Main menu

বেহুদা দস্তখতের বুরোক্রেছি Featured

This entry is part 15 of 15 in the series রকম শাহ'র বয়ান

নয়া ভ্যাটের জুক্তি হিশাবে শরকার কইতেছে, হাসিনা লুটপাট কইরা গেছে, তাই রাশ্টের খরচ মেটাবার পয়শা নাই শরকারের হাতে, দরকারি শেই পয়শা পাবলিকের পকেট থিকা নেবে শরকার।

মজার ব্যাপার হইলো, রাশ্টের খরচের ব্যাপারে শরকার তো চুপ বটেই, পাবলিক ফোরামেও তেমন কোন আলাপ উঠতেছে না দেখি!

রাশ্টের খরচের ব্যাপারে শুরুতেই আমাদের বোঝা দরকার জে, এইটা টাকার খরচের মামলা, ডলার/ফরেক্সের মামলা না; মানে বিদেশের লগে লেনদেনের বেলায় রাশ্টের হাতে টাকা থাকলে চলবে না, তাই ভ্যাটের এই বাড়তি টাকা দিয়া বিদেশি লোনের কিস্তি টানা জাবে না। এই টাকাটা দরকার দেশের ভিতর, টাকায় জেই পেমেন্ট দেয় রাশ্টো, শেইখানে। তবে এই টাকার একটা ভাগ বিদেশের লগে লেনদেনেও খরচ হবে, কেননা, ডলার তো টাকা দিয়াই কিনবে রাশ্টো।

দেশের ভিতর রাশ্টের খরচগুলা বা টাকার খরচ কেমন দেশে? শবচে বড়ো খরচটা মনে হয় পাবলিক ছেভিংসের ইন্টারেস্ট, তারপর রাশ্টের/পাবলিক খাদেমদের বেতন। এই দুইটা বান্ধা খরচ, ডেভলাপমেন্ট চাইলে মুলতবি রাখা জায়, কিন্তু এই দুইটা খরচ করতেই হবে। এই খরচ দুইটা দুইভাবে মিটানো জাইতে পারে–আরো বেশি পাবলিক লোন অথবা ভ্যাট-খাজনা বাড়ানো।

২০২৪-২৫ ফিছকেল ইয়ারে দেখলাম রাশ্টের/পাবলিকের চাকরদের, মানে পাবলিক ছার্ভেন্টদের বেতনভাতা দিতে খরচ হবে ৮০ হাজার কোটি টাকা। ম্যাক্রো-ইকোনমির এই ডিটেইলে আমার ততো এখতিয়ার নাই, দেখি জিয়া হাসানের লগে একটা পডকাস্ট করতে পারি কিনা…!

এনিওয়ে, হাসিনার বাকশালে এই ঘটনাটা ঘটছে জে, মালিকের চাইতে চাকরের বেতন বেশি। দেশে একটা টাইম আছিলো জখন, পাবলিকের চাকর/খাদেম বা রাশ্টের চাকর হওয়াটা ততো লোভের ব্যাপার আছিলো না, পেনশনের ব্যাপার বাদে পেরাইভেট ছেক্টরের ছার্ভিছে গড়পরতা বেশি বেতন আছিলো, তারা মৌজ-মাস্তি করতো, পাবলিকের চাকরেরা চাইয়া চাইয়া দেখতো আর ঘুশ খাইতো। পরে ঘুশ কমাবার কথা কইয়া রাশ্টের চাকরদের বেতনভাতা দেদার বাড়ানো হইলো এবং তাতে দেখা গেলো ঘুশের রেটও তার চাইতে বেশি রেটে বাড়তে থাকলো; আগে ঘুশের পয়শায় ঢাকায় বাড়ি করতো, হাসিনার বাকশালে কানাডায় বাড়ি কিনতে শুরু করলো তারা।

