Main menu

পূর্ব পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা ।। সৈয়দ মুজতবা আলী।। কিস্তি ১ ।।

This entry is part 11 of 22 in the series লেখার ভাষা

১৯৪৭ সালের ৩০ শে নভেম্বর সিলেট কেন্দ্রীয় মুসলিম সাহিত্য সংসদে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা নিয়া আলাপ হয়, সৈয়দ মুজতবা আলী সেইখানে বাংলা ভাষার পক্ষে একটা লেকচার দেন। উনার এই লেকচার নিয়া অনেক তর্ক বিতর্ক হয়। সৈয়দ মুজতবা আলী তখন বগুড়ার আজিজুল হক কলেজের প্রিন্সিপাল ছিলেন। বলা হয়, এই ঘটনার পরে উনার বিরোধীপক্ষ গর্ভমেন্টের কাছে বিচার দেন আর এডুকেশন মিনিস্ট্রি থিকা উনারে শোকজ করা হয়। উনার বড় ভাই সৈয়দ মুতর্জা আলী, যিনি এইটা নিয়া কথা কইতে গেছিলেন, তারেও তার পজিশন থিকা ডিমোশন দিয়া ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট বানায়া চিটাগাংয়ে ট্রান্সফার কইরা দেয়। সৈয়দ মুজতবা আলী এইসব দেইখা ইন্ডিয়াতে চইলা যান।

পরে ১৯৫৬ সালে আল ইহসান পত্রিকায় উনার এই ভাষণ প্রবন্ধ হিসাবে ছাপা হয়। অই বছরই বই হিসাবেও ছাপা হয়, আলাদা কইরা।[pullquote][AWD_comments][/pullquote]

মজার ব্যাপার হইলো, কলকাতার মিত্র অ্যান্ড ঘোষ পাবলিকেশন কোম্পানি থিকা ১১ খন্ডে সৈয়দ মুজতবা আলীর রচনাসমগ্র ছাপানো হইছে, উনার পাবলিশড, আনপাবলিশড অনেক লেখা সেইখানে আছে, কিন্তু এই বইটা নাই। 🙂  মানে, রচনাসমগ্র দেইখা আপনার মনে হবে, সবকিছুই আছে এইখানে, কিন্তু সবকিছুর ভিতরে অল্প কিছু জিনিসরে যে গোপন করা হয়, সেইটা চাতুরির ঘটনা না খালি সাবভারসিভ একটা জিনিসও।

তো, পরে ২০০২ সালে ঢাকার একুশে পাবলিকেশন্স এই বইটা আবার রিপ্রিন্ট করে। মুশকিল হইলো, বইটাতে খালি লেখাটাই আছে, এর কনটেক্সট নিয়া তেমন কোন আলাপ নাই। যে কোন পুরান টেক্সট নতুন কইরা ছাপাইলে দুয়েকটা কথা বইলা নেয়া বেটার, কারণ যেই সিচুয়েশনে সৈয়দ মুজতবা আলী এই কথাগুলা বা আর্গুমেন্টগুলা দিছিলেন, এখনকার সিচুয়েশন একইরকম না। ১৯৪৭ সালের যেই কথা বা তর্ক, ১৯৫৬ সালে বই হিসাবে ছাপানোর সময়ও অনেক এডিট করছিলেন, একদম ফার্স্ট লাইনটা দেখলেই টের পাওয়া যায়। 

২.
সৈয়দ মুজতবা আলী যখন এই আর্গুমেন্টগুলা হাজির করতেছেন, তখন পাকিস্তান রাষ্ট্র যে বানানো হইছে, সেইটার ৬ মাসও হয় নাই। রাষ্ট্র নিয়া অবশ্যই অনেক এক্সপেক্টশন থাকতেছে তখন, নানান আলাপ চলতেছে নানান জায়গায়।

ব্রিটিশ আমলে ইন্ডিয়ার রাষ্ট্রভাষা ছিল ইংলিশ, হিন্দি আর উর্দু। ১৯৪৭ সালে ইন্ডিয়া আর পাকিস্তান দুইটা রাষ্ট্র হওয়ার পরে, হিন্দিরে ইন্ডিয়ার রাষ্ট্রভাষা ঘোষণা করা হইছিল, কিন্তু যেহেতু ইন্ডিয়ার সব জায়গায় হিন্দি চালু নাই, বলা হইছিল হিন্দির পাশাপাশি ইংলিশও থাকবো। তো, ইন্ডিয়াতে যেহেতু ইংলিশ বাদ দিয়া হিন্দি চইলা আসছে, পলিটিশিয়ানদের ধারণা ছিল, পাকিস্তানেও তো উর্দুই হওয়ার কথা!  

