Main menu

সেল্ফ-রেসপেক্ট: এইটার সোর্স, এইটার পাওয়ার – জোয়ান ডিডিওন

কোন এক শুকনা মৌসুমে, একটা নোটবুকের দুই পাতা জুড়ে বড় বড় অক্ষরে আমি একবার লিখছিলাম যে, নিজেরে পছন্দ করার ভুল ধারণা থেকে যখন একজন বের হয়া আসে, তার ইনোন্সেন্স তখন ওইখানেই শেষ হয়া যায়। অবশ্য এখন কয়েক বছর পর আমি অবাক হয়া ভাবি, একটা ব্রেইন, যে কীনা নিজের সাথেই ক্যাচাল করতেছে, তার তো খেয়াল কইরা প্রত্যেকটা নড়াচড়ার রেকর্ড রাখা উচিত। আমি লজ্জার সাথে এই বিশেষ অংশগুলার কথা স্পষ্ট কইরা মনে করি। এইটা একটা মিসপ্লেসড আত্মসম্মানের ব্যাপার ছিল।

আমারে ‘ফাই বেটা কাপা’তে (ইউনিভার্সিটির সরোরিটি হাউজ) নেওয়া হয় নাই। এই না নেওয়ার ব্যাপারটা আসলে খুবই প্রেডিক্টেবল ছিল (আমার অত ভালো গ্রেড ছিল না), কিন্তু তাতে আমার তেমন কিছু একটা যায় আসে নাই। আমি নিজেরে এক ধরণের অ্যাকাডেমিক রাসকলনিকভ (ক্রাইম অ্যান্ড পানিশমেন্ট নভেলের চরিত্র) মনে করতাম, যে কীনা মানুষের জন্য খারাপ এমন কজ-ইফেক্ট সম্পর্কগুলা থেকে অদ্ভূতভাবে ছাড় পাইয়া যাইত। যদিও সিচুয়েশনটা একটু হইলেও স্কট ফিটজেরাল্ডের প্রিন্সটন ট্রায়াংগেল ক্লাবের প্রেসিডেন্ট না হইতে পারার ট্র্যাজেডির ধারে কাছে গেছিল, তবুও, যেই দিন আমি ফাই বেটা কাপাতে ঢুকতে পারি নাই ওইদিন কিছু একটা শেষ হয়া গেছিল- মনে হয় আমার ইনোসেন্স। আমার যে আশা ছিল যে আমার জন্য লাইটগুলা সব সবুজ হয়া যাবে, ছোট থাকতে যেইসব ছোটখাট গুণ আমারে প্রশংসা জুটাইত, আমি শিওর ছিলাম ওইসব গুণ দিয়া আমি শুধু ফাই বেটা কাপাই না- সুখ, সম্মান আর একজন ভালো মানুষের ভালোবাসা পাইতাম (ক্যাসাব্ল্যাংকা এর হামফ্রি বোগার্ট আর প্রক্সি ফাইটের জন্য বিখ্যাত মার্চিসন ভাইদের একজনের ক্রস হইলে ভালো হইত)। ভালো ম্যানার, পরিষ্কার চুল, স্ট্যানফর্ড-বিনেট স্কেলে (আইকিউ টেস্ট) ভালো রেজাল্ট করা- এইসবের উপর আমার যে বিশ্বাস ছিল, সব উইঠা গেল। আমার সেল্ফ-রেস্পেক্ট এত নাইমা গেল যে সেইদিন আমার নিজেরে ওই মানুষটার মত হতবাক লাগল, যে সামনে ভ্যাম্পায়ার দেখছে কিন্তু নিজেরে বাঁচানোর জন্য তার কাছে কোন রসুনের মালা নাই।

