Main menu

হিন্দুস্তান ডিভাইডেড Featured

This entry is part 17 of 17 in the series রকম শাহ'র বয়ান

জিন্না কি ইতিহাশের ভিলেন, নাকি নায়ক? বাংগালি নেশনালিজম জেই ইতিহাশ বানাইছে তাতে জিন্না হইলেন ভিলেন। এইটা শেয়ার করে মতি-মাহফুজ গং, আওমি লিগ, ছিপিবি, কলিকাতা, ইনডিয়ার কংগেরেছ, বিজেপি, ১৯৪৭ শালের আগের জামাত; বিম্পির ভিতরও বাংগালি নেশনালিজমের আছর আছে, কিন্তু জিন্নার ব্যাপারে খুব কিলিয়ার পজিশন দেখতে পাই না আমি বিম্পির ভিতর।

এদের কাছে জিন্না একজন ভিলেন কারন, এরা শবাই ‘অখন্ড ভারত’ নামে একটা খোয়াব শেয়ার করে, জেইখানে জিন্না কইতেছেন, ‘দুই জাতি’র কথা! আর বিটিশ ইনডিয়ার কংগেরেছের দাবি, এক জাতি, জার নাম ‘ভারতি’, একটাই দেশ, জার নাম ‘ভারত’। এই জায়গাটা ঠিকঠাক বিচার করা গেলেই মাত্র আমরা ৪৭, ৭১, ২৪ বুঝতে পারবো ঠিকঠাক।

বিটিশ ইনডিয়ায় জদি একটা ‘জাতি’র কোন শম্ভাবনা আদৌ থাকে, তার নাম ‘ভারতি’ বা ‘ইনডিয়ান’ না, ইতিহাশের কখনোই তা আছিলো না; মোগল আমলে ‘জাতি’র আইডিয়ার কাছাকাছি একটা জিনিশ আছিলো খুব শম্ভব, জেইটার নাম ‘হিন্দুস্তানি’ এবং এইটাই বিটিশরাও ইউজ করতো শুরুতে; পরে ওরিয়েন্টাল এস্টাডিজ ডেভলাপ করার পরে বিটিশরা ঐটারে ‘ইনডিয়ান’, হিন্দুস্তানরে ইনডিয়া ডাকা শুরু করে; কংগেরেছ ঐ ওরিয়েন্টাল এস্টাডিজের মুরিদ হিশাবে ‘ইনডিয়া/ভারত’ পছন্দ করা শুরু করে, জেই ভাবনার ডেভলাপড গোড়া বঙ্কিমে এবং পরে বিবেকানন্দের ভিতর দিয়া আরো মজবুত হইছিলো। এই কারনে আমি কইছি, ইনডিয়া বা ভারত ডিভাইডেড হয় নাই, বরং হিন্দুস্তান ডিভাইডেড হইয়া পাকিস্তান আর ইনডিয়া হইছে।

জিন্না হিন্দুস্তান মানতে রাজি আছিলো এবং জিন্নার কাছে হিন্দুস্তান মানে বহুজাতির একটা কনফেডারেশন, জেইটা হিন্দুস্তানি নামে একটা মহাজাতির শম্ভাবনা পয়দা করে। কিন্তু কংগেরেছ এইটা মানতে নারাজ, তারা মুখে ‘না না’ কইতে থাইকা ধর্মের বেছিছে ‘ইনডিয়া/মিথিকেল ভারত’ খোয়াব দেখতে থাকে এবং হিন্দুস্তানের মানুশের ভিতর বহু ভাগ-ধর্ম-কালচার আছে বইলা মানতে একদমই নারাজ। ওরিয়েন্টালিস্ট কংগেরেছের এই ভাবনার জবাবে জিন্না হিন্দুস্তানে মোছলমানদের মাইনোরিটি হিশাবে দেখতে পায় এবং ঐ মাইনোরিটির নেতা হইয়া ওঠে। জিন্না ইহিতাশের নায়ক কিনা, শেই ব্যাপারে আগে জদি কোন শন্দেহ থাকেও, আজকের ইনডিয়ায় মোছলমানদের হালতে নজর দিলেই আমাদের বুঝতে পারার কথা জে, জিন্না ওয়াজ রাইট–ইনডিয়ান মানে একটা ধর্মের পরিচয়, ভারত মানে ইজরায়েলের মতো একটা মিথিকেল ভুবন এবং কংগেরেছের মোছলমান মানে বিদেশি এবং ফরেন কালচারাল/রিলিজিয়াছ হামলা এবং এইগুলা তখনই ভাবনা হিশাবে খুবই কিলিয়ার-কাট আছিলো। কংগেরেছ শেইটা অশিকার করছে, জিন্না শেইটা দেখাইয়া দিছেন।

পরের পাকিস্তানে আমরা জিন্নার ঐ ভাবনার কন্টিনুশন দেখতে পাই নাই! ইতিহাশ ঠিকঠাক বুঝলে নামটা পাকিস্তান না হইয়া হিন্দুস্তান হইতে পারতো! এমন জে, হিন্দুস্তান থিকা বাইরায়া ‘ইনডিয়া/মিথিকেল ভারত’ পয়দা হইতেছে!