সৈয়দ মুজতবা আলী এইসব কথা বলার আগে, ১৯৪৭ সালের ১৫ই সেপ্টেম্বর তমুদ্দীন মজলিসের  পাকিস্তানের রাষ্ট্র ভাষা বাংলা না উর্দু?  পাবলিকেশনে কাজী মোতাহার হোসেন, আবুল মনসুর আহমেদ ও প্রিন্সিপাল আবুল কাশেমও পূর্ব পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা হিসাবে বাংলা করার পক্ষে লেখেন। এরপরে ডিসেম্বর মাসের ৮ তারিখে জিন্নাহ ঢাকা ইউনির্ভাসিটিতে আইসা উর্দুরে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা বইলা ঘোষণা দেন, এক স্টুডেন্ট নো বলেন। আন্দোলন, মুভমেন্টের পরে ১৯৫৬ সালে উর্দুর লগে বাংলারেও পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা হিসাবে রাষ্ট্রীয়ভাবে ঘোষণা করা হয়। এইগুলা নিয়া কমবেশি আলাপ তো চালু আছেই।

৩.
পুরা লেখাটা ৪/৫টা কিস্তিতে আপলোড করার ইচ্ছা আছে আমাদের।

ই.হা.
…………………………………………………………………..

পূর্ব পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা যে শেষ পর্যন্ত বাংলা ভাষাই হবে সে সম্বন্ধে আমাদের মনে কখনাে কোনাে সন্দেহ ছিল না এবং একথাও নিঃসন্দেহে জানি যে যদিও এখনকার মত বাংলার দাবী মেনে নেওয়া হয়েছে তবু উর্দুওয়ালারা আবার সুযােগ পেলেই মাথা খাড়া করে উঠতে পারেন। আমরা যে এতদিন এ সম্বন্ধে বিস্তৃত আলােচনা করি নি তার প্রধান কারণ বাংলা-উর্দু-দ্বন্দু রাজনৈতিক রঙ ধরে নিয়ে। দলাদলির কারণ হয়ে দাড়িয়েছিল; সে অবস্থায় সুস্থ মনে, শান্ত-চিত্তে বিচার করার প্রবৃত্তি কোনাে পক্ষেরই ছিল না। আবহাওয়া এখন ফের অনেকটা শান্ত হয়ে এসেছে; এইবেলা উভয় পক্ষের যুক্তিগুলাে ভালাে করে তলিয়ে দেখে নিলে ভবিষ্যতের অনেক তিক্ততা এবং অর্থহীন দ্বন্দ্ব থেকে নিষ্কৃতি পাওয়া যাবে। উর্দুওয়ালাদের প্রথম ও প্রধান যুক্তি এই : পূর্ব পাকিস্তান ও পশ্চিম পাকিস্তান অভিন্ন রাষ্ট্র। সেই রাষ্ট্রের কেন্দ্রে যে-ভাষা প্রচলিত পূর্ব পাকিস্তানে যদি সে ভাষা প্রচলিত না থাকে তবে রাজনৈতিক ও কৃষ্টিগত সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে। উত্তরে আমরা বলি, পূর্ব পাকিস্তানের আপামর জনসাধারণকে বাংলা ভুলিয়ে উর্দু শিখিয়ে যদি কেন্দ্রের সঙ্গে এক করে দেওয়া সম্ভবপর হত তা হলে যে এ বন্দোবস্ত উত্তম হত তাতে কোনাে সন্দেহ নেই। কিন্তু প্রশ্ন, এ কাজ কি সােজা ? উত্তরে আমরা বলি একাজ অসম্ভব।

কেন অসম্ভব এ প্রশ্ন যদি শােধান তবে তার উত্তর দু’রকমের হতে পারে। প্রথম রকমের উত্তর দেওয়া যায় ঐতিহাসিক দৃষ্টান্ত দিয়ে। আমরা যদি একথা সপ্রমাণ করতে পারি যে পৃথিবীর ইতিহাসে কস্মিনকালেও এহেন কাণ্ড ঘটে নি এবং যতবার চেষ্টা করা হয়েছে ততবারই সে চেষ্টা নিষ্ফল হয়েছে তবে হয়তাে অনেকেই স্বীকার করে নেবেন যে, অসম্ভব কর্ম সমাধান করার চেষ্টা করে মূর্খ, বলদকে দোয়াবার চেষ্টা সেই করে যার বুদ্ধি বলদেরই ন্যায়।

ইয়ােরােপ আমেরিকা থেকে উদাহরণ দেব না। উর্দুওয়ালারা এসে উদাহরণ মেনে নিতে স্বভাবতই গড়িমসি করবেন। তাই উদাহরণ নেব এমন সব দেশকে সাধারণত ‘পাক’ অর্থাৎ পবিত্র’ অর্থাৎ ইসলামী বলে স্বীকার করে নেওয়া হয়। এসব দেশের ইতিহাস ও বর্তমান পরিসি উর্দুওয়ালাদের জানার কথা, না জানলে জানা উচিত।