যদিও নিজেরে পিছে সরায়া নেয়া একটা আনইজি ব্যাপার- যেন কেউ ধার করা পাসপোর্ট দিয়া বর্ডার ক্রস করার চেষ্টা করতেছে- অবশ্য আমার কাছে এখন মনে হয় আসল সেল্ফ-রেস্পেক্টের সব শুরুওয়াতের জন্য নিজেরে সরায়া নেয়ার শর্তটা জরুরি। আমাদের সব ক্লিশে কথার পরেও নিজের সাথে ধোঁকাবাজিটাই সবচেয়ে কঠিন ধোঁকাবাজি রয়ে যায়। অন্যদের উপর যেই চার্মগুলা কাজ করে এইগুলা নিজের আন্ধার মনের আঁধারের অলিগলিতে চলে না – এইখানে কোন হাসি দেখে মন গলে না, সুন্দর করে লিখা ভালো নিয়তের লিস্টও পাত্তা পায় না। ব্যাট মাস্টারসনরে (প্রফেশনাল জুয়াড়ি) গেইমে জয়েন করতে দেখে একজন চোরা ফ্যারো ডিলারের (এক ধরণের কার্ড গেম) শাফল করার স্পিডের মতই, একজন খুব দেখায়ে দেখায়ে শাফল করবে, কিন্তু তার কার্ডগুলা সব চিটিংয়ের জন্য মার্ক করা। ভুল জিনিসের প্রতি দয়া দেখানো, একটা জিত যেইটার পিছে কোন কষ্ট করা হয় নাই, কাউরে লজ্জা দিয়া তারে দিয়া কোন ভালো কাজ করানো। কষ্টের কথা হইলো, সেল্ফ-রেস্পেক্টের সাথে অন্যের অ্যাপ্রুভালের কোন সম্পর্ক নাই। অন্যদের তো আখেরে খুব সহজেই ধোঁকা দেওয়া যায়। সেল্ফ-রেস্পেক্টের সাথে রেপুটেশনেরও সম্পর্ক নাই – রেপুটেশন নিয়া রেট বাটলার স্কারলেট ও’হারা (গন উইথ দা উইন্ড এর চরিত্র) কে বলছিল যে সাহসী মানুষদের এইটা লাগে না।

অন্যদিকে, যার সেল্ফ-রেস্পেক্ট নাই, সে হইলো একটা ননস্টপ হোম মুভির একজন অনিচ্ছুক অডিয়েন্স। এই মুভি একজনের আসল আর কল্পনার ব্যর্থতার উপর বানানো- আর যতবারই দেখানো হয়, প্রত্যেকবার নতুন কইরা ফ্রেশ ফুটেজ যোগ হয়। ওইযে, ওই গ্লাসটা তুমি রাগ কইরা ভাইঙ্গা ফেলছিলা, ওইযে অমুকের চেহারায় কষ্ট, এখনই দেখ, নেক্সট সিনে তমুক হিউস্টন থেকে ফেরত আসছিল, দেখ, কেমনে তুমি সবকিছু নষ্ট করছিলা। সেল্ফ-রেস্পেক্ট ছাড়া থাকা মানে কোন এক রাতে গরম দুধ, ফেনোবারবিটাল (ঘুমের ঔষধ) ছাড়া শুয়ে থাকা, কাঁথার উপর ঝিম ধরা হাত- ইচ্ছা-অনিচ্ছা থেকে করা পাপগুলা, যে ভরসাগুলা ভাংছিলেন, যে প্রমিজগুলা রাখেন নাই, যে গিফটগুলা আইলসামি, কেয়ারলেস হওয়ার কারণে নষ্ট করছিলেন, এইগুলার হিসাব করা। আমরা যতই এই ব্যাপারটাতে দেরি করি, একসময় না একসময় ওই কুখ্যাত নিজের গুছানো আনকম্ফোর্টেবল বিছানাটায় একা শুই। এইটাতে আমরা ঘুমাইতে পারি কি না সেইটা নির্ভর করে আমরা নিজেদের রেস্পেক্ট করি কি না সেইটার উপর।

