Main menu

আমার পোশাক এবং আমি ।। সিমন দ্য বোভোয়া ।।

লেখাটা অবজার্ভার পত্রিকার আর্কাইভ থেকে ঘেঁটে বাইর করা হইছে। সিমন দ্য বোভোয়ার এই ইন্টারভিউ কাম আর্টিকেল ছাপা হইছিলো মার্চের ২০ তারিখ, ১৯৬০ সালে। সেই সময়কার অবজার্ভারের সাংবাদিক সিন্থিয়া জুডাহ এই ফ্রেঞ্চ ফিলোসফারের সাথে আলাপ করছিলেন তার ফ্যাশন নিয়ে, ফ্যাশন সংক্রান্ত চিন্তাভাবনা নিয়ে। [pullquote][AWD_comments][/pullquote]

ফ্যাশন তো পালটায়, সেকেলে হয়া যায়। তবে তার এই কথাবার্তার পিছনে কিংবা ফ্যাশনের চিন্তার পিছনে যে ফিলোসফি তা বোধহয় এই ষাট বছর পরে আইসাও ফালায়ে দেয়া যায় না। বোভোয়ার এই লেখাটা গুরুত্বপূর্ণ আরেকটা কারণে, পোশাক নিয়ে এখনও বাংলাদেশে যে ন্যারেটিভ চালু আছে, যে ন্যারেটিভ প্রায় প্রায় উঠে আসে ‘কেবল নারী’ রেপড হইলে বা হ্যারাসড হইলে, বিশেষ করে যে ন্যারেটিভের কারণে ধর্ষণের দায় বেশিরভাগ সময়ে চাপায়ে দেয়া হয় নারীর পোশাকের উপ্রে, সেই ন্যারেটিভকে আরেকবার ভাবার অছিলায়। পোশাক, জামাকাপড়, আমি শার্ট পরব না পাঞ্জাবী পরবো নাকি শাড়ি পরবো না স্কার্ট পরবো, এই সিদ্ধান্ত কে নিবে না নিবে তা একান্তই তার ব্যক্তিগত ব্যাপার। তবে পোশাক চুজ করার সিদ্ধান্তের পিছের ফিলোসফির রং ভিন্নও হইতে পারে। কিন্তু একটা ফিলোসফির আরেকটা ফিলোসফির সাথে ফাইট কইরা নির্দিষ্ট কোন একটা পোশাকরে স্ট্যান্ডার্ডাইজেশন করার এখতিয়ারও কারো থাকার কথা না।

জাতীয় মাছের মতো জাতীয় পোশাকের মতো ধারণাও একটা বেহুদাপনা, জাতীয়তাবাদী চিন্তা। এই চিন্তা আরোপ করে কোন একটা নির্দিষ্ট পোশাকরে উঁচু ভাবার, ভালো ভাবার। আবার একই কারণে, লিট ফেস্টে লুঙ্গি পরে গেলে পুলিশি বাধা আরও বেশি পোশাকের স্ট্যান্ডার্ডাইজেশনেরই ফলাফল। পোশাক আশাক ক্লাস তৈরি করে, ক্লাস মেইন্টেইন করে। ব্র্যান্ডের পোশাক কেবল একটা সোসাইটিই কিনতে পারবেন, তারাই ব্র্যান্ডের অডিয়েন্স, সোসাইটির লোকজনও সেই ব্র্যান্ডের পোশাক কিনে, কেনা-মেইন্টেইন করার সাইকেলটাও এইভাবে মোটামুটি ঠিক থাকে। ওই সোসাইটির লোকজন কখনো গুলিস্তানে যায় না, হকার্স মার্কেটে যায় না, কারণ এই মার্কেটগুলা যেন একটু নিচু গোত্রের, এইখান থেকে পোশাক হয়তো না কিনাই ভালো। এইভাবে একটা সোসাইটি আরেকটা সোসাইটিরে দূরে ঠেলার কামিয়াবি হাসিল করে। এইভাবে ঘুরতে ঘুরতে একটা সোসাইটির সাথে, একটা ক্লাসের সাথে, কোন একটা মার্কেট, কোন একটা দোকান কিংবা কোন একটা পোশাক জড়ায়া যায়। এই সম্পর্ক থেকে একটারে আরেকটা থেকে আলাদা করা যেন একটু ডিফিকাল্টই।

একটা ক্লাসরে নির্দিষ্ট কোন পোশাক দিয়ে চিহ্নিত করা, সেই পোশাকের মাপে কোন ব্যক্তিকে পুরাপুরি বুইঝা ফেলার যে প্রবণতা, তা আরও বেশি প্রবলেমাটিক। লুঙ্গি সবসময়ই খেটে খাওয়া মানুষের ইমেজ আনে, কোটপ্যান্ট বড়লোকি সাহেবের ইমেজ আনে, পোশাকের কারণে ধরে নেয়া হয় হয়তো এই লুঙ্গি পরা লোকটা একশ টাকার টিকিট কাইটা ঢুকতে পারবেন না মেলায় অথবা কোটপ্যান্ট পরা ভদ্রলোক মেজবানে আসলে তার জন্যে হে হে করে আগেভাগে সিট ছাইড়া দেয়া উচিত; এই ধরণের প্রিকনসেপশনের আসলে ভিত্তি নাই বললে ভুল হবে।