এনিওয়ে, হিন্দুস্তান জেমন, পাকিস্তানও তেমনই একটা কনফেডারেশন, বহুজাতির কনফেডারেশন। জিন্না শেইটা মরন তক মানতেন খুব শম্ভব, শেই কারনেই তার কবরে হয়তো বাংলায়ও নামফলক পাইতেছি আমরা!

তো, জিন্না তো মরলেন। পরে পুবের পাকিস্তানে জমিদারি উইঠা জাওয়ায় এইখানের মানুশের ভিতর ডেমোক্রেটিক শম্ভাবনা বাইড়া গেছে কিন্তু পচ্চিমে শেইটা ঘটে নাই। ঐ ডেমোক্রেটিক শম্ভাবনা থিকাই জিন্নার আদি খোয়াব মোতাবেক আওমি লিগের ৬ দফা পাইতেছি আমরা; বিটিশ ইনডিয়ায় জিন্না জেইটা চাইছেন, আওমি লিগ/মজিবর ৬৬ শালে পাকিস্তানে ঠিক শেইটাই চাইছেন। ৬ দফা হইলো একটা কনফেডারেট পাকিস্তান বানাবার পায়তারা মাত্র, ঐটার ভিতর বাংলাদেশ নাই। কনফেডারেট হিন্দুস্তান মানতে নারাজ আছিলো কংগেরেছ, তাই হিন্দুস্তান ভাইংগা জেমন পাকিস্তান আর ইনডিয়া হইছে, তেমনি কনফেডারেট পাকিস্তান মানতে নারাজ হবার কারনেই ইতিহাশে বাংলাদেশ পয়দা হইতে হইছে।

পাকিস্তানের পচ্চিমে ফিউডাল এস্ট্রাকচার বহাল রাখছে তারা এবং ডেমোক্রেছি চাইয়া পচ্চিমের জনতার পেরেশার ট্যাকেল দিতেই পাকিস্তান আর্মির খমতা দখল করতে হইছে, আইউব গজাইছে। পরে ভুট্টো আইউবের খেদাইলেও ভুট্টোও ডেমোক্রেছির বদলে ফিউডাল শার্থেরই ছিপাই হইয়া রইলেন; ভুট্টো হয়তো ডেমোক্রেটিক হইতে পারতেন, না পারার আরেকটা বড়ো কারন পচ্চিম পাকিস্তানের রেছিজম, পুবের পাকিস্তানের ব্যাপারে একটা ইনহেরেন্ট ঘেন্না। আমরা খেয়াল করলে দেখবো, মরতে হইছে ভুট্টোর, জিয়াউল হক চইলা আশছেন। এইটারে ভাবতে পারেন, পুবের পাকিস্তানের একজন বাংগালির লেখা পিপলছ্ পাট্টির ট্যাগলাইনের লগে খোদ ভুট্টোর বেইমানির ফল হিশাবে! শেই ট্যাগ লাইন হইলো–রোটি, কাপড়া অর মকান।

ছো, ৭১ ইতিহাশে নেছেছারি কইরা তুলছে পচ্চিম, বাংলাদেশ না হবার উপায় আছিলো না পুবের পাকিস্তানের মানুশের। এবং শেই মওকাটাই নিছে ইনডিয়া।

ছো, মেনিপুলেশন ইত্তাদি মাইনর ইশু; মেজর হইলো, পাকিস্তানের দুই পাটে পলিটিকেল শম্ভাবনার তফাত এবং পাওয়ারের ছেন্টার পচ্চিমে হবার কারনে তাদের জালেম হবার মওকা এবং তাই হইছেন তারা।

কিন্তু বাংলাদেশের জন্ন আফছোছের ব্যাপার হইলো, ৭১ শালে বাংলাদেশ পয়দা হইলেও বাংলাদেশ জিততে পারে নাই, জিতছে আশলে ইনডিয়া! শেই ইনডিয়ারে হারাইতে ৫৩ বছর লাগলো আমাদের, এবং আমরা শেইটা পারলাম এই ২৪ শালে।

এই পুরা ব্যাপারটা বুঝতে জিন্নায় জাইতে হবে আপনের এবং জিন্নারে জদি ইতিহাশের একজন নায়ক ভাবতে না পারেন, বিটিশ ইনডিয়ার আখেরি জামানায় শবচে এলেমদার লোকদের একজন হিশাবে জদি জিন্নারে দেখতে না পান, তাইলে আপনে ইনডিয়া-পাকিস্তান-বাংলাদেশ-৪৭-৭১-২৪ কোনটাই ঠিকঠাক পড়তে পারবেন না খুব শম্ভব।

২৭ মার্চ, ২০২৫

Series Navigation<< বাংলাদেশের কপাল
The following two tabs change content below.
Avatar photo

রক মনু

কবি। লেখক। চিন্তক। সমালোচক। নিউ মিডিয়া এক্সপ্লোরার। নৃবিজ্ঞানী। ওয়েব ডেভলপার। ছেলে।
Avatar photo

Latest posts by রক মনু (see all)

