদনা, চোখের পানি আর রক্ত মুছতে হয় আপনার বয়ানের ইরেজারে। আপনে এমনকি খেয়ালও করতে পারেন না জে, এই তিনটা রাশ্টের ভিতর কেবল বাংলাদেশই হইলো পোস্ট-কলোনিয়াল রাশ্টো, ইনডিয়া আর পাকিস্তান এখনো কলোনিয়াল রিয়েকশন হইয়া আছে এবং ঐ রাশ্টো দুইটা তার তার নাগরিকের না, বরং ঐ ঐ দেশের মানুশগুলাই রাশ্টের দখলে, বয়ানের দরকারে কোরবানি দিতে পালতেছে তাদের! বাংলাদেশের নাগরিকেরা ইনডিয়ান বা পাকিস্তানিদের চাইতে ভালো আছে, ঐ দুই দেশ এখনো তাদের দখলে থাকা মানুশগুলারে নাগরিক হিশাবে মানতে রাজি হয় নাই এখনো। মানুশের বেদনা, চোখের পানি আর রক্ত বয়ানের ইরেজারে মুইছা না ফেললে এক্সিডেন্ট বা কন্সপিরেছির ফল হিশাবে না দেইখা বাংলাদেশকে ইতিহাশের একটা এছেন্সিয়াল পজিটিভ ঘটনা হিশাবে দেখতে পারার কথা আমাদের।

#

রকমশাহেরবয়ান ১৯-২১.২.২৫

Series Navigation<< বেহুদা দস্তখতের বুরোক্রেছিহিন্দুস্তান ডিভাইডেড >>
The following two tabs change content below.
Avatar photo

রক মনু

কবি। লেখক। চিন্তক। সমালোচক। নিউ মিডিয়া এক্সপ্লোরার। নৃবিজ্ঞানী। ওয়েব ডেভলপার। ছেলে।
Avatar photo

Latest posts by রক মনু (see all)

এডিটর, বাছবিচার।
View Posts →
কবি, গল্প-লেখক, ক্রিটিক এবং অনুবাদক। জন্ম, ঊনিশো পচাত্তরে। থাকেন ঢাকায়, বাংলাদেশে।
View Posts →
কবি। লেখক। চিন্তক। সমালোচক। নিউ মিডিয়া এক্সপ্লোরার। নৃবিজ্ঞানী। ওয়েব ডেভলপার। ছেলে।
View Posts →
মাহীন হক: কলেজপড়ুয়া, মিরপুরনিবাসী, অনুবাদক, লেখক। ভালোলাগে: মিউজিক, হিউমর, আর অক্ষর।
View Posts →
গল্পকার। অনুবাদক।আপাতত অর্থনীতির ছাত্র। ঢাবিতে। টিউশনি কইরা খাই।
View Posts →
দর্শন নিয়ে প্রাতিষ্ঠানিক পড়াশোনা, চাকরি সংবাদপত্রের ডেস্কে। প্রকাশিত বই ‘উকিল মুন্সীর চিহ্ন ধরে’ ও ‘এই সব গল্প থাকবে না’। বাংলাদেশি সিনেমার তথ্যভাণ্ডার ‘বাংলা মুভি ডেটাবেজ- বিএমডিবি’র সহপ্রতিষ্ঠাতা ও সমন্বয়ক। ভালো লাগে ভ্রমণ, বই, সিনেমা ও চুপচাপ থাকতে। ব্যক্তিগত ব্লগ ‘ইচ্ছেশূন্য মানুষ’। https://wahedsujan.com/
View Posts →
কবি। লেখক। কম্পিউটার সায়েন্সের স্টুডেন্ট। রাজনীতি এবং বিবিধ বিষয়ে আগ্রহী।
View Posts →
জন্ম ১০ নভেম্বর, ১৯৯৮। চট্টগ্রামে বেড়ে ওঠা, সেখানেই পড়াশোনা। বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগে অধ্যয়নরত। লেখালেখি করেন বিভিন্ন মাধ্যমে। ফিলোসফি, পলিটিক্স, পপ-কালচারেই সাধারণত মনোযোগ দেখা যায়।
View Posts →
জন্ম ২০ ডিসেম্বরে, শীতকালে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অপরাধবিজ্ঞান বিভাগে পড়তেছেন। রোমান্টিক ও হরর জনরার ইপাব পড়তে এবং মিম বানাইতে পছন্দ করেন। বড় মিনি, পাপোশ মিনি, ব্লুজ— এই তিন বিড়ালের মা।
View Posts →
পড়ালেখাঃ রাজনীতি বিজ্ঞানে অনার্স, মাস্টার্স। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়। বর্তমানে সংসার সামলাই।
View Posts →
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগে শিক্ষকতা করেন। সংঘাত-সহিংসতা-অসাম্যময় জনসমাজে মিডিয়া, ধর্ম, আধুনিকতা ও রাষ্ট্রের বহুমুখি সক্রিয়তার মানে বুঝতে কাজ করেন। বহুমত ও বিশ্বাসের প্রতি সহনশীল গণতান্ত্রিক সমাজ নির্মাণের বাসনা থেকে বিশেষত লেখেন ও অনুবাদ করেন। বর্তমানে সেন্টার ফর স্টাডিজ ইন সোস্যাল সায়েন্সেস, ক্যালকাটায় (সিএসএসসি) পিএইচডি গবেষণা করছেন। যোগাযোগ নামের একটি পত্রিকা যৌথভাবে সম্পাদনা করেন ফাহমিদুল হকের সাথে। অনূদিত গ্রন্থ: মানবপ্রকৃতি: ন্যায়নিষ্ঠা বনাম ক্ষমতা (২০০৬), নোম চমস্কি ও এডওয়ার্ড এস হারম্যানের সম্মতি উৎপাদন: গণমাধম্যের রাজনৈতিক অর্থনীতি (২০০৮)। ফাহমিদুল হকের সাথে যৌথসম্পাদনায় প্রকাশ করেছেন মিডিয়া সমাজ সংস্কৃতি (২০১৩) গ্রন্থটি।
View Posts →
তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞানের ছাত্র, তবে কোন বিষয়েই অরুচি নাই।
View Posts →
মাইক্রোবায়োলজিস্ট; জন্ম ১৯৮৯ সালে, চট্টগ্রামের সীতাকুন্ডে। লেখেন কবিতা ও গল্প। থাকছেন চট্টগ্রামে।
View Posts →
জন্ম: টাঙ্গাইল, পড়াশোনা করেন, টিউশনি করেন, থাকেন চিটাগাংয়ে।
View Posts →
বিনোদিনী দাসী (১৮৬২/৩ - ১৯৪১): থিয়েটার অভিনেত্রী, রাইটার। ১৮৭৪ থেকে ১৮৮৬ এই ১২ বছর তিনি কলকাতার বিভিন্ন থিয়েটারে অভিনয় করেন। কবিতার বই – বাসনা এবং কনক ও নলিনী। আত্মজীবনী - ‘আমার কথা’ (১৯২০)।
View Posts →