বিলি কলিন্সের কবিতা

[ বিলি কলিন্স সম্ভবত সম-সাময়িক আমেরিকার সবচেয়ে জনপ্রিয় কবি। ওনার কবিতার দুইটা মূল ফিচার হইতেছে উইট এবং হিউমার। প্রায় সময় ওনার কবিতা টার্ন নেয় পিকিউলিয়ার এবং অ-প্রত্যাশিত কোনো দিশায়। এছাড়াও ওনার কবিতা রিডার’কে একটা মোলায়েম ভাইব দেয়।
বিলি কলিন্সের জন্ম ১৯৪১ এ, নিউ ইয়র্ক সিটিতে। বর্তমানে বয়স ৮২। ইউনিভার্সিটির প্রফেসর ছিলেন। দুইবার আমেরিকার পোয়েট লরিয়েট হইছিলেন।
কলিন্স নিজেকে “রিডার-কনশাস” কবি বলেন, যিনি কবিতা লেখার সময় একজন রিডার’কে পাশে কল্পনা করেন, লেখার সময় রিডারের প্রতি সেন্সিটিভিটি বহন করেন। এছাড়াও কলিন্স এক জায়গায় বলছেন, “আমরা সারাক্ষন চেষ্টা করতেছি একটা দিনের ভিতর দিয়ে একটা লজিকাল, রেশনাল রাস্তা করে আগাইতে। সেটা করতে গিয়ে, দুইপাশে দারুন কিছু ডিস্ট্র্যাকশন আসে, যাদেরকে ফলো করাটা আমরা এফর্ড করতে পারি না। কিন্তু কবি চায় এরকম যেকোনো জায়গায় দাঁড়ায়া পড়তে।” ]
…
একটা কুকুর, তার মনিবের ব্যাপারে
আমাকে অনেক ইয়াং দেখায়
কিন্তু আমার বয়স বাড়তেছে ওর চেয়ে দ্রুত,
তারা বলে এই রেশিওটা সাত অনুপাত এক
সংখ্যার হিশাব যাই হোক
আমি একদিন ওরে পার কইরা যাবো
আর সামনে লিড নিবো
যেমনটা আমি করি
একসাথে বাগানে হাঁটার সময়
আর যদি এই কথাগুলা
কখনো ওর মনে আসে,
যেকোনো বরফ কিংবা ঘাসের ওপর
আমার ছায়া পড়ার চেয়ে
আরো বেশি সুইট একটা ছায়া
তখন নেমে আসবে ওর মুখের ওপর
উদ্দেশ্যহীন পিরিত
আজকে সকালে আমি যখন লেকের পাড়ে হাঁটতেছিলাম,
আমি একটা ছোট্ট রেন পাখির প্রেমে পড়সিলাম,
আর দিনের অন্য সময়ে প্রেমে পড়সিলাম একটা ইঁদুরের,
যাকে বিড়ালটা ফেলে দিয়ে গেছিলো ডাইনিং টেবিলের নিচে।
শরতের সন্ধার ছায়ার ভিতর
দর্জির জানালায় দেখা সেই মেয়ের প্রেমে পড়সিলাম
যে তখনও কাজ করে যাইতেছে তার সেলাই মেশিনে,
আর তারপর এক বাটি স্যুপের প্রেমে পড়সিলাম
যেখান থেকে ধোয়া উঠতেছে নেভাল যুদ্ধের মতো।
এটাই সবচেয়ে ভালো পিরিতি, আমি ভাবলাম,
যেখানে কোনো হিশাব কিতাবের দরকার পড়ে না,
কোনো গিফট, অথবা নিষ্ঠুর কথাবাত্রা,
সন্দেহের বাতিক, অথবা টেলিফোনে নীরবতার
দরকার পড়ে না।
যেমন, চেস্টনাটের প্রতি পিরিতি,
কিংবা একটা জ্যাজ কাপ, আর স্টিয়ারিংয়ে আমার একটা হাত।
কোনো যৌন বাসনা নাই, ধরাম করে দরজা বন্ধ করা নাই –
যেমন একটা বনসাই করা কমলার গাছের জন্য পিরিতি,
কিংবা পরিষ্কার শাদা শার্ট, সন্ধার সময় গরম পানিতে গোসল,
আর ওই হাইওয়ে’টা যেটা ফ্লোরিডার মাঝখান দিয়ে বইয়া যায়।
এই পিরিতে দরকার নাই কোনো অপেক্ষার,
কোনো রাগ কিংবা হিংশার –
শুধু একটা ছোট চিনচিনে ব্যথা কখনো কখনো –
ওই রেন পাখিটার জন্য, যে বাসা বানাইছে
সাগরের উপর একটা নিচু ডালে, আর
ওই মরা ইঁদুরটার জন্য,
যে এখনো তার হালকা বাদামী জামা’টা পরে আছে।
কিন্তু আমার হৃদয় সবসময় মঞ্চে দাঁড়ায়া থাকে,
পরবর্তী তীর’টা নেয়ার জন্য সদা প্রস্তুত।
ইঁদুরটাকে লেজ ধরে বাগিচায় নিয়ে
পাতা’দের গাদার উপর তাকে রেখে আসার পর
আমি নিজেকে পাই বাথরুমের সিংকের সামনে
সাবান’টার দিকে মমতা নিয়ে তাকায়ে থাকা অবস্থায়,
সে এত ধৈর্যশীল, আর এত সুন্দরভাবে গলে যায়,
আর এই ফ্যাকাশে সবুজ সাবান-দানির মধ্যে
এত সুন্দর ভাবে সে থাকে,
আমি বুঝতে পারি আমি আবার প্রেমে পড়তেসি,
যখন আমার ভেজা হাতের মধ্যে সে তার দিক বদলায়,
আর আমি পাই ল্যাভেন্ডার ও পাথরের সুবাস।