এডিটর, বাছবিচার।
View Posts →
কবি, গল্প-লেখক, ক্রিটিক এবং অনুবাদক। জন্ম, ঊনিশো পচাত্তরে। থাকেন ঢাকায়, বাংলাদেশে।
View Posts →
কবি। লেখক। চিন্তক। সমালোচক। নিউ মিডিয়া এক্সপ্লোরার। নৃবিজ্ঞানী। ওয়েব ডেভলপার। ছেলে।
View Posts →
মাহীন হক: কলেজপড়ুয়া, মিরপুরনিবাসী, অনুবাদক, লেখক। ভালোলাগে: মিউজিক, হিউমর, আর অক্ষর।
View Posts →
গল্পকার। অনুবাদক।আপাতত অর্থনীতির ছাত্র। ঢাবিতে। টিউশনি কইরা খাই।
View Posts →
দর্শন নিয়ে প্রাতিষ্ঠানিক পড়াশোনা, চাকরি সংবাদপত্রের ডেস্কে। প্রকাশিত বই ‘উকিল মুন্সীর চিহ্ন ধরে’ ও ‘এই সব গল্প থাকবে না’। বাংলাদেশি সিনেমার তথ্যভাণ্ডার ‘বাংলা মুভি ডেটাবেজ- বিএমডিবি’র সহপ্রতিষ্ঠাতা ও সমন্বয়ক। ভালো লাগে ভ্রমণ, বই, সিনেমা ও চুপচাপ থাকতে। ব্যক্তিগত ব্লগ ‘ইচ্ছেশূন্য মানুষ’। https://wahedsujan.com/
View Posts →
কবি। লেখক। কম্পিউটার সায়েন্সের স্টুডেন্ট। রাজনীতি এবং বিবিধ বিষয়ে আগ্রহী।
View Posts →
জন্ম ১০ নভেম্বর, ১৯৯৮। চট্টগ্রামে বেড়ে ওঠা, সেখানেই পড়াশোনা। বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগে অধ্যয়নরত। লেখালেখি করেন বিভিন্ন মাধ্যমে। ফিলোসফি, পলিটিক্স, পপ-কালচারেই সাধারণত মনোযোগ দেখা যায়।
View Posts →
জন্ম ২০ ডিসেম্বরে, শীতকালে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অপরাধবিজ্ঞান বিভাগে পড়তেছেন। রোমান্টিক ও হরর জনরার ইপাব পড়তে এবং মিম বানাইতে পছন্দ করেন। বড় মিনি, পাপোশ মিনি, ব্লুজ— এই তিন বিড়ালের মা।
View Posts →
পড়ালেখাঃ রাজনীতি বিজ্ঞানে অনার্স, মাস্টার্স। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়। বর্তমানে সংসার সামলাই।
View Posts →
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগে শিক্ষকতা করেন। সংঘাত-সহিংসতা-অসাম্যময় জনসমাজে মিডিয়া, ধর্ম, আধুনিকতা ও রাষ্ট্রের বহুমুখি সক্রিয়তার মানে বুঝতে কাজ করেন। বহুমত ও বিশ্বাসের প্রতি সহনশীল গণতান্ত্রিক সমাজ নির্মাণের বাসনা থেকে বিশেষত লেখেন ও অনুবাদ করেন। বর্তমানে সেন্টার ফর স্টাডিজ ইন সোস্যাল সায়েন্সেস, ক্যালকাটায় (সিএসএসসি) পিএইচডি গবেষণা করছেন। যোগাযোগ নামের একটি পত্রিকা যৌথভাবে সম্পাদনা করেন ফাহমিদুল হকের সাথে। অনূদিত গ্রন্থ: মানবপ্রকৃতি: ন্যায়নিষ্ঠা বনাম ক্ষমতা (২০০৬), নোম চমস্কি ও এডওয়ার্ড এস হারম্যানের সম্মতি উৎপাদন: গণমাধম্যের রাজনৈতিক অর্থনীতি (২০০৮)। ফাহমিদুল হকের সাথে যৌথসম্পাদনায় প্রকাশ করেছেন মিডিয়া সমাজ সংস্কৃতি (২০১৩) গ্রন্থটি।
View Posts →
তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞানের ছাত্র, তবে কোন বিষয়েই অরুচি নাই।
View Posts →
মাইক্রোবায়োলজিস্ট; জন্ম ১৯৮৯ সালে, চট্টগ্রামের সীতাকুন্ডে। লেখেন কবিতা ও গল্প। থাকছেন চট্টগ্রামে।
View Posts →
জন্ম: টাঙ্গাইল, পড়াশোনা করেন, টিউশনি করেন, থাকেন চিটাগাংয়ে।
View Posts →
বিনোদিনী দাসী (১৮৬২/৩ - ১৯৪১): থিয়েটার অভিনেত্রী, রাইটার। ১৮৭৪ থেকে ১৮৮৬ এই ১২ বছর তিনি কলকাতার বিভিন্ন থিয়েটারে অভিনয় করেন। কবিতার বই – বাসনা এবং কনক ও নলিনী। আত্মজীবনী - ‘আমার কথা’ (১৯২০)।
View Posts →