ভিত্তি আছে তবে এই ভিত্তি চিন্তা প্রক্রিয়ার বিশেষ ভুল ‘কগনিটিভ এরর’-এর। ধরেন আপনি কোন ভার্সিটির টিচার। আপনার স্টুডেন্ট প্রায় সময় ক্লাসে লেইট করে আসে। সেইজন্যে, আপনি ভাইবা নিলেন আপনার স্টুডেন্ট লেইট মফিজ, তার খাসলতই হইতেছে লেইট করা। কিন্তু এমনও তো হইতে পারে, তার লেইট হওয়াটার জন্যে কোন গাড়ি দায়ী, ভার্সিটির বাস দায়ী কিংবা কোন পার্টিকুলার রাস্তা অথবা অনেক কিছু। এই ধরণের নানান পসিবিলিটি বাদ দিয়ে যখন এই ‘লেইট হওয়া’টারে স্টুডেন্টের খাসলতের সাথে মিলায়া ফেলেন, চিন্তাভাবনার এই প্রকাররে সাইকোলজিস্টরা কন ‘কগনিটিভ এরর’।

একইভাবে পোশাক দিয়ে কারো খাসলত, ইকোনমিক/পলিটিকাল অবস্থান আগেভাগে ধরে নেয়াটাও হইতেছে একপ্রকার প্রিকনসেপশন বা ত্রুটি। এই ত্রুটি একটা ক্লাসরে আরেকটা ক্লাসের উপর ছড়ি ঘোরানোর বৈধতা জারি কইরা দেয়। কিন্তু মানুষের সাথে মানুষের মধ্যকার রেসপেক্টের জায়গাটারে বৈধতা দিতে সাহায্য করে না। পোশাক আশাকের কোন ধরাবান্ধা নিয়ম থাকা উচিত না, নিয়ম যদি লাগেও তা পোশাক যে পরতেছে সেই বরং ঠিক করুক। রেগুলার নিয়মে প্রত্যেকটা ধর্ষণের কেসে পোশাকের ন্যারেটিভ বারবার আসলে মনে হয়, যদিও আমাদের দেশে ফ্যাশন ব্র্যান্ড, মার্চেন্ডাইজার, গার্মেন্টেসের অভাব নাই, তবুও কোথাও কোন এক পোশাকের মধ্যে পুলিশ বইসা আছে। পোশাকের পুলিশি নিয়ম প্রায়ই চেষ্টা করে মাথাচাড়া দিয়া উঠতে। হয়তো আমাদের পলিটিকাল কালচারের ভিতর দিয়ে এই পুলিশ আরও শক্ত হইতে পারতেছে।

কিংবা এমনও হইতে পারে, এই পোশাকের পুলিশ মাথা নিচু কইরা বসে থাকে কারণ তার বেল নাই, তাই সে সুযোগ খুঁজে কোন একটা ইস্যুর যে ইস্যুতে সেই পোশাকি পুলিশ ফের নিজেরে ভাববে আমি তো আসলে কোথাও হারায়ে যাই নাই, বরং গভীরভাবে বসবাস করতেছি এই দেশের কালচারাল ডিসকোর্সে। এই শতকে কিংবা এই দশকে আপনি পাঞ্জাবী পরতে পারেন, পাঞ্জাবীর সাথে লুঙ্গিও পরতে পারেন। কিংবা আপনি ডেনিমের শার্টের সাথে গুলিস্তানের প্যান্টও পরতে পারেন। আবার আপনি লুঙ্গি নাও পরতে পারেন কিংবা পারেনও। এই সবকিছু আপনি কিভাবে পরতেছেন বা না পরতেছেন, সকল ডিসিশান আপনার ফিলোসফিরেই প্রকাশ করে। পোশাক তো আপনার নিজের উপর। আর এই চিন্তাটা ছিলো বোভোয়ারও।

/তৌকির হোসেন

……………………………………

আপনারে আমার আগেই বইলা রাখা ভালো যে আমি পোশাক আশাকের ব্যাপার নিয়ে একদমই ইন্টারেস্টেড না- সিমন দ্য বোভোয়া বলতেছিলেন, সাথে সাথে এইটাও যোগ করে দিলেন- আসলে মাথা ঘামানোর মতো এত এত জিনিস আছে, এত এত ইন্টারেস্টের জায়গা আছে, পোশাক নিয়ে ভাববার মতো অবকাশ আমার নাই।