তলে তলে ঘটনা আশলে আরেকটা; হাসিনার বাকশাল জেহেতু পাবলিকের শরকার আছিলো না, পাবলিকের দুশমন আছিলো, হাসিনার হাতে পাবলিক আছিলো বন্দি, দেশটা আছিলো আওমি লিগের তালুকদারি, এইটা তাইলে টিকাইতে পাইক-প্যাদা লাগবে, রাশ্টের চাকররা তাই হাসিনার বাকশালের পাইক-প্যাদা হইয়া উঠছিলো; বিদেশে-ইউএনে একটা ইলেকশন দেখানো দরকার বইলা ইলেকশনও করতে হইতো, হাসিনার পাইক-প্যাদা-গান হিশাবে রাশ্টের চাকরেরা ইলেকশন কইরা দিতো আর পাবলিকরে ডান্ডার উপর রাখতো। রাশ্টের/পাবলিকের ছার্ভিছের বদলে হাসিনার ছার্ভিছ করার বদলেই এই চাকরদের রাশ্টের তহবিল থিকা পয়শা দিতো হাসিনা।

তাইলে হাসিনারে খেদাবার পরে কি হবার কথা আছিলো?

হজরত ইউনুসের শরকার রাশ্টের চাকরদের বেতনভাতা আরো বাড়াইতে জাইতেছে, শেই পয়শা উঠাইতেই এখনকার এই ভ্যাট। আমলারা নাকি কাম করতেছে না, এখন তাগো আরো পয়শা দিয়া হজরত ইউনুস দেখাইবেন জে, উনি আমলাদের জন্ন হাসিনার চাইতেও বড়ো রহমত!

হাসিনা পালাবার পরে হজরত ইউনুস শরকারের উচিত আছিলো, রাশ্টের চাকরদের বেতন কমাইয়া দেওয়া। হাসিনার বাকশালে জতো পয়শা মারছে, শেইটা ফেরত চাওয়া, আমলাদের আমলনামা দেইখা দেইখা ঢুকতে দেওয়া। পুরা দৌড়ের উপর থাকার কথা আমলাদের (পুলিশ বা রাশ্টের শকল চাকরেরই), উল্টা আমলারা হজরত ইউনুস শরকারকে বেলাকমেইল করতেছে!

কেন, কিভাবে এই বেলাকমেইল করতে পারতেছে? শবচে বড়ো কারন আর্মি। আর্মির মেজর-টেজর আর এছপি-ডিছি-আমলা আর জজেরা একে অপরের বোনাই বা বেয়াই বা ভাবি বা বউ বা দুলাভাই বা শালা বা শালি বা তাওউ বা শাশুড়ি; এই আর্মি তো তাদের কুটুমদের বাচাবেই, ছ্যাডলি, বাচাইছেও! তাইলে আদৌ কতোটা করতে পারতো হজরত ইউনুসেরা!?

এইখানেই আশতেছে রাশ্টের কাজকামের ব্যাপারে হাসিনার ভিশনটা (কন্টিনুশন অব কলোনিয়াল গভর্নেন্স) বোঝা এবং শেইখান থিকা বাইর হওয়া। এইটা করা শম্ভব আছিলো আরামেই!

কলোনিয়াল বুরোক্রেছি এবং হাসিনার গভর্নেন্সের মেইন ভিশন আছিলো এমন: পাবলিকরে জতো বেশি শম্ভব দপ্তরে/টেবিলে ঘুরানো; জতো টেবিলে ঘুরবে ফাইল, ততো ঘাটে পয়শা; নতুন নতুন আইন কইরা আরো আরো টেবিল/ঘাট বশানো, নতুন একটা আইন মানে ঘুশের একটা নতুন দফা। নয়া নয়া আইন নয়া নয়া মওকা বানায়, বুরোক্রেছি আরো বড়ো হইতে পারে, নিজেদের লোক/পাইক-প্যাদা বাড়াবার মওকা পাওয়া জাইতেছে।