আরব ও ইরানের (পারস্যের) মানচিত্রের দিকে তাকালেই দেখতে পাবেন এ দু’দেশের মাঝখানে কোনাে তৃতীয় দেশ নেই। অর্থাৎ আরবদেশের পূর্ব সীমান্তে যেখানে আরবী ভাষা এসে শেষ হয়েছে ঠিক সেখান থেকেই ফার্সী ভাষা হল হয়েছে। উত্তর পশ্চিম সীমান্তে ও যেখানে আরবী ভাষা শেষ হয়েছে সেখান থেকেই তুকী ভাষা আরম্ভ হয়েছে।

সকলেই জানেন খলিফা আবু বকরের আমলে মুসলিম আরবেরা অমুসলিম ইরান দখল করে। ফলে সমস্ত ইরানের লােক আগুন-পূজা ছেড়ে দিয়ে মুসলিম হয়। মুসলিম শিক্ষাদীক্ষা মুসলিম রাজনৈতিক অনুপ্রেরণার কেন্দ্রভূমি তখন মদীনা কেন্দ্রের ভাষা আরবী এবং যে ভাষাতে কুরান নাজিল অর্থাৎ অবতীর্ণ হয়েছেন, হজরতের বাণী হদীসরূপে সেই ভাষায়ই পরিস্ফুট হয়েছে। কাজেই আমরা অনায়াসে ধরে নিতে পারি যে কেন্দ্রের সঙ্গে যােগসূত্র দৃঢ় করার বাসনায় ইরানে আরবী ভাষা প্রবর্তিত করার ব্যাপক চেষ্টা করা হয়েছিল। আমরা জানি বহু ইরানবাসী ইসলাম গ্রহণ করে, আরবী শিখে, মুসলিম জগতে নাম রেখে গিয়েছেন। আরাে জানি পরবর্তী যুগে অর্থাৎ আব্বাসীদের আমালে আরবী রাষ্ট্রকে ইরানের আরো কাছে চলে এসেছিল। ইরাকের বাগদাদ ইরানের অত্যন্ত কাছে ও আব্বাসী যুগে বহু ইরানী বাগদাদে বসবাস করে উচ্চাঙ্গের আরবী শিখতে সমর্থ হয়েছিলেন। সমস্ত ইরানদেশে তখন আরব গবর্ণর, রাজকর্মচারী, ব্যবসাদার, পাইকবরকন্দাজে ভর্তি হয়ে গিয়েছিল। ইরানের সর্বত্র তখন আরবী মক্তব-মাদ্রাসার ছড়াছড়ি, আরবী-শিক্ষিত মৌলবী-মৌলানায় ইরান তখন গমগম করত।

তবে কেন তিনশত বৎসর যেতে না যেতে ফার্সীভাষা মাথা খাড়া করে উঠল ? দশম শতাব্দীর শেষভাগে দেখতে পাই, ফার্সীভাষার নগজাগরণের চাঞ্চল্য সমস্ত ইরানভূমিকে ক্ষুব্ধ করে তুলেছে। গল্প শুনি, ফিরদৌসীকে নাকি ফরমাইশ দেওয়া হয়েছিল ইরানের প্রাকমুসলিম সভ্যতার প্রশস্তি গেয়ে যেন কাব্য রচনা করা হয়, এবং ততােধিক গুরুত্বব্যঞ্জক (মুহিম্) ফরমাইশ, সে কাব্য যেন দেশজ ফার্সী কথায় রচিত হয়, তাতে যেন আরবী শব্দ বিলকুল ঢুকতে না পারে। গল্পটি কতদূর সত্য বলা কঠিন। কারণ ফিরদৌসীর মহাকাব্যে অনেক আরবী কথা আছে কিন্তু এ বিষয়ে কোনাে সন্দেহ নেই যে আরবী ভাষা যে-কোনো কারণেই হােক দেশের আপামর জনসাধারণকে তৃপ্ত করতে পারে নি বলেই ফার্সীর অভ্যুত্থান হল।

তারপর একদিন ফার্সী ইরানের রাষ্ট্রভাষা হয়ে গেল ।

উর্দওয়ালারা হয়তাে উত্তরে বলবেন যে ইরান শীয়া হয়ে গেল বলেই সুন্নী আরবের সঙ্গে কলহ করে ফার্সী চালাল। এ-উত্তরে আছে লােক ঠকানাের মতলব। কারণ ঐতিহাসিক মাত্রই জানেন ফিরদৌসীর পৃষ্ঠপােষক ছিলেন গজনীর সুলতান মাহমুদ এবং তিনি ছিলেন এতই কট্টর সুন্নী যে তিনি সিন্ধুদেশের হাজার হাজার করামিতাকে (ইসমাইলী শীয়া) কতল-ই-আমে অর্থাৎ পাইকারী হননেফীনারিজহানুম বা পরলােকে পাঠিয়েছিলেন। কাজেই বােঝা গেল যে এই আরবীবিরােধী ফার্সী আন্দোলনের পশ্চাতে শীয়া-সুন্নী দুই সম্প্রদায়ই ছিলেন।