প্যারিসের সেকেন্ড সেক্সের মানুষজনের মধ্যে সিমন দ্য বোভোয়ার যে অবস্থান, তা তার লেখালেখির দিক দিয়েই হোক কিংবা তার ইন্টেলেকচুয়াল প্রভাবের জায়গা থেকেই হোক, বোভোয়ার এই কমেন্ট আশ্চর্যজনক কিছু না। মানুষজন বরং ‘বোভোয়া জামাকাপড় নিয়া কথা বলতেছেন’ এই জিনিস শুনলেই হাসাহাসি করবে। কিন্তু যেই মুহূর্তে বোভোয়া তার মন্তপাঘনাসের স্টুডিও ফ্ল্যাটের দরজা খুলে আমাদের প্রবেশ করাইলেন, আপনার নির্ঘাত মনে হবে- নাহ! বোভোয়ার জামাকাপড় নিয়ে কিছু হইলেও নিজস্ব ভাবনা আছে।

সিমন দ্য বোভোয়া আর সিন্থিয়া জুডাহ। ছবি, দ্য অবজারভার থিকা নেয়া।

সিমন দ্য বোভোয়া আর সিন্থিয়া জুডাহ। ছবি, দ্য অবজারভার থিকা নেয়া।

বোভোয়াকে দেখতে ক্যামন দেখা যায়? সাদাকালো উলের টুইড জামায় আঁটসাঁট, টিপটপ আকর্ষণীয় এক ফিগারওয়ালা মহিলা তিনি। টুইডের সাথে তার দুই কানে গোমেদ পাথরের বড় গোল দুল, দুই আঙুলে আংটি, পায়ে কালো রঙের হিল জুতা এবং গলায় একটা সিলভার চেইন- যেইটা কলার দিয়ে বলতে গেলে ঢাকাই পড়ছে একপ্রকার- চেইনে সিলভার বলগুলা শিমবিচির মতো সাজানো। তার মেকাপ খুব সিম্পল, স্পষ্টঃ টিন্টেড ফাউন্ডেশন এবং গোলাপি-লাল লিপস্টিক; নখে লাল নেইলপলিশ দেয়া। তার মুখ আনন্দে ঝলমল করতেছিলো আর খুব দ্রুত কথা বলা পরেও কথার তাল অদ্ভুতভাবে ধরে রাখতে পারতেছিলেন।

 

বোভোয়ার ধনদৌলত

মডার্ন স্টুডিও ফ্ল্যাটের যেই ব্লকটা আছে, সেই ব্লকেরই একটা এপার্টমেন্টে বোভোয়া থাকেন। আলোবাতাসঅলা, ব্রাইট, পরিষ্কার, ছিমছাম, গুছানো তার এপার্টমেন্ট। বিভিন্ন ট্যুর থেকে যে সমস্ত ট্রফি তিনি নিয়ে আসছেন, তা ঘরে একটা রঙিন, উজ্জ্বল আবহ দিতেছে। আফ্রিকান স্কোয়াড্রন, লাল রঙের কোরিয়ান ড্রাম, চাইনিজ প্লুশ পাখি, শোবার ঘরের বারান্দায় চাইনিজ সিল্কের এম্ব্রয়ডারি করা একটা পর্দা, যেইটা ঝুলে আছে এবং জানালার ধারে একটা ছোট গোল টেবিলের উপরে একজোড়া হাত, মোনাজাতের ভঙ্গিতে ধরা। এই হাতজোড়া সার্ত্রের মডেল হাত, একটা পটে কচুরিপানাতে ঠেশ দিয়ে আছে, বিড নেকলেস আর পাখি পুরা মডেলটারে সাজায়ে রাখছে।

বোভোয়া তার খাটের কিনারায় হাত দুইটা কোলের উপরে রাইখা বসেছিলেন। কথা বলতে বলতে তার ‘ধনদৌলত’ দেখানোর জন্যে তিনি যেভাবে টুক করে একটা লাফ দিলেন, তাতে তখন তারে একটা বাচ্চা মেয়ের মতোই লাগতেছিলো। জামাকাপড়ের জন্যে পয়সা খরচ করা কিংবা এইটা নিয়ে এত বেশি মাথা ঘামানো আমার প্রিন্সিপালের সাথে যায় না… তিনি বলতেছিলেন… একটা ইভনিং ড্রেসের জন্যে হাজার ফ্রাংক খরচ করতে রাজি না আমি। যদি আমার এমন কোন জায়গায় যাইতে হয়, যেইখানে যাওয়ার জন্যে আলাদা, নির্দিষ্ট ড্রেস কোড আছে- আমি সেইখানে যাই না। কিন্তু, যদি আপনার এই বিষয়ে একান্তই জানতে ইচ্ছা করে, ওয়েল, পোশাক-আশাক ঘিরে আমার যে লাইফস্টোরি তা আপনারে বলা যায়।

যখন আমি ছোট ছিলাম, আমারে খুব বালছাল জামাকাপড় পরানো হইতো। আমার বাপমা খুব শুদ্ধাচারি ছিলেন এবং তাদের সাজগোজের অভাব ছিলো না। কিন্তু সেই সাজগোজ কনভেনশনাল কারণে হইতো, এমন না যে তারা নিজেদের চয়েজে সেই পোশাক পরতেছেন। বারো কি তের বছর বয়সে আমার অবস্থা খুবই খারাপ হইয়া গেছিলো, আমার সারা শরীর হলুদ রঙের আভা নিছিলো, আর ব্রণে আমারে বীভৎস দেখাইতো।