একটা ছিম্পল জিনিশ দিয়া বুঝাই ব্যাপারটা। ধরেন আপনে পাছপোর্ট নিতে গেলেন। আপনের ভেরিফিকেশন করবে পুলিশ, ছেন্টারের পুলিশ আপনের থানায় পাঠাবে ফাইল, থানা থিকা চেয়ারম্যান/মেয়র, শেইখান থিকা কমিশনার, চৌকিদার। আপনের পাছপোর্ট জতো তাড়াতাড়ি দরকার, এই চেইনে ততো বেশি পয়শা ঢালতে হবে; কোন পয়শা না দিলে আপনে রোহিংগা হইয়া জাইতে পারেন।

এখন ভাবেন, এই ভেরিফিকেশন জদি দরকারি, তাইলে আপনের বার্থ ছার্টিফিকেট আর নেশনাল আইডির কাম কি? এইটা ছেরেফ বার্থ ছার্টিফিকেটের পুচকে মামলা; একটা ছেন্ট্রাল ডাটাবেইজে আপনের বার্থ রেজিস্টেশন আছে, তারপরে আপনের নেশনাল আইডি বা পাছপোর্ট হবে ১০০% অটোমেটিক, ছেরেফ পিরিন্টের মামলা, আর কিছু না।

কিন্তু অবিকল এই পোছেছটাই রাশ্টের শকল দপ্তরে চলতেছে, জেইখানে দরকার একটা টেবিল, একটা একছেছিবল ডাটাবেইজে শকল দরকারি ইনফো, তারপর একটা ছিল-ছাপ্পড়, শেইখানে ১০টা টেবিলে পাবলিকরে ঘুরায় বুরোক্রছি।

আমার মতে এখনো টাইম আছে; ৯০% আইন বাতিল কইরা দেন। ১০টা টেবিলে ঘুরানো থামান, পিরিরিকুইজিট আর ডিপেন্ডেন্সিরে অনলাইন কইরা ফেলেন। জেই আমলারা জেই ফাইলটা ছাড়তেছে বইলা মনে হইতেছে জে, আমলারা কাম করতেছে না, ফলে শেই আমলাদের তোয়াজ করতেছেন, শেই ফাইলটা শেই আমলার টেবিলে জাবার দরকারটাই নাই! আমলাদের ৯০% দস্তখত বেহুদা, তুইলা দেন জাস্ট। এইখানে আর্মি খুব আটকাবে বইলা আন্দাজ করি আমি। আর শরকারি ইনফো/ডাটাবেইজের ৯০% পাবলিক কইরা দেন–কোন গুদামে কতো চাউল আছে, শেইটাও দেখতে দেন জনতারে, শকল দপ্তরে ছবি/অডিও/ভিডিও করতে দেন জনতারে, আপনাদের কাম শোজা হইয়া জাবে, আমলারাও।

//১৬জানুয়ারি২০২৫

Series Navigation<< ডাকনামের পলিটিক্স
The following two tabs change content below.
Avatar photo

রক মনু

কবি। লেখক। চিন্তক। সমালোচক। নিউ মিডিয়া এক্সপ্লোরার। নৃবিজ্ঞানী। ওয়েব ডেভলপার। ছেলে।