হয় ইরান শীয়াই হয়ে গিয়েছিল কিন্তু তুর্কীর বেলা কি? তুর্কীর আপামর জনসাধারণ সুন্নী এবং শুধু যে সুন্নী তাই নয় হানিফী সুন্নীও বটে। ইরানেরই মত একদিন তুর্কীতেও আরবী চালাবার চেষ্টা করা হয়েছিল কিন্তু শেষ পর্যন্ত সে-চেষ্টা সফল হয় নি। শেষ পর্যন্ত তুর্কী-ভাষাই তুর্কের রাষ্ট্রভাষা হল। উর্দুওয়ালাদের স্মরণ থাকতে পারে যে কয়েক বৎসর পূর্বে তুর্কী ও ইরান উভয় দেশে জোর জাতীয়তাবাদের ফলে চেষ্টা হয় তুর্কী ও ফার্সী থেকে বেবাক আরবী শব্দ তাড়িয়ে দেওয়ার। আমরা এ ধরনের উগ্রচণ্ডা জাতীয়তাবাদ ও ভাষা ‘বিশুদ্ধিকরণ’ বাইয়ের পক্ষপাতী নই; তবুও যে ঘটনাটির কথা উর্দুওয়ালাদের স্মরণ করিয়ে দিলুম তার একমাত্র কারণ, কেন্দ্রের সঙ্গে যােগসূত্র যতই মূল্যবান হােক না কেন তার জন্য মানুষ সব সময় সব কিছু বিসর্জন দিতে রাজী হয় না। (এস্থলে ঈষৎ অবান্তর হলেও একটি কথা বলে রাখা ভালাে—–পাছে উর্দুওয়ালারা আমাদের নীতি ঠিক বুঝতে না পারেন—আমরা ভাষা ‘শুদ্ধিকরণে বিশ্বাস করি না বলেই বাংলা থেকে সংস্কৃত শব্দ তাড়াতে চাইনে। তা হলে সেই পাগলামীর পুনরাবৃত্তি করা হবে মাত্র; আজকের দিনে কে না বুঝতে পারে ফোর্ট উইলিয়ামি পণ্ডিতরা বাংলা থেকে আরবী ফাসী শব্দ বর্জন করে কি আহাম্মুখিই না করেছিলেন।)

উর্দুওয়ালারা হয়তাে প্রশ্ন শুধাবেন, তা হলে মিশরে আরবী চলল কি করে? মুসলমান বিজয়ের পূর্বে মিশরের ভাষা তাে আরবী ছিল না। তার উত্তর এই যে। মিশর জয়ের পর লক্ষ লক্ষ আরব মিশরে বসবাস আরম্ভ করে ও কালক্রমে দেশের আদিম অধিবাসী ও বিদেশীতে মিলে গিয়ে যে ভাষা গড়ে ওঠে তার নাম মিশরী আরবী। সংমিশ্রণ একটি কথা দিয়েই সপ্রমাণ করা যায়; যদিও আরবীতে ‘জিম’ হরফের উচ্চারণ বাংলার ‘৩’এর মত, তবু মিশরীরা উচ্চারণ করে ‘গ’য়ের মত।

তরলকে বলে ‘গবল’, ‘নজীব’কে বলে নগৰি’, অল্পশিক্ষিত লোক ইমো, নস’র উল্লা’ না বলে বলে ‘ইজাগা’—ইত্যাদি। অন্য দিক দিয়ে মিশরী ফল (চাষা) ও আরবী বেদুইনের মধ্যে দেহের গঠন, চামড়ার রঙ ইত্যাদিতে বিক্ষোভ কোনাে পার্থক্য নেই।

এতগুলাে উদাহরণ দেবার পরও যদি কেউ সন্তুষ্ট না হন তবে তার সামনে একটি ঘরােয়া উদাহরণ পেশ করি। পাঠান মােগল (এমনকি ইংরেজ রাজত্বের প্রথম দিকে) যুগে এদেশে শুধু কেন্দ্রে নয়, সবগুলােতে পর্যন্ত ফার্সী ছিল রাষ্ট্র ভাষা । তবু কেন সে ভাষা দেশজ হিন্দী বাংলা প্রভৃতি ভাষাকে মেরে ফেলে নিজে অজরামর হয়ে কায়েমি খুঁটি গাড়তে পারল না? উর্দুওয়ালারা হয়তাে বলবেন, ইংরেজ ফার্সী উচ্ছেদ করে দিল তাই।