কিন্তু আমারে ক্যামন দেখাইতেছে তা নিয়ে আমার নিজের অত ভাবাভাবি ছিলো না। আমার জীবন তখন অন্যান্য ইন্টারেস্ট আর স্কুলের বেস্টফ্রেন্ড নিয়ে খুব ফাটাফাটি ভাবেই কাটতেছিলো। আমার বেস্ট ফ্রেন্ড ছিলো এলিজাবেথ ম্যাবিলি, তারে আমার খুব ভাল্লাগতো। সে কী ড্রেস পরছে বা তারে দেখতে ক্যামন লাগে, তা নিয়ে আমার অত মাথাব্যথা ছিলো না।

মাঝে মাঝেই আমি ভাবি, যদি আমার একটা ছোট বাচ্চা থাকতো, আমি তারে কী আনন্দটা নিয়েই না জামাকাপড় পরাইতাম। আমি তার সাথে শপিং করতে যাইতাম, তাকে ড্রেস বাছতে হেল্প করতাম (যতদিন না সে সতের কিংবা আঠার হয়) এবং তারপর তাকে নিজের মতো ছেড়ে দিতাম। না ছাড়লে দেখা যাইতো, তার ভিতর নানানরকম কমপ্লেক্সিটির তৈরি হইতেছে, যেইটা খুব ভালো কথা না।

কিন্তু আমি ইচ্ছাকৃতভাবেই নিজের সাজগোজ বাদ দিছি। কারণ, এই সুরত আমার বাপমার সাথে সম্পর্কিত ছিলো, এই সুরত কনভেনশনাল লাইফের বয়ামে বন্দী, আর এইটা থেকে বাইর হইতে গেলে আমাকে সম্পূর্ণ নতুন একটা টেস্ট, একদম আমার নিজস্ব একটা জীবন তৈরি করতে হইতো। আর এইটা সেই সময়ের সাজগোজ নিয়ে সচেতন হইলে কস্মিনকালেও সম্ভব হইতো না। আমার একজন বান্ধবী ছিলো, যে মোটামুটি ভালো ঘরের জামাকাপড় পরতো, একদিন সে আমার চুল নিয়ে কারিকুরি করার চেষ্টা চালাইছিলো।

সরবোনে আমি প্রফেসর হওয়ার পর প্রথম বছর আমার কিছু একটা পরা লাগতো। সেইজন্যে আমি দুই দুইটা ড্রেস বানাইছিলাম। একটা হইতেছে ক্রেইপ দে শিন (সিল্কের তৈরি বিশেষ ধরণের ড্রেস), আর একটা ভেলভেটের উপরে সাদা-কালো কাজ করা ড্রেস। কল্পনা করতে পারেন! ভয়াবহ!

 

যুদ্ধ, প্রতিরোধের সময়ে বন্ধুরা

সেই পুরা বছরটা আমি ওই ড্রেস পরছিলাম। গরম লাগার জন্যে আমার একটা কোট ছিলো এবং একটা হ্যাট। ভার্সিটিতে আপনারে একটা হ্যাট পরা লাগতো। শুধু টিচারদের জন্যেই না, স্টুডেন্টদেরও পরা লাগতো। তারা যখন ভার্সিটি এরিয়া ক্রস করে ফেলতো কিংবা দৃষ্টির বাইরে চলে যাইতো, তখন তারা নিজেদের ছোট বেরেটগুলা (ফ্রেঞ্চ টুপি) পকেটে ঢুকায়া নিতো।

এর পরেই তো যুদ্ধ চলে আসলো। তখন, অফকোর্স একজনের জামাকাপড় নিয়ে অত চিন্তা করার আদিখ্যেতা দেখানোর টাইম ছিলো না। যুদ্ধে আমার অনেক বন্ধুবান্ধব যোগ দিছিলো। আর সেই সময়ে টিকে থাকার আসল বিষয়টা ছিলো গরম থাকার। তাই আমার যত ধরণের সোয়েটার ছিলো তার সবগুলাই পরার চেষ্টা করতাম। একটার উপর আরেকটা, ভিতরে আরও কয়েকটা – এইভাবে আমি পরতাম।

আমরা তখন জুতা পরতাম, সেই সময় স্টকিংস (উরু পর্যন্ত পরা যায় এইরকম লম্বা মোজা) পাওয়া যাইতো না। আর সবসময়ই আমার মাথায় একটা পাগড়ি থাকতো। এই পাগড়িটা একরকম হ্যাট হিসাবে কাজ করতো আবার চুলের জন্যেও হেল্প করতো। চুল ধোয়াটা যে কী কঠিন ব্যাপার তা তো আপনি জানেনই, আবার তখন ওইরকম গরম পানিও পাওয়া যাইতো না। আপনি ইচ্ছা করলে ব্ল্যাক মার্কেট থেকে বিভিন্ন জিনিস কিনতে পারতেন কিন্তু সেইখানে এত বেশি দাম ধরা হইতো, আর ওই চড়া দাম দিয়ে জিনিস কেনাটা আমার ধাতের সাথে যায় না। আমি বরং খাওয়ার কিছু পাইলেই তখন খুশি হইতাম, যেকোনভাবে।

তারপর তো যুদ্ধ শেষ হইলো, তখন মার্কেটে এভেইলেবল ভালো জিনিস বলতে প্রিন্টেড সিল্ক স্কার্ট আর ইমিটেশন কটন ফ্যাব্রিকের পোশাকগুলাই ছিলো। আমি সেগুলার কিছু জোগাড় করলাম, একটা স্কার্ট বানাইলাম। আমার তখন সেরা ফিল হইতেছিলো।

আমি পর্তুগালে গেলাম। আমার বোন সেইখানে থাকতো, সে চাইতেছিলো আমি যেন তার সাথে দেখা করি, তার কাছে আসি। আমি সেইখানে কিছু লেকচার দেয়া যায় কিনা, সেই এন্তেজাম করলাম। কল্পনা করতে পারেন! পর্তুগাল! ওই সময়টা আমার জন্যে আনন্দের একটা সময় ছিলো।

যখন আমি বর্ডার ক্রস করতেছিলাম, কাস্টমসের লোকজন আমার দিকে ভয় ভয় চোখে তাকাইতেছিলো। আমার সাদা খালি পা, তার উপর কাঠের সোল দেয়া জুতা। তা দেইখা তারা তাদের সন্দেহের নজর সরাইতে পারতেছিলো না। আমার মনে আছে, আমি যখন মাদ্রিদ পার হইতেছিলাম তখন অনেক দোকানগুলায়া অনেক সুন্দর সুন্দর জিনিস বেচতেছিলো, কিন্তু আমি কোনকিছুই কিনতে পারি নাই। পর্তুগালে শেষমেশ পৌঁছাইলাম, আমার বোন আমারে দেইখা এত খুশি হইলো! আমারে দেখে সবাই করুণা কইরা বলতেছিলো, আহারে বেচারা মেয়েটা! তারা আমার বেচারি অবস্থা দেখে আমারে কিছু জামাকাপড় ম্যানেজ কইরা দিছিলো।

 

সোজা দর্জির কাছে

সার্ত্র যখন যুদ্ধের পর আমেরিকা এসে পৌছাইছিলো তখন তার সাথেও একই জিনিস ঘটছে। তিনি একই পুরোনো কানাডিয়ান (একধরণের কোট) দিনের পর দিন প্রায় পাঁচ বছর ধইরা পরে আসতেছিলেন। আমেরিকা আইসা পৌছার পর তিনি সোজা দর্জির কাছে দৌড় দিছিলেন।

আমি অবশ্য বেশি কিছু নেই নাইঃ ক্লাসিক কিসিমের দুই একটা জিনিস। আর আমার কিছু জামাকাপড় ম্যানেজ হয়া গেছিলো। আমি যে জুতা খরিদ করছিলাম সেইটাও আমার স্পষ্ট মনে আছে। আমি দুই তিন জোড়া ফ্ল্যাট কাপড়ের সোলওয়ালা জুতা কিনছিলাম, তা আমারে খুব উৎফুল্ল কইরা রাখছিলো। আমি যখন সেইগুলা পরে প্যারিসে ফিরা আসলাম, মানুষজন আমার জুতার দিকে দৃষ্টি দিতেছিলো, আমারে থামায়া জিজ্ঞেস করতেছিলো আমি সেইগুলা কই পাইছিলাম।

কিন্তু আর কিছুদিন পরে যখন আমি আরেকবার আমেরিকা গেলাম, খেয়াল কইরা দেখলাম জুতাগুলা ক্যামন জানি বেমানান লাগতেছে। তাই নিউইয়র্কের একটা দোকান থেকে নিজের পছন্দ অনুযায়ী কিছু কাপড় কিনলাম। একটা সুন্দর সময় ছিলো সেইটা। একটা সাদা কোট, সুন্দর কইরা বানানো হইছিলো- এখনও সেইটা আমার পরা হয়- এবং একটা ফার কোট। আমি জানি না ওই কোটকে আসলে কোন কাতারে ফেলা যায়, তবে তা অনেক ফ্লাফি ছিলো। সেই সময়টায় লেখালেখির কারণে আমার হাতে কিছু টাকাপয়সা ছিলো, যা দিয়ে এইসব কিনতে পারছিলাম।

পৃথিবীর নানা জায়গা ঘুরে পছন্দমতো জিনিস কিনা, তাও আবার ওই টাকা দিয়ে- একটা অন্যরকম ব্যাপার ছিলো আমার কাছে। রাশিয়াতে থাকতে আমি একটা বড়সড় পার্সিয়ান উলের কোট নিছিলাম, প্যারিসে থাকার সময় ভালো উল দিয়ে পরে সেইটারে রিমডেল করছিলাম। এই যে কালো রঙের পাথর আর গোল্ডের বাটনগুলা দেখেন, কী সুন্দর!

তারপর আসলো আমার লাইফের সেরা পার্টটা। দুনিয়া ঘুরে আমি ট্যুর দেয়া শুরু করলাম, আর লোকাল, কৃষকদের কমদামি জিনিসপাতি কিনা আরম্ভ করলাম– গুয়াতেমালা, চীন, আফ্রিকা, ডালমাটিয়া বিভিন্ন জায়গা থেকে। আমি আসলে জিনিসগুলাকে জিনিসের খাতিরেই পছন্দ করি, আর ওই জিনিসগুলা আমারে একটা ফিল দেয় যেইটা আরও বেশি ভালো লাগে। আপনার যদি আগ্রহ থাকে, তাইলে আপনারে সেগুলা আমি দেখাইতে পারি।

এই যে…। এগুলা সব আমার ধনদৌলত। যদিও এখন আর আমি এদের পরি না, কিন্তু আমি এদের স্যুভেনির হিসাবে রাইখা দিছি। এইগুলার মধ্যে উল দিয়ে স্ট্রাইপ করা লাল সিল্কের একটা চাইনিজ জ্যাকেট আছে যেটা এখনও আমার মাঝেমধ্যে পরা হয়। জ্যাকেটটা খুব আরামদায়ক। তবে আমার এখনকার বয়সের সাথে হয়তো লাল রংটা এখন আর যায় না। আর এই যে, এইখানে যে পুরানো সুন্দর সিল্ক কোটটা দেখতেছেন এইটা কিন্তু একদম আসল ট্র্যাডিশনাল চাইনিজ থিয়েটার গাউন। এই গাউনটা আমি মাঝেমধ্যেই পরি, বিশেষ করে, যখন আমার বন্ধুবান্ধবরা ফ্যান্সি ড্রেস পইরা দেখা করতে আসে।

 

সিল্কের চাইনিজ থিয়েটার ড্রেস দেখাইতেছেন বোভোয়া। ছবি, অবজারভার থিকা নেয়া।

সিল্কের চাইনিজ থিয়েটার ড্রেস দেখাইতেছেন বোভোয়া। ছবি, অবজারভার থিকা নেয়া।

 

বয়স বায়ান্ন, কিন্তু আরও সতর্ক

এখন আমার বয়স বাড়তেছে আর আমারে আরও সতর্ক হইতে হইতেছে। আমি এখন বায়ান্ন, আর বুড়ায়ে যাওয়া মহিলারা খুব বেশি লাজুক ভাবে থাকে। এখন আমি নিজেরে ক্যামনে ডিসেন্ট লুক দেয়া যায়, সেই জায়গাতেই বরং বেশি মনোযোগী। আমার একজন অত্যন্ত দক্ষ ড্রেসমেকার আছেন- রু দে রেনের ম্যাগি রিচি- যার কাছে আমি প্রায় দশ বছর ধরে যাওয়া-আসা করতেছি। এই পোশাকটাও উনিই বানাইছেন। বছরে একবার কি দুইবার আমি তার কাছে যাই এবং খুব দ্রুতই কাজ সারা হয়ে যায়। আমরা মাপজোখ, খুঁটিনাটি একসাথে দেখি এবং কয়েক মিনিটের মধ্যেই আমি ঠিক করে ফেলি কোনটা বানাব।

আমার পছন্দ টুইড কাপড়, গাঢ় রং এবং সাদা কালারের জিনিস। সাদা আসলে একটু বয়স্ক মহিলাদের উপরে ভালো দেখায়। আর এমনিতে অন্যসবের মধ্যে আমি হলুদ বেশি পছন্দ করি; হলুদ আমাকে মানায়ও। নীল আমারে মানায়, কিন্তু নীল রং আমার পছন্দ না। তবে নীলের মধ্যে উজ্জ্বল ইলেক্ট্রিক নীল রং আমার ভালো লাগে কিন্তু মুশকিল হইলো এইটা আবার আমারে স্যুট করে না। আমি যেকোনো একটা ড্রেস বাছাই করি- দুইটা বা তিনটা না- এবং সেইটা সারা বছর পরি। বছরের অন্যান্য সময় হয় আমি স্কার্ট পরি কিংবা শার্ট অথবা সোয়েটার।

মাসে দুইবার করে আমি আমার হেয়ারড্রেসারের কাছে যাই, আমার চুল ধুই, সেট এবং ডাই করি। আমার চুল গ্রে হইয়া যাইতেছে, দেখতেছেন তো এবং এই সময়টাতেই- যখন আপনার চুল কাঁচাপাকা থাকে- তখন খুব বিশ্রি দেখায়। খোপাটা পরচুলা হিসাবে লাগানো আছে, যেহেতু আমার নিজের চুল খুব কম।

আমি মেকআপ খুব একটা করি না। যখন আমি ‘বড়’ হওয়ার পিরিয়ডে ছিলাম, তখন আমার গালে বড় বড় ব্রণের দাগ উঠছিলো, আমি জানিও না ক্যামনে কিভাবে এগুলা হু হু করে বেড়ে গেছিলো। ধীরে ধীরে দাগগুলা অবশ্য মুছে গেছে।

 

কাজের জন্যে ড্রেসিং গাউন

সকালে ঘুম থেকে উঠার পরে আমি কম সময়ে টয়লেট সারি, আমার ড্রেসিং গাউন শরীরে চাপাই আর কাজে নেমে পড়ি। দুপুর কিংবা দুইটা বাজে খাওয়ার আগে আমি কখনো ওই অর্থে ভালো কিছু পরি না। আর আমি যদি আপনারে ড্রেসিং গাউন পরে রিসিভ করতাম কিংবা ইন্টারভিউ দিতে বসতাম, বলার কিছু নাই যে, ইন্টারভিউটা একটু অন্যরকম হইতো। সন্ধ্যায় যখন বাসায় ফিরি তখন আবার ড্রেসিং গাউনে ব্যাক করি। আমি আমার বেশিরভাগ লেখালেখি ড্রেসিং গাউন পরেই করি, অন্তত ওই পোশাকে আমার নিজেরে খুব বেশি ফ্রি লাগে, কম্ফোর্টেবল লাগে। আচ্ছা, যেইখানে ছিলাম, আমি সকালে উঠি, হালকা করে টয়লেট সারি, দুপুর দুইটা নাগাদ বাইরে বের হওয়ার উদ্যোগ নিইঃ হালকা মেকআপ, চুলটা একটু ঠিকঠাক করি, কাপড় পরি। সন্ধ্যার দিকে আমি একটা গোসল নিই – এই টাইমে গোসল করাটা এত রিল্যাক্সিং লাগে আমার! তো এইভাবেই, পুরা দিনটাকে আমি তিনভাগে ভাগ কইরা নিই- ড্রেসিং গাউন, বাইরের পোশাক এবং আবার ড্রেসিং গাউন।

 

পুরানা চাইনিজ নেইলকভার

এখন আমার বয়স হইতেছে, খাওয়াদাওয়ার ব্যাপারেও আমারে সতর্ক থাকতে হয়। ইয়াং মেয়েদের জন্যে গোলগাল স্বাস্থ্য বানানো খারাপ কিছু না, কিন্তু বয়স হইতেছে এমন কারো জন্যে এইটা খুব একটা ভালো না।

ফিরোজা আর মার্বেল পাথর দিয়ে গড়া একটা নেকলেস আছে যেইটা আমার খুব প্রিয়। নেকলেসটা আমাকে গিফট দেয়া হইছিলো। আপনার যদি ইচ্ছা হয়, তাহলে আমি আপনাকে সেটা দেখাইতে পারি। আমি আপনারে বরং আমার সমুদয় ধনদৌলত দেখাইতেছি। এই যে নেকলেসটায় সিলভারের কানের দুল- এগুলা আমার খুব শখের- আমি সিলভার পছন্দ করি। এগুলা আসলে আগে চাইনিজ নেইলকভার ছিলো, এদের পরে কমলার মতো শেইপ দেয়া হইছে। যার হাতে এগুলা পড়ছে, সে নেইলকভার থেকে কানের দুল বানায়া নিছে। দুইটার মধ্যে একটা অবশ্য এখন ভাঙা। এই সিলভার নেকলেসটাও আমার জন্যে স্পেশাল। যখন এইটা পরি, তখন নেকলেসটা আমার ভিতর একধরণের উৎসাহ যোগায়।

সিমন দ্য বোভোয়া। ছবি, গুগুল সার্চ থিকা নেয়া।

সিমন দ্য বোভোয়া। ছবি, গুগুল সার্চ থিকা নেয়া।

 

আমি নিজের কাপড়চোপড় কখনো ইস্ত্রি করি না, সেলাই করি না। আমি বরং সেগুলা ক্লিনারের কাছে পাঠায়ে দিই। এমনকি আমি রান্নাও করি না। যাকে বলে পুরোদস্তুর সংসারী, তেমনটা আমি কখনোই হইতে পারি নাই।

আমি খুব বিচ্ছিন্ন ধরণের লাইফ লিড করি, খুব কম মানুষজনের সাথে দেখা করি। সাধারণত যাদের সাথে সবসময় দেখা হয় তাদের সাথেই দেখা করি। এইরকম লাইফস্টাইলের কারণে দেখা যায়, আমি এমন কোন জায়গায় যাই না যেইখানে আমি কী পরে আছি সেইটা ম্যাটার করে কিংবা এমন কারো সাথে আমি মিশিও না যাদের জন্যে আমার ভিন্ন কিছু পরা লাগে।

 

The following two tabs change content below.
Avatar photo

তৌকির হোসেন

জন্ম ১০ নভেম্বর, ১৯৯৮। চট্টগ্রামে বেড়ে ওঠা, সেখানেই পড়াশোনা। বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগে অধ্যয়নরত। লেখালেখি করেন বিভিন্ন মাধ্যমে। ফিলোসফি, পলিটিক্স, পপ-কালচারেই সাধারণত মনোযোগ দেখা যায়।