এডিটর, বাছবিচার।
View Posts →
কবি, গল্প-লেখক, ক্রিটিক এবং অনুবাদক। জন্ম, ঊনিশো পচাত্তরে। থাকেন ঢাকায়, বাংলাদেশে।
View Posts →
কবি। লেখক। চিন্তক। সমালোচক। নিউ মিডিয়া এক্সপ্লোরার। নৃবিজ্ঞানী। ওয়েব ডেভলপার। ছেলে।
View Posts →
মাহীন হক: কলেজপড়ুয়া, মিরপুরনিবাসী, অনুবাদক, লেখক। ভালোলাগে: মিউজিক, হিউমর, আর অক্ষর।
View Posts →
গল্পকার। অনুবাদক।আপাতত অর্থনীতির ছাত্র। ঢাবিতে। টিউশনি কইরা খাই।
View Posts →
দর্শন নিয়ে প্রাতিষ্ঠানিক পড়াশোনা, চাকরি সংবাদপত্রের ডেস্কে। প্রকাশিত বই ‘উকিল মুন্সীর চিহ্ন ধরে’ ও ‘এই সব গল্প থাকবে না’। বাংলাদেশি সিনেমার তথ্যভাণ্ডার ‘বাংলা মুভি ডেটাবেজ- বিএমডিবি’র সহপ্রতিষ্ঠাতা ও সমন্বয়ক। ভালো লাগে ভ্রমণ, বই, সিনেমা ও চুপচাপ থাকতে। ব্যক্তিগত ব্লগ ‘ইচ্ছেশূন্য মানুষ’। https://wahedsujan.com/
View Posts →
কবি। লেখক। কম্পিউটার সায়েন্সের স্টুডেন্ট। রাজনীতি এবং বিবিধ বিষয়ে আগ্রহী।
View Posts →
জন্ম ১০ নভেম্বর, ১৯৯৮। চট্টগ্রামে বেড়ে ওঠা, সেখানেই পড়াশোনা। বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগে অধ্যয়নরত। লেখালেখি করেন বিভিন্ন মাধ্যমে। ফিলোসফি, পলিটিক্স, পপ-কালচারেই সাধারণত মনোযোগ দেখা যায়।
View Posts →
জন্ম ২০ ডিসেম্বরে, শীতকালে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অপরাধবিজ্ঞান বিভাগে পড়তেছেন। রোমান্টিক ও হরর জনরার ইপাব পড়তে এবং মিম বানাইতে পছন্দ করেন। বড় মিনি, পাপোশ মিনি, ব্লুজ— এই তিন বিড়ালের মা।
View Posts →
পড়ালেখাঃ রাজনীতি বিজ্ঞানে অনার্স, মাস্টার্স। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়। বর্তমানে সংসার সামলাই।
View Posts →
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগে শিক্ষকতা করেন। সংঘাত-সহিংসতা-অসাম্যময় জনসমাজে মিডিয়া, ধর্ম, আধুনিকতা ও রাষ্ট্রের বহুমুখি সক্রিয়তার মানে বুঝতে কাজ করেন। বহুমত ও বিশ্বাসের প্রতি সহনশীল গণতান্ত্রিক সমাজ নির্মাণের বাসনা থেকে বিশেষত লেখেন ও অনুবাদ করেন। বর্তমানে সেন্টার ফর স্টাডিজ ইন সোস্যাল সায়েন্সেস, ক্যালকাটায় (সিএসএসসি) পিএইচডি গবেষণা করছেন। যোগাযোগ নামের একটি পত্রিকা যৌথভাবে সম্পাদনা করেন ফাহমিদুল হকের সাথে। অনূদিত গ্রন্থ: মানবপ্রকৃতি: ন্যায়নিষ্ঠা বনাম ক্ষমতা (২০০৬), নোম চমস্কি ও এডওয়ার্ড এস হারম্যানের সম্মতি উৎপাদন: গণমাধম্যের রাজনৈতিক অর্থনীতি (২০০৮)। ফাহমিদুল হকের সাথে যৌথসম্পাদনায় প্রকাশ করেছেন মিডিয়া সমাজ সংস্কৃতি (২০১৩) গ্রন্থটি।
View Posts →
তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞানের ছাত্র, তবে কোন বিষয়েই অরুচি নাই।
View Posts →
মাইক্রোবায়োলজিস্ট; জন্ম ১৯৮৯ সালে, চট্টগ্রামের সীতাকুন্ডে। লেখেন কবিতা ও গল্প। থাকছেন চট্টগ্রামে।
View Posts →
জন্ম: টাঙ্গাইল, পড়াশোনা করেন, টিউশনি করেন, থাকেন চিটাগাংয়ে।
View Posts →
বিনোদিনী দাসী (১৮৬২/৩ - ১৯৪১): থিয়েটার অভিনেত্রী, রাইটার। ১৮৭৪ থেকে ১৮৮৬ এই ১২ বছর তিনি কলকাতার বিভিন্ন থিয়েটারে অভিনয় করেন। কবিতার বই – বাসনা এবং কনক ও নলিনী। আত্মজীবনী - ‘আমার কথা’ (১৯২০)।
View Posts →