আপনারা বলতে পারেন, তাও তো সেল্ফ-রেস্পেক্ট ছাড়া কিছু অসম্ভব কিসিমের মানুষ দেখা যায় যারা খুব প্যারা ছাড়াই আরামে ঘুমাইতে পারে। এইটা বলা মানে মূল পয়েন্টটাই মিস করা। আপনি যদি ভাবেন যে কারো আন্ডারওয়্যারে সেফটি পিন না থাকার সাথে সেল্ফ-রেস্পেক্ট রিলেটেড, এইটাও একইভাবে মূল পয়েন্ট মিস করে। একটা কমন কুসংস্কার আছে যে “সেল্ফ-রেস্পেক্ট” এক ধরণের সাপুড়ের বাঁশি, যেইটা থাকলে একটা বেহেস্তি ভাব ফিল হয়, অপছন্দের বাতচিত আর বিপদ-আপদ থেকে বাঁচা যায়। এইসব একদমই হয় না। জিনিসপাতির চেহারার সাথে এইটার লেনদেন নাই। এইটা একটা আলাদা ধরণের শান্তি, একটা প্রাইভেট রিইউনিয়ন। যদিও অ্যাপয়েন্টমেন্ট ইন সামারা এর কেয়ারলেস, সুইসাইডাল জুলিয়ান ইংলিশ, আর দা গ্রেট গ্যাটসবি এর কেয়ারলেস, অসৎ জর্ডান বেকার দুইজনরেই সেল্ফ-রেস্পেক্টের অসম্ভব ক্যান্ডিডেট লাগতে পারে- এই সেল্ফ-রেস্পেক্ট কেবল জর্ডান বেকারের ছিল, জুলিয়ান ইংলিশের ছিল না। মানায়া নেয়ার যে ক্ষমতা পুরুষের চেয়ে বেশিরভাগ নারীর মধ্যে দেখা যায়, ওইটা দিয়া জর্ডান নিজেই নিজেরে বুইঝা নিছিল, নিজের সাথে আপোষ করছিল। যেই থ্রেটগুলা সেই আপোষরে নষ্ট করতে আসছিল, সেইগুলারে অ্যাভোয়েড করত। ও নিক ক্যারাওয়ে রে কইছিল, “আমি কেয়ারলেস মানুষজনরে হেইট করি। এক হাতে তালি বাজে না।”

জর্ডান বেকারের মত, সেল্ফ-রেস্পেক্টওয়ালা মানুষজন তাদের ভুলগুলা থেকে সাহস পায়। তারা সবকিছুর দাম জানে। তারা যদি পরকীয়া করে, আর পরকীয়া করার জন্য নিজেরা খারাপ ফিল করতেছে দেখেই, যাদের সাথে অন্যায় হইছে তাদের কাছে মাফ চাওয়ার জন্য দৌঁড়ায়া যায় না। আবার এই পরকীয়া ডিভোর্সে গড়াইলে, নিজের নাম যখন ওই কাপলের তালাকনামায় থার্ড পার্টি হিসাবে আসে, এই আনফেয়ারনেসের জন্য, এই আনডিজার্ভিং এম্ব্যারাসমেন্টের জন্য তারা বেহুদা নালিশও জানায় না। তারা যদি আলগংকুইন বারে (নিউইয়র্কের ব্রডওয়ের কাছাকাছি আলগংকুইন হোটেল) বইসা থাকার জন্য কাজ ছাইড়া দিতে চায়, ধরেন স্ক্রিনরাইটিংয়ের কাজ, তারা তখন বিরক্ত হয়া ভাবে না যে কেন তারা থাকতে হ্যাকেটরা (অ্যালবার্ট হ্যাকেট, ফ্রান্সিস গুডরিচ) অ্যান ফ্র‍্যাংক নাটকটা লিখল।

অল্প কথায় কইলে, সেল্ফ-রেস্পেক্টওয়ালা মানুষ একটা টাফনেