Main menu

প্লে-লিস্ট: আজম খান

বাংলাদেশের সিনেমা তো দেখি নাই আমি খুব একটা – এইটা যেমন খালি না-দেখা না, বরং একটা এসথেটিকাল পজিশন যে আমার দেখাদেখির জায়গাগুলা এতো লো না! এইরকম ভাবে, আজম খানের গান না শুইনা মহীনের ঘোড়াগুলি (একটা নাম হিসাবেই বললাম, কম্পিটিশন লাগায়া দিয়েন না আবার) শোনাটা একটা ‘রুচি-সম্মত’ ঘটনা তো! এইটা রিকগনাইজ করতে রাজি হওয়াটা ভালো।

মানে, আজম খানের গানগুলা ভালো বা খারাপ – এইরকম এসথেটিকাল জায়গা থিকা দেখার বাইরেও যে কিছু ঘটনা আছে, সেইটার কথা বলতে চাইতেছি আমি; আমরা কিশোর বয়সে (তখনো টিএনএইজ শব্দটা বাংলা হইতে পারে নাই) গোয়ার্তুমির কারনেই অনেকে শুনতে শুরু করছি, কোন এসথেটিকসের কারনে না… বরং আমরা যে বাপ-মা’দের হেমন্ত-মান্নাদে সলিল চৌধুরী ভূপেন হাজারিকা আশা ভোঁসলে লতা মুঙ্কেশকদের ‘আধুনিক গান’ শুইনা আসছি, অইগুলার চাইতে ডিফরেন্ট

কিনতু এই গানগুলা তো আবার চাষা-ভুষাদের মাজার-মজমার মতো অনেকটা! যার ফলে নাক সিঁটকানো ছিল কিছুটা, কারন ‘ফোক সং’য়ের গলার মালা বা কানের দুল আমরা আবিষ্কার করতে পারি নাই, যেইটা পরে হইছে যে, এইগুলা ‘মেইন স্ট্রিম’ 🙂 না, কিনতু এদেরকে তো আমাদেরই (মিডল-ক্লাসদেরই) ‘রক্ষা’ করতে হবে! 😁

আমি বলতে চাইতেছি, আজম খানের গান শুনতেছি – এইটা এখন অবশ্যই কোন রুচি-সম্মত কালচারাল পজিশন না বাংলাদেশে, বরং নাইনটিসের একটা নস্টালজিয়াই অনেকটা; আপনি খুব বেশি ইসমার্ট লোকজনের নোটিশে আসতে পারবেন না এইসব কইরা, কিনতু আমি দাবি করতে চাই যে, যদি (নট বাঙালি, বরং) বাংলাদেশের কালচার বইলা যদি একটা কিছুরে লোকেট করতে চান আপনি সেইখানে আজম খান’রে নোটিশ না কইরা পারবেন না! Continue reading

নতুন দলের প্রতি নসিহতনামা: এথিকস ও মেটাফিজিক্স নিয়া কয়েক ছত্র

যারা রাজনীতি করেন বা করবেন তাদেরকে বন্ধুর সংখ্যা বাড়াতে হয়। ইসলামের এথিকাল প্যারাডাইমে কতগুলো দারুণ নীতি আছে, যেগুলো একই সাথে ধর্মাচার ও প্রবলভাবে রাজনৈতিকও। যেমন, নিজেদের মানুষদের প্রতি রহমদিল হওয়া : রু্‌হামাও বাইনাহুম। আক্রমনোদ্যত শত্রুর প্রতি কঠোরতা প্রদর্শনও রাজনৈতিকতার জন্যে জরুরি (এই ক্ষেত্রে কোমলতা ও ক্ষমার প্রসঙ্গ আলোচনা করছি না, আপাতত)। নিজেদের মানুষদের সাথে নীতিপ্রণোদিত আসাবিয়া ব্যতিরেকে উন্নত শির নিয়ে কোন কমিউনিটি, পার্টি চলতে পারে না। তবে, এই “নিজ” ও “আপন” এর পরিমণ্ডলও বাড়াতে হয়।

অনেক ব্যাপারেই “নিজের চেয়ে অপরকে অগ্রাধিকার দেওয়া” আরেকটা গুরুত্বপূর্ণ নীতি । পারিভাষিকভাবে, এটাকে “ইসার” বলা হয়। সুরা হাশরে, আনসারদেরকে প্রশংসা করা হয়েছে এই বলে যে, তাঁরা নিজেদের অভাব সত্ত্বেও অগ্রাধিকার দিত মুহাজিরগণকে। অনেক সময় নিজের প্রয়োজন ছেড়ে দিয়ে হলেও অপরের প্রয়োজন মেটাতে হবে ৷ এই কাজ বেশ কষ্টের, তাই এই কাজ খোদার কাছে পছন্দনীয়ও বেশি, অর্থাৎ সোয়াব বেশি। আবার, একই সাথে উপকৃত ব্যক্তির সাথে, যিনি শুধু ব্যক্তি নন, কেননা তারও পরিবার ও বন্ধুবান্ধবও আছে, কার্যকর একটা সম্পর্কও তৈরি হলো। জগতপরিমন্ডলে উপকৃত মানুষটিও উপকারকারীর কাজে লাগার সম্ভাবনাই বেশি। ইসলামে care of the self যেমন গুরুত্বপূর্ণ, care of the worldও সমভাবে গুরুত্বপূর্ণ। এইভাবে সম্পর্কের নেটওয়ার্কও তৈরি হয়, যা একই সাথে আদর্শ ও মানবিক কনটিনজেন্সির দ্বারা রঞ্জিত। একটা হাদিসের মূলভাব এমন , যে তার ভাইয়ের কোনো প্রয়োজন মেটানোর জন্যে তাঁর সাথে হেঁটে গেল, তা নফল ইবাদতের চেয়েও উত্তম। আরেক জায়গায় সম্ভবত, মসজিদে এতেকাফে থাকার চেয়েও উত্তম বলা হয়েছে। বলা হয়েছে, যে তার ভাইয়ের কোন দুর্ভোগ বা মুসিবত দূর করলো, কেয়ামতের দিন আল্লাহ তাঁর দুর্ভোগ দূর করবেন। একজন আরেকজনকে সাহায্যরত থাকলে আল্লাহও তাঁকে সাহায্য করতে থাকেন। কমিউনিটির অপর ভাইয়ের সাথে হাসিমুখে কথা বলাকেও সাদাকা বলা হয়েছে। অভুক্তকে খাদ্য দান, চাকুরীহীনকে চাকুরী প্রদান, ঋণগ্রস্থ মানুষের ঋণ পরিশোধে সহায়তা করা, অধিকারহীন ও বঞ্চিতকে তার অধিকার ফিরিয়ে দেওয়া এই কাজগুলো মুসলিম কমিউনিটিসমূহের এথিকাল ফ্যাব্রিক। তাদের সাব্জেক্টিভিটি বা কর্তাসত্তার পরিগঠন ও তাগলিব (বিজয়) এইভাবেই ঘটেছিল, এই ভ্যালুসগুলোর ইন্টার্নালাইজেশনের মধ্য দিয়ে।

Continue reading

সৈয়দ আলী আহসান: আমার সাক্ষ্য – “আরবী হরফে বাংলা লিখবার প্রস্তাব” নিয়া

১৯৯৪ সালে সৈয়দ আলী আহসান (১৯২২ – ২০০২) “আমার সাক্ষ্য” নামে একটা বই লেখেন, উনার নামে চালু থাকা নানান ক্রিটিক ও অভিযোগের জায়গায় নিজের পারসপেক্টিভ তুইলা ধরেন

তো, অবভিয়াসলি এইগুলা কোন ভেরিফাইড হিস্ট্রিকাল ট্রুথ না, কিনতু একইসাথে হিস্ট্রিকাল ইভেন্টগুলাতে এনগেইজ থাকা একজন মানুশের বয়ান, যেইটা হিস্ট্রিকাল রেফারেন্স হিসাবে ফুল-প্রুফ ঘটনা না হইলেও একটা রেফারেন্সিয়াল পয়েন্ট, যেই কারনে উনার কথাগুলা সারফেইস লেভেলে থাকা, যাচাই কইরা দেখাটা হিস্ট্রির একটা কাজ

আরেকটা ঘটনা হইতেছে, পাকিস্তান আমলের বেশিরভাগ ঘটনাই আমাদের আলাপে এখনো ট্যাবু হয়া আছে যেন এইগুলা নিয়া কথা বলা যাবে না! কিনতু বাংলাদেশের হিস্ট্রি জানতে ও বুঝতে হইলে তো ইমিডিয়েট পাস্টের দিকেই তো আমাদেরকে তাকাইতে হবে সবচে আগে…

তোো এই জিনিসটা আমরা অনেকেই জানি যে, বাংলা হরফ চেইঞ্জ করার একটা কথা পাকিস্তান আমলে সরকারি-জায়গা থিকা উঠছিল, তো ঘটনাটা কি রকম ছিল – তার একটা ব্যাখ্যা রাখছেন সৈয়দ আলী আহসান, উনার বই থিকা সেই অংশটা ছাপাইতেছি আমরা এইখানে

লিপি বিপর্যয়ের বিরুদ্ধে

…এখন আমরা হরফ পরিবর্তনের কথা বলি না। ভাষা পরিবর্তনের প্রশ্নই ওঠে না। তবু পাকিস্তানে এই পরিবর্তনের প্রশ্ন উঠেছিল, কিন্তু তা কখনই কোন আন্দোলনে রূপ নেয়নি। যাঁরা পরিবর্তনের কথা বলেছিলেন, তাঁরা ছিলেন সরকারী কর্মকর্তা এবং সেক্ষেত্রে সরকার পক্ষের সকলেই যে পরিবর্তনের কথা বলছিলেন তা-ও নয়। আমি এখানে ভাষার কথাটা বলব না। লিপি সংক্রান্ত উদ্ভট প্রস্তাবনার কথাই তুলব।

তৎকালীন পাকিস্তানের পশ্চিম অংশ অর্থাৎ পশ্চিম পাকিস্তানে আরবী লিপি প্রচলিত ছিল। সিন্ধী এবং উর্দু দুই-ই লিখিত হত আরবী বা ফারসী হরফে। পশতুও লিখিত হত আরবী হরফে। লোকভাষা হিসেবে পাঞ্জাবে কোন নির্দিষ্ট লিপি ছিল না। শিখরা গুরুমুখী হরফে পাঞ্জাবী লিখতেন এবং মুসলমান ফারসী হরফে। এক কথায়, পশ্চিম পাকিস্তানের সব ক’টি ভাষার জন্য একটি মাত্র বর্ণমালা ছিল এবং তা ছিল আরবী। সমগ্র পাকিস্তানের জন্য তখন ছিল-বাংলা ভাষার জন্য বাংলা হরফ এবং পশ্চিম পাকিস্তানের ভাষার জন্য আরবী হরফ। এই হরফের পরিবর্তনের কথা সরকারীভাবে কখনও নির্দেশিত হয়নি। এ নিয়ে শুধু সরকারীভাবে আলোচনার সূত্রপাত করা হয়েছিল।

এই আলোচনাটির সূত্রপাত করেছিলেন মরহুম ফজলুর রহমান। তিনি ঢাকার অধিবাসী ছিলেন, কোন ভাষায় তাঁর ভাল দখল ছিল না। এহেন ব্যক্তি আরবী হরফে বাংলা লিখবার একটি প্রস্তাব করেন। ফজলুর রহমান তখন পাকিস্তানের শিক্ষামন্ত্রী ছিলেন। ১৯৪৮ সালের জুন কি জুলাই মাসে তিনি ঢাকায় আসেন এবং ঢাকায় তাঁর বন্ধু মওলা মিয়ার বাসায় অবস্থান করেন। সেখানে একদিন তিনি আলোচনা বৈঠকের আয়োজন করেন। আলোচনায় যাঁরা উপস্থিত ছিলেন তাঁরা হর্তেন: ফজলে আহমদ করিম ফজলী-তিনি ছিলেন পূর্ব পাকিস্তানের শিক্ষা সচিব, ওসমান গণী-তিনি ছিলেন ঢাকা টিচার্স ট্রেনিং কলেজের অধ্যক্ষ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আবদুর রাজ্জাক, সৈয়দ সাজ্জাদ হোসাইন, কবি জসীমউদ্‌দীন এবং আমি। সভায় পাকিস্তানের তথ্য দফতরের একজন কর্মকর্তা মোহাম্মদ হোসেন উপস্থিত ছিলেন। চট্টগ্রামের হুরুফুল কোরআন সমিতির প্রতিষ্ঠাতা এক বৃদ্ধ মৌলভী সাহেবও সেখানে উপস্থিত ছিলেন। আমরা জানতাম না, কেন আমাদের ডাকা হয়েছে। আলোচনার সূত্রপাতে ফজলুর রহমান সাহেব সভা আহবানের কারণ ব্যাখ্যা করলেন। তিনি বললেন, ‘প্রচুর রক্তপাতের বিনিময়ে আমরা পাকিস্তান পেয়েছি, এই পাকিস্তানকে বাঁচিয়ে রাখা এবং বিপদ থেকে মুক্ত রাখা আমাদের কর্তব্য। যেহেতু ভারতবর্ষ থেকে আমরা বেরিয়ে এসেছি, সুতরাং ভারতের কাজ পাকিস্তানকে গ্রাস করা। পশ্চিম পাকিস্তান যেহেতু একটি বিরাট অঞ্চল তাই সেদিকে তাদের দৃষ্টি পড়বে না, তাদের দৃষ্টি পড়বে পূর্ব পাকিস্তানের উপর। তারা যে সৈন্য নিয়ে পূর্ব পাকিস্তান দখল করবে তা নয়, তারা নিজেদের সংস্কৃতি, শিক্ষা এবং সমাজের প্রভাব বলয়ের মধ্যে পূর্ব পাকিস্তানকে আনবার চেষ্টা করবে। এক্ষেত্রে বাংলাভাষা তাদেরকে বিরাট সাহায্য করবে। পশ্চিমবঙ্গের ভাষা বাংলা, আমাদের ভাষাও বাংলা। এই বাংলা ভাষার মাধ্যমে সাংস্কৃতিক অনুপ্রবেশ যত সহজে সম্ভবপর, অন্য কিছুতে তা সম্ভব নয়। আমাদের ভিন্ন ভাষা হলে অন্য কথা ছিল। কিন্তু ভাষা যেহেতু অভিন্ন, সুতরাং ভাষার প্রকৃতি যদি আমরা পরিবর্তন করতে পারি, তাহলে অতি সহজে পূর্ব পাকিস্তানকে পশ্চিমবঙ্গের কবল থেকে রক্ষা করতে পারব। সেই জন্য আমার প্রস্তাব হচ্ছে, আমাদের বাংলা ভাষার লিখন পদ্ধতির আমরা পরিবর্তন ঘটাব। এই পরিবর্তন ঠিক মত করতে পারলে আমাদের সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের সাংস্কৃতিক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যাবে। আমি সেজন্য বাংলা ভাষার জন্য আরবী বর্ণমালার প্রবর্তন করতে চাই।’

আমরা ফজলুর রহমানের এই বক্তৃতার জন্য প্রস্তুত ছিলাম না। প্রস্তারের অসারতা এবং অবাস্তবতা এত প্রকট ছিল যে, আমরা সকলেই কিছুক্ষণ পর্যন্ত হতভম্ব হয়ে বসেছিলাম। আমাদের চুপ করে থাকতে দেখে ফজলুর রহমান সাহেব চট্টগ্রামের হুরুফুল কোরআন সমিতির মৌলভী সাহেবকে আমাদের সামনে উপস্থিত করলেন। মৌলভী সাহেব আরবী হরফে ছাপা একটি বাংলা পাক্ষিক পত্রিকা আমাদের সামনে পেশ করলেন। তিনি বললেন যে, তিনি দীর্ঘদিন ধরে এই পত্রিকাটিকে চালিয়ে আসছেন। বিভিন্ন মাদ্রাসায় এই পত্রিকার অনেক পাঠক আছে। মৌলভী সাহেবের পর ফজলুর রহমান সাহেব একটি তথ্য পেশ করলেন যে, এক সময় নাকি আরবী হরফে বাংলা লিখিত হত। কিছু পুরনো বাংলা পুঁথি পাওয়া গেছে যেগুলো আরবী হরফে লিখিত হয়েছে। Continue reading

রেড মওলানার(?) হুদাই হুশিয়ারি

“শুনো, ধর্ম আর দেশ মিলাইতে যায়ো না। পরে ফুলের নাম কী দিবা, ফাতেমা-চূড়া?”

৫ আগস্টের কিছু পরে ঢাকার দেয়ালে দেয়ালে এই উক্তিটা লেখা হয় মওলানা ভাসানীর বরাতে। সেদিন ধানমন্ডি থেকে এলিফেন্ট রোডের দিকে যাইতেও এই কথাটা নজরে পড়ল। কিন্তু এইবার আর বাক‍্যটাকে অতটা পলিটিক‍্যালি কারেক্ট বইলা মনে হইলো না। কেমন যেন পোয়েটিক নিরীহতার আড়ালে একটা উদ্দেশ্যমূলক প্রোপাগান্ডা মনে হইলো কথাটা।

আমি যতটুকু বুঝি তা হইলো এই কথাটার বেইজ লাইন হইলো ধর্ম আর দেশ (রাষ্ট্র?) এক রাখা যাবে না। নাইলে ভজঘট লাইগা যাবে। মানে ওয়েস্ট যেইটারে সেকুলারিজম বলে সেইটা আর কি! তো, খুবই মহৎ উদ্দেশ্য। এক জনের ধর্ম আরেক জনের উপরে চাপানোটা তো জুলুম। কিন্তু আমি খেয়াল করলাম ঐ বাক‍্যটার বেইজ লাইন যে ধর্মকে আলাদা কইরা দেখা, যার কারণে কৃষ্ণচূড়া যেন ফাতেমাচূড়া না হয়। তাতে করে সবকিছুরে ধর্ম দিয়া বিচার করাও হইলো না আবার পোয়েটিক বিউটিও ঠিক থাকল। কিন্তু ভজঘট এই খানেই। ফুলটার নামই রাখা হইছে সনাতন ধর্মের একজন প্রভাবশালী দেবতার নামে। অর্থাৎ ফুলটায় অলরেডি ধর্ম নিজেই বিরাট ক্ষমতা নিয়া হাজির অথচ তাতেও ধর্মের হাজিরা দেখা হইতেছে না কিন্তু যখনই ফাতেমাচূড়া নামে কেউ ডাকবেন তখন সেখানে ইসলাম হাজির হইতেছে, সেকুলার ধারণা নষ্ট হইতেছে সম্ভবত এস্থেটিকসও নাই হয়ে যাইতেছে। কী আতাজ্জব ব‍্যাপার! অথচ ফুলটারে মুসলমানরা জীবনেও ফাতেমাচূড়া বইলা ডাকার খায়েশ করে নি। Continue reading

মানুষের গন্তব্য

হাইস্কুলে ওঠার পর সায়েন্স ফিকশনে খুব আগ্রহ হইছিল। প্রচুর পড়ছি। আজিমভ থেকে জুলভার্ন বা রাশিয়ান ক্লাসিক-কিছুই বাদ দেই নাই। ওই সময়ের একটা গল্প পড়া ছিল। লেখক টেখক আর মনে নাই। গল্পটা এমন যে, একজন ভবিষ্যতের সায়েন্টিস্ট জানতে চায় যে, প্রথম কোন মানুষ আগুন জ্বালাইতে শিখছিলো। এইজন্য সে টাইম মেশিনে করে অতীতে যায়। গিয়ে সেইখানে সে আটকা পড়ে এবং সেই আসলে প্রথম মানুষকে আগুন জ্বালাইতে শিখাইছিলো।

অথবা ইদিপাসের কথা মনে করেন। সে ভবিষ্যতবাণী অনুযায়ী, তার বাপরে মারতে চায় নাই এবং মা’রে বিয়ে করতে চায় নাই। এইটা এভয়েড করতে সে যা করে, তাই-ই বরং তারে একই গন্তব্যে নিয়ে যায়।

এগুলা মূলত ফ্রি উইল সংক্রান্ত সমস্যা। কোয়ান্টাম ফিজিক্স আসার পরও এই ক্লাসিক সমস্যাগুলাই রয়ে গেছে।

পার্টিকালের ডুয়েল বিহেভেরিয়ার এবং অবজার্ভার ইফেক্টের (সুপারপজিশন) অনেকগুলা পসিবল ইন্টারপ্রিটেশন আছে। জগত অনেকগুলা অথবা একই জগত প্রত্যেক চয়েসে নতুন জগত তৈরি করতেছে কিংবা ফিজিকাল রিয়েলিটিই সিমুলেশন বা অবজেক্ট বলতে যা বুঝি, তার কনশাসনেস আছে। এইরকম।

টেড চিয়াঙের একটা গল্প পড়ছি কিছুদিন আগে। নাম-এংজাইটি ইজ দা ডিজিনেস অফ ফ্রিডম/এক্সেলেশন। নামটা কান্টের একটা কোটেশন । যেইখানে, কোয়ান্টাম কম্পিউটারের মাধ্যমে আপনি আপনার অন্য রিয়েলিটির ভেরিয়েন্টের সাথে চ্যাট করতে পারেন। মনে করেন, আপনার কানাডা মাইগ্রেট করার কথা। আপনি করেন নাই। কিন্তু ভিন্ন কোন এক রিয়েলিটির ‘আপনি’ কানাডা মাইগ্রেট করছেন। তার সাথে আপনি যোগাযোগ করতে পারবেন। তার এই চয়েসের কারণে আপনার লাইফ এবং তার লাইফে আকাশ পাতাল চেঞ্জ হইতে পারে। বাটারফ্লাই ইফেক্ট।

তো, আমরা তো ভাবি যে, এইটা না করলে, আরেকটা করলেই ভাল হইতো। কিন্তু রিয়েলি সেইটা কনফ্রন্ট করা আরো কঠিন। স্পেশালি যদি দেখেন, যা করেন নাই, তাতেই ভাল হইতো।

ম্যাট্রিক্সে দুইটা রিয়েলিটি আছে। একটা সিমুলেশন, আরেকটা অথেনটিক রিয়েলিটি। সিমুলেশনের জগত এমনিতে সুন্দর। তাইলে কিয়ানু রিভস কিংবা মর্ফিয়ুস কেন সেইখানে থাকতে চায় না? কারণ, ফ্রি উইল নাই। আপনার সব এক্ট হিসাব করা। প্রিডিটারমাইন্ড। একজন ভিলেন কিন্তু সিমুলেশনে থাকারই ডিসিশান নিয়ে বিট্রে করে। সমস্যা হইতেছে, কিয়ানু রিভসদের অথেনটিক রিয়েলিটির গ্যারান্টি কি? Continue reading