এডিটর, বাছবিচার।
View Posts →
কবি, গল্প-লেখক, ক্রিটিক এবং অনুবাদক। জন্ম, ঊনিশো পচাত্তরে। থাকেন ঢাকায়, বাংলাদেশে।
View Posts →
কবি। লেখক। চিন্তক। সমালোচক। নিউ মিডিয়া এক্সপ্লোরার। নৃবিজ্ঞানী। ওয়েব ডেভলপার। ছেলে।
View Posts →
মাহীন হক: কলেজপড়ুয়া, মিরপুরনিবাসী, অনুবাদক, লেখক। ভালোলাগে: মিউজিক, হিউমর, আর অক্ষর।
View Posts →
দর্শন নিয়ে প্রাতিষ্ঠানিক পড়াশোনা, চাকরি সংবাদপত্রের ডেস্কে। প্রকাশিত বই ‘উকিল মুন্সীর চিহ্ন ধরে’ ও ‘এই সব গল্প থাকবে না’। বাংলাদেশি সিনেমার তথ্যভাণ্ডার ‘বাংলা মুভি ডেটাবেজ- বিএমডিবি’র সহপ্রতিষ্ঠাতা ও সমন্বয়ক। ভালো লাগে ভ্রমণ, বই, সিনেমা ও চুপচাপ থাকতে। ব্যক্তিগত ব্লগ ‘ইচ্ছেশূন্য মানুষ’। https://wahedsujan.com/
View Posts →
কবি। লেখক। কম্পিউটার সায়েন্সের স্টুডেন্ট। রাজনীতি এবং বিবিধ বিষয়ে আগ্রহী।
View Posts →
গল্পকার। অনুবাদক।আপাতত অর্থনীতির ছাত্র। ঢাবিতে। টিউশনি কইরা খাই।
View Posts →
জন্ম ২০ ডিসেম্বরে, শীতকালে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অপরাধবিজ্ঞান বিভাগে পড়তেছেন। রোমান্টিক ও হরর জনরার ইপাব পড়তে এবং মিম বানাইতে পছন্দ করেন। বড় মিনি, পাপোশ মিনি, ব্লুজ— এই তিন বিড়ালের মা।
View Posts →
জন্ম ১০ নভেম্বর, ১৯৯৮। চট্টগ্রামে বেড়ে ওঠা, সেখানেই পড়াশোনা। বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগে অধ্যয়নরত। লেখালেখি করেন বিভিন্ন মাধ্যমে। ফিলোসফি, পলিটিক্স, পপ-কালচারেই সাধারণত মনোযোগ দেখা যায়।
View Posts →
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগে শিক্ষকতা করেন। সংঘাত-সহিংসতা-অসাম্যময় জনসমাজে মিডিয়া, ধর্ম, আধুনিকতা ও রাষ্ট্রের বহুমুখি সক্রিয়তার মানে বুঝতে কাজ করেন। বহুমত ও বিশ্বাসের প্রতি সহনশীল গণতান্ত্রিক সমাজ নির্মাণের বাসনা থেকে বিশেষত লেখেন ও অনুবাদ করেন। বর্তমানে সেন্টার ফর স্টাডিজ ইন সোস্যাল সায়েন্সেস, ক্যালকাটায় (সিএসএসসি) পিএইচডি গবেষণা করছেন। যোগাযোগ নামের একটি পত্রিকা যৌথভাবে সম্পাদনা করেন ফাহমিদুল হকের সাথে। অনূদিত গ্রন্থ: মানবপ্রকৃতি: ন্যায়নিষ্ঠা বনাম ক্ষমতা (২০০৬), নোম চমস্কি ও এডওয়ার্ড এস হারম্যানের সম্মতি উৎপাদন: গণমাধম্যের রাজনৈতিক অর্থনীতি (২০০৮)। ফাহমিদুল হকের সাথে যৌথসম্পাদনায় প্রকাশ করেছেন মিডিয়া সমাজ সংস্কৃতি (২০১৩) গ্রন্থটি।
View Posts →
তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞানের ছাত্র, তবে কোন বিষয়েই অরুচি নাই।
View Posts →
পড়ালেখাঃ রাজনীতি বিজ্ঞানে অনার্স, মাস্টার্স। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়। বর্তমানে সংসার সামলাই।
View Posts →
মাইক্রোবায়োলজিস্ট; জন্ম ১৯৮৯ সালে, চট্টগ্রামের সীতাকুন্ডে। লেখেন কবিতা ও গল্প। থাকছেন চট্টগ্রামে।
View Posts →
জন্ম: টাঙ্গাইল, পড়াশোনা করেন, টিউশনি করেন, থাকেন চিটাগাংয়ে।
View Posts →
বিনোদিনী দাসী (১৮৬২/৩ - ১৯৪১): থিয়েটার অভিনেত্রী, রাইটার। ১৮৭৪ থেকে ১৮৮৬ এই ১২ বছর তিনি কলকাতার বিভিন্ন থিয়েটারে অভিনয় করেন। কবিতার বই – বাসনা এবং কনক ও নলিনী। আত্মজীবনী - ‘আমার কথা’ (১৯২০)।
View Posts →