কিন্তু সে উচ্ছেদের ব্যবস্থা তাে পাঠান-মােগলরাই করে গিয়েছিলেন। পাঠান আমলের বিখ্যাত কবি আমির খুসরৌ ফার্সীতে উচ্চাঙ্গের কাব্য রচনা করে গিয়েছিলেন অথচ দূরদৃষ্টি ছিল বলে তিনি বুঝতে পেরেছিলেন যে শেষ পর্যন্ত ফার্সী এদেশে চলবে না, দেশজ ভাষা পুনরায় আপন আসনে সুপ্রতিষ্ঠিত হবে। এ তত্ত্বটা ভালাে করে বুঝতে পেরেছিলেন বলেই তিনি ফার্সী ও তখনকার দেশজ ভাষা হিন্দী মিশিয়ে কবিতা রচনার এক্সপেরিমেন্ট করে গিয়েছিলেন। নিচের উদাহরণটি উর্দুওয়ালাদের জানবার কথা :

“হিন্দুবারাে ব নিগরু আজব হু ধরত হৈ।

দর ওয়কতে সুখন গুন্ মূহ ফুল ঝরত হৈা ।।

গুম বিয়া কে ব লবেতাে বােসে বাগীর।

গুফৎ আরে রাম ধরম নষ্ট করত হৈা” ।।

হিন্দু তরুণ কি অপূর্ব সৌন্দর্যই না ধারণ করে। যখন কথা বলে তখন মুখ হতে ফুল ঝরো বললুম, আয় তাের ঠোটে একটি চুমাে খাব—বললে, আরে রাম! ধর্ম নষ্ট করত হায় ॥

এই এক্সপেরিমেন্টের ফলেই দেখতে পাই শাহজাহানের আমলে উর্দু ভাষা সৃষ্টি হয়েছে ও অষ্টাদশ-উনবিংশ শতাব্দীতে দেখতে পাই ফার্সী আস্তে আস্তে হটে গিয়ে উর্দুর জন্য জায়গা করে দিচ্ছে। আজকের দিনে পরিস্থিতিটা কি? ফার্সীর লালাভূমি দিল্লী লক্ষ্মেীয়ে এখন সাহিত্য সৃষ্ট হয় উর্দু ভাষাতে ফার্সী সেখানে আরবী এবং সংস্কৃতের মত ‘মৃত ভাষা’ বা ‘ডেড ল্যান্গুইজ‘।

হয়তাে উর্দুওয়ালারা বলবেন, উর্দুতে প্রচুর আরবী, ফার্সী শব্দ থাকায় তিনি পদে উঠে গেছেন। এর উত্তরে বলি, ফার্সী যে রকম বিস্তর আরবী শব্দ গ্রহণ করেও ফার্সীই থেকে গিয়েছে উর্দুও সেই রকম বিস্তর আরবী ফার্সী শব্দ গ্রহণ করা সত্ত্বেও উর্দুই থেকে গিয়েছে, সে এই দেশের দেশজ ভাষা। বিদেশী শব্দের প্রাধান্য অপ্রাচুর্য নিয়ে ভাষার বর্ণ, গােত্রের বিচার হয় না। পূর্ববঙ্গের আলিম-ফাজিলগণ যখন অকাতরে আরবী ফার্সী শব্দ প্রয়ােগ করে বাংলায় ‘ওয়াজ’ বা ‘পাবলিক লেকচর’ দেন তখন সে ভাষা আরবী, ফার্সী বা উর্দু নামে পরিচিত হয় না, সে ভাষা বাংলাই থেকে যায়।

ঘােড়াটি আমার ভালােবাসিত গাে শুনিতে আমার গান

এখন হইতে সে ঘােড়াশালেতে বাঁধা রবে দিনমান।

জিনি তরঙ্গ সুন্দরী মাের তাতার বাসিনী সাকী

লীলাচঞ্চলা রঙ্গ নিপুণা শিবিরে এসেছি রাখি ।

ঘােড়ার আমার জুটিবে সােয়ার ইয়ার পাইবে সাকী

শুধু মা আমার এ বুড়া বয়সে কাঁদিয়া মুদিবে আঁখি।

—সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত

শব্দের প্রাচুর্য অপ্রাচুর্য ভেদে যদি ভাষার বংশ বিচার করতে হয় তা হলে বলতে হবে এই কবিতার চতুর্থ ছত্র সংস্কৃত, পঞ্চম ছত্র আরবী-ফার্সী ও গােটা কবিতাটা খােদায় মালুম কি। কিন্তু উপস্থিত এ আলােচনা মুলতুবি থাক-উর্দু কি হিসাবে ‘পাক’ ও বাংলা না-পাক’ সে আলােচনা পরে হবে।

এ প্রসঙ্গে উর্দুওয়ালাদের কাছে আমাদের শেষ প্রশ্ন; ত্রয়ােদশ শতকে মুসলমান কর্তৃক বঙ্গবিজয় থেকে আরম্ভ করে ঊনবিংশ শতকের প্রায় মধ্যভাগ পর্যন্ত ফাসী। উর্দু এদেশে চালু ছিল। শাহজাহানের আমল থেকে আজ পর্যন্ত বেশুমার মৌলবী-মৌলানা, আলিম-ফাজিল দেওবন্দ রামপুর থেকে উর্দু শিখে এসে এদেশে উর্দুতে ওয়াজ ঝেড়েছেন, উর্দুতে ‘গুফতগু’ করেছেন; মনে পড়েছে ছেলেবেলায় দেখেছি। উদ্ধত অর্বাচীন তরুণ যখনই তর্কে মােল্লাদের কাবু করেছে তখনই তারা হঠাৎ উর্দুতে কথা বলতে আরম্ভ করে (আজ জানি সে উর্দু কত নক্কারজনক ভুলে পরিপূর্ণ থাকত) আপন যুক্তির অভাব অথবা দুর্বলতা ঢাকবার চেষ্টা করেছেন এবং চাষাভুষার কাছে মুখ বাঁচিয়েছেন। সে কথা থাক, কারণ এমন মৌলবী-মৌলানার সংস্পর্শেও এসেছি যাঁদের সঙ্গে তর্কে হেরেও আনন্দ পেয়েছি, কিন্তু আসল প্রশ্ন এইসৰ আলিম-ফাজিলগণ বাংলাদেশের শিক্ষা ও কৃষ্টি নির্মাণের সম্পূর্ণ ভার হাতে পেয়েও শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে চেষ্টা করা সত্ত্বেও এদেশের আপামর জনসাধারণকে ’নাপাক’ বাংলা ভুলিয়ে ফাসী বা উর্দু চালাতে সক্ষম হলেন না কেন। ইংরেজী স্কুল তখন ছিল না, সংস্কৃত টোল তখন অনাদৃত, আরবী-ফার্সী-উর্দু শিখলে তখন উমদা উমদা নােকরি মিলত, বাদশাহ সুবাদারের মজলিসে শিরােপা মিলত মনসব মিলত আর আরবী ফাসীর জরিয়ায় বেহেস্তের দ্বার তাে খুলতই। ইহলোক পরলোক উভয় লােকের প্রলােভন সত্ত্বেও বাঙালী মুসলমান নাপাক বাংলায় কেন কথাবার্তা বলল, জারীমর্সিয়া রচনা করল, ভাটিয়ালি-পীরমুর্শিদী, আউল বাউল, সাইদরবেশী গান গাইল, কেচ্ছা-সাহিত্য তৈরী করল, রাধার চোখের পানি নিয়ে “বিদাত কবিতা লিখল? এবং একথাও তাে জানি যে মৌলবী-মৌলানারা এসব লােক-সাহিত্যের প্রতি উদাসীন ছিলেন না, তাঁরা বারবার ফতােয়া দিয়েছেন যে এসব সাহিত্য বিদাত’, নাজাইজ’, ‘কুফর’ ‘শির। তৎসত্ত্বেও এগুলাে এখনাে খেয়াঘাটে, বাথানে, চাষার বাড়ীতে পড়া হয়, এসব বই এখনাে ছাপা হয়, হাটবারে। বটতলায় বিক্রয় হয়।

শুধু তাই? পাঠান বাদশাহরা পয়সা খরচ করে ব্রাহ্মণ পণ্ডিতদের দিয়ে মহাভারত, রামায়ণ বাংলায় অনুবাদ করালেন। বাদশাহদের দরবারে বিস্তর আলিম-ফাজিল ছিলেন। তাঁরা তখন নিশ্চয়ই এই ’ফজুল’, ‘বিদাত’, ‘ওয়াহিয়াত, ইসরাফের বিরুদ্ধে তারস্বরে প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন কিন্তু শেষ পর্যন্ত তাে তত্ত্বকথা এই যে আজ পর্যন্ত এদেশে পরাগল খান, ছুটি খানের নাম রয়ে গিয়েছে। বাংলা ভাষার পৃষ্ঠপােষক হিসাবে।

কিন্তু আমাদের আসল প্রশ্নটা যেন ধামাচাপা পড়ে না যায়। উর্দুওয়ালাদের কাছে আমার সবিনয় প্রশ্ন : বাংলাদেশের কৃষ্টিজগতে প্রায় ছয় শত বৎসর একাধিপত্য করেও তারা যখন উর্দু চালাতে পারেন নি তখন বর্তমান যুগের নানা কষ্টিগত দ্বন্দ্ব বহু নিদারুণ দারিদ্র্য, ক্রমবর্ধমান বাংলাসাহিত্য ও ভাষার সঙ্গে বিজড়িত মুসলমান-হিন্দুকে তাদের মাতৃভাষা ভুলিয়ে উর্দু চালানাে কি সম্ভবপর?

আরব ইরান পাশাপাশি দেশ, এক দেশ থেকে আরেক দেশ গমনাগমনে কোনাে অসুবিধা ছিল না, উর্দুর তুলনায় আরবী বহু পূতপবিত্র ভাষা ও সে ভাষা ইসলামের তাবত দৌলত ধারণ করে; তৎসত্ত্বেও যখন ইরানে আরবী চলল না তখন যে পূর্ব পাকিস্তান থেকে পশ্চিম পাকিস্তান বহু শত ক্রোশ দূরে—মাঝখানে আবার এমন রাষ্ট্র যার সঙ্গে এখনাে পুরা সমঝাওতা হয় নি—যে পশ্চিম পাকিস্তানেও আবার পাচটি ভিন্ন ভিন্ন ভাষা প্রচলিত সেই পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তান একজোট হবেই বা কি করে আর একে অন্যকে উর্দু শিখাবেই বা কি প্রকারে? এ তাে দু’পাঁচজন মাস্টারের কথা নয়, আমাদের দরকার হবে হাজার হাজার লােকের। আর হাজার হাজার নবাগতকে পােষবার ক্ষমতা যদি পূর্ব পাকিস্তানের থাকতই তবে পূর্ব সব থেকে বিতাড়িত হতভাগ্য মুসলমানদের কি পূর্ব পাকিস্তান এতদিনে আমন্ত্রণ করে চোখের জল মুছিয়ে দিত না, মুখে অন্ন তুলে ধরত না ?

হয়তাে উর্দুওয়ালারা বলবেন যে, সমস্ত দেশকে উর্দু শেখানাে তাদের মতলব নয়, তাদের মতলব প্রাইমারী স্কুলে অর্থাৎ গ্রাম্য পাঠশালায় বাংলা শেখানাে এবং হাইস্কুল ও কলেজ-য়ুনিভার্সিটিতে উর্দু চালানাে।

তাই যদি হয় তবে ফল হবে এই যে হাইস্কুল-কলেজে উচ্চশিক্ষাপ্রাপ্ত গুণীনীবা কেতাব লিখবেন উর্দুতে। তাতে ইসলামের প্রাচীন ইতিহাস থাকবে, সে ঐহিত্যের সঙ্গে কাঁধ মিলিয়ে পাকিস্তানের নবীন রাষ্ট্র কি করে গড়ে তুলতে হবে তার কায়দাকানুনের বয়ান থাকবে, আল্লা রসুলের বাণী সেসব কেতাবে নূতন করে প্রচারিত হবে এবং এ-সব তাবত দৌলতের ভােগী হবেন উর্দু জাননেওয়ালারা । অথচ পূর্ব পাকিস্তানের শতকরা ৮০/৯০ জন চাষা-মজুর; তাদের শিক্ষা সমাপ্তি যে পাঠশালা পাশের সঙ্গে সঙ্গেই হয়ে যাবে সে কথাও নিশ্চয় জানি এবং তারা এ সব কেতাব পড়তে পারবে না। এই শতকরা আশিজনের উপর যে নবীন রাষ্ট্র নির্মিত। হবে তার আদর্শ নূতন, আকাক্ষা নূতন এবং সে আদর্শে পৌছানাের জন্য যেসব বয়ান উর্দুভাষাতে লেখা হবে তারা সেসব পড়তে সক্ষম হবে না। অর্থাৎ শতকরা আশিজন কোনাে কিছু না জেনেশুনে আদর্শ রাষ্ট্র গড়াতে উঠে পড়ে লেগে যাবে।

এ বড় মারাত্মক ব্যবস্থা, এ বড় অনৈসলামিক কুব্যবস্থা। প্রাচীন ঐতিহ্যপন্থী মৌলবী-মৌলানাকে যত দোষ দিতে চান দিন, কিন্তু এ-দোষ তাঁদের জানী দুশমনও দিতে পারবেন না যে তারা ধনী এবং গরীবের জন্য পৃথক পৃথক শিক্ষা ব্যবস্থা করেছিলেন। ধনীর ছেলেকে তারা যেমন আরবী-ফারসী-উর্দু শিখিয়েছিলেন, গরীবের ছেলেকেও ঠিক সেই কারিকুলামের ভেতর দিয়ে নিয়ে গিয়েছিলেন। যদি পাকচক্রে পূর্ব পাকিস্তানকে কোনাে দিন উর্দু গ্রহণ করতেই হয় এবং স্বীকার করে নিতেও হয় যে আমাদের সাহিত্য এবং অন্যান্য সৃষ্টি উর্দুতেই হবে, তবে তারা পাঠশালায়ও উর্দু চালাবেন। দেবভাষা ও গণভাষা বলে পৃথক পৃথক বস্তু স্বীকার করা ইসলাম ঐতিহ্য পরিপন্থী।

পাকিস্তান বড়লােকের জন্য নয়, গরীবের হক পাকিস্তানে বেশী।

Series Navigation<< বাংলাভাষা পরিচয় – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর [১৯৩৮]পূর্ব পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা ।। সৈয়দ মুজতবা আলী।। কিস্তি ২ ।। >>
The following two tabs change content below.

বাছবিচার

এডিটর, বাছবিচার।

এডিটর, বাছবিচার।
View Posts →
কবি, গল্প-লেখক, ক্রিটিক এবং অনুবাদক। জন্ম, ঊনিশো পচাত্তরে। থাকেন ঢাকায়, বাংলাদেশে।
View Posts →
কবি। লেখক। চিন্তক। সমালোচক। নিউ মিডিয়া এক্সপ্লোরার। নৃবিজ্ঞানী। ওয়েব ডেভলপার। ছেলে।
View Posts →
মাহীন হক: কলেজপড়ুয়া, মিরপুরনিবাসী, অনুবাদক, লেখক। ভালোলাগে: মিউজিক, হিউমর, আর অক্ষর।
View Posts →
গল্পকার। অনুবাদক।আপাতত অর্থনীতির ছাত্র। ঢাবিতে। টিউশনি কইরা খাই।
View Posts →
দর্শন নিয়ে প্রাতিষ্ঠানিক পড়াশোনা, চাকরি সংবাদপত্রের ডেস্কে। প্রকাশিত বই ‘উকিল মুন্সীর চিহ্ন ধরে’ ও ‘এই সব গল্প থাকবে না’। বাংলাদেশি সিনেমার তথ্যভাণ্ডার ‘বাংলা মুভি ডেটাবেজ- বিএমডিবি’র সহপ্রতিষ্ঠাতা ও সমন্বয়ক। ভালো লাগে ভ্রমণ, বই, সিনেমা ও চুপচাপ থাকতে। ব্যক্তিগত ব্লগ ‘ইচ্ছেশূন্য মানুষ’। https://wahedsujan.com/
View Posts →
কবি। লেখক। কম্পিউটার সায়েন্সের স্টুডেন্ট। রাজনীতি এবং বিবিধ বিষয়ে আগ্রহী।
View Posts →
জন্ম ১০ নভেম্বর, ১৯৯৮। চট্টগ্রামে বেড়ে ওঠা, সেখানেই পড়াশোনা। বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগে অধ্যয়নরত। লেখালেখি করেন বিভিন্ন মাধ্যমে। ফিলোসফি, পলিটিক্স, পপ-কালচারেই সাধারণত মনোযোগ দেখা যায়।
View Posts →
জন্ম ২০ ডিসেম্বরে, শীতকালে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অপরাধবিজ্ঞান বিভাগে পড়তেছেন। রোমান্টিক ও হরর জনরার ইপাব পড়তে এবং মিম বানাইতে পছন্দ করেন। বড় মিনি, পাপোশ মিনি, ব্লুজ— এই তিন বিড়ালের মা।
View Posts →
পড়ালেখাঃ রাজনীতি বিজ্ঞানে অনার্স, মাস্টার্স। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়। বর্তমানে সংসার সামলাই।
View Posts →
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগে শিক্ষকতা করেন। সংঘাত-সহিংসতা-অসাম্যময় জনসমাজে মিডিয়া, ধর্ম, আধুনিকতা ও রাষ্ট্রের বহুমুখি সক্রিয়তার মানে বুঝতে কাজ করেন। বহুমত ও বিশ্বাসের প্রতি সহনশীল গণতান্ত্রিক সমাজ নির্মাণের বাসনা থেকে বিশেষত লেখেন ও অনুবাদ করেন। বর্তমানে সেন্টার ফর স্টাডিজ ইন সোস্যাল সায়েন্সেস, ক্যালকাটায় (সিএসএসসি) পিএইচডি গবেষণা করছেন। যোগাযোগ নামের একটি পত্রিকা যৌথভাবে সম্পাদনা করেন ফাহমিদুল হকের সাথে। অনূদিত গ্রন্থ: মানবপ্রকৃতি: ন্যায়নিষ্ঠা বনাম ক্ষমতা (২০০৬), নোম চমস্কি ও এডওয়ার্ড এস হারম্যানের সম্মতি উৎপাদন: গণমাধম্যের রাজনৈতিক অর্থনীতি (২০০৮)। ফাহমিদুল হকের সাথে যৌথসম্পাদনায় প্রকাশ করেছেন মিডিয়া সমাজ সংস্কৃতি (২০১৩) গ্রন্থটি।
View Posts →
তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞানের ছাত্র, তবে কোন বিষয়েই অরুচি নাই।
View Posts →
মাইক্রোবায়োলজিস্ট; জন্ম ১৯৮৯ সালে, চট্টগ্রামের সীতাকুন্ডে। লেখেন কবিতা ও গল্প। থাকছেন চট্টগ্রামে।
View Posts →
জন্ম: টাঙ্গাইল, পড়াশোনা করেন, টিউশনি করেন, থাকেন চিটাগাংয়ে।
View Posts →
বিনোদিনী দাসী (১৮৬২/৩ - ১৯৪১): থিয়েটার অভিনেত্রী, রাইটার। ১৮৭৪ থেকে ১৮৮৬ এই ১২ বছর তিনি কলকাতার বিভিন্ন থিয়েটারে অভিনয় করেন। কবিতার বই – বাসনা এবং কনক ও নলিনী। আত্মজীবনী - ‘আমার কথা’ (১৯২০)।
View Posts →