এডিটর, বাছবিচার।
View Posts →
কবি, গল্প-লেখক, ক্রিটিক এবং অনুবাদক। জন্ম, ঊনিশো পচাত্তরে। থাকেন ঢাকায়, বাংলাদেশে।
View Posts →
কবি। লেখক। চিন্তক। সমালোচক। নিউ মিডিয়া এক্সপ্লোরার। নৃবিজ্ঞানী। ওয়েব ডেভলপার। ছেলে।
View Posts →
মাহীন হক: কলেজপড়ুয়া, মিরপুরনিবাসী, অনুবাদক, লেখক। ভালোলাগে: মিউজিক, হিউমর, আর অক্ষর।
View Posts →
গল্পকার। অনুবাদক।আপাতত অর্থনীতির ছাত্র। ঢাবিতে। টিউশনি কইরা খাই।
View Posts →
দর্শন নিয়ে প্রাতিষ্ঠানিক পড়াশোনা, চাকরি সংবাদপত্রের ডেস্কে। প্রকাশিত বই ‘উকিল মুন্সীর চিহ্ন ধরে’ ও ‘এই সব গল্প থাকবে না’। বাংলাদেশি সিনেমার তথ্যভাণ্ডার ‘বাংলা মুভি ডেটাবেজ- বিএমডিবি’র সহপ্রতিষ্ঠাতা ও সমন্বয়ক। ভালো লাগে ভ্রমণ, বই, সিনেমা ও চুপচাপ থাকতে। ব্যক্তিগত ব্লগ ‘ইচ্ছেশূন্য মানুষ’। https://wahedsujan.com/
View Posts →
কবি। লেখক। কম্পিউটার সায়েন্সের স্টুডেন্ট। রাজনীতি এবং বিবিধ বিষয়ে আগ্রহী।
View Posts →
জন্ম ১০ নভেম্বর, ১৯৯৮। চট্টগ্রামে বেড়ে ওঠা, সেখানেই পড়াশোনা। বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগে অধ্যয়নরত। লেখালেখি করেন বিভিন্ন মাধ্যমে। ফিলোসফি, পলিটিক্স, পপ-কালচারেই সাধারণত মনোযোগ দেখা যায়।
View Posts →
জন্ম ২০ ডিসেম্বরে, শীতকালে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অপরাধবিজ্ঞান বিভাগে পড়তেছেন। রোমান্টিক ও হরর জনরার ইপাব পড়তে এবং মিম বানাইতে পছন্দ করেন। বড় মিনি, পাপোশ মিনি, ব্লুজ— এই তিন বিড়ালের মা।
View Posts →
পড়ালেখাঃ রাজনীতি বিজ্ঞানে অনার্স, মাস্টার্স। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়। বর্তমানে সংসার সামলাই।
View Posts →
জীবিকার জন্য একটা চাকরি করি। তবে পড়তে ও লেখতে ভালবাসি। স্পেশালি পাঠক আমি। যা লেখার ফেসবুকেই লেখি। গদ্যই প্রিয়। কিন্তু কোন এক ফাঁকে গত বছর একটা কবিতার বই বের হইছে।
View Posts →
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগে শিক্ষকতা করেন। সংঘাত-সহিংসতা-অসাম্যময় জনসমাজে মিডিয়া, ধর্ম, আধুনিকতা ও রাষ্ট্রের বহুমুখি সক্রিয়তার মানে বুঝতে কাজ করেন। বহুমত ও বিশ্বাসের প্রতি সহনশীল গণতান্ত্রিক সমাজ নির্মাণের বাসনা থেকে বিশেষত লেখেন ও অনুবাদ করেন। বর্তমানে সেন্টার ফর স্টাডিজ ইন সোস্যাল সায়েন্সেস, ক্যালকাটায় (সিএসএসসি) পিএইচডি গবেষণা করছেন। যোগাযোগ নামের একটি পত্রিকা যৌথভাবে সম্পাদনা করেন ফাহমিদুল হকের সাথে। অনূদিত গ্রন্থ: মানবপ্রকৃতি: ন্যায়নিষ্ঠা বনাম ক্ষমতা (২০০৬), নোম চমস্কি ও এডওয়ার্ড এস হারম্যানের সম্মতি উৎপাদন: গণমাধম্যের রাজনৈতিক অর্থনীতি (২০০৮)। ফাহমিদুল হকের সাথে যৌথসম্পাদনায় প্রকাশ করেছেন মিডিয়া সমাজ সংস্কৃতি (২০১৩) গ্রন্থটি।
View Posts →
তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞানের ছাত্র, তবে কোন বিষয়েই অরুচি নাই।
View Posts →
মাইক্রোবায়োলজিস্ট; জন্ম ১৯৮৯ সালে, চট্টগ্রামের সীতাকুন্ডে। লেখেন কবিতা ও গল্প। থাকছেন চট্টগ্রামে।
View Posts →
জন্ম: টাঙ্গাইল, পড়াশোনা করেন, টিউশনি করেন, থাকেন চিটাগাংয়ে।
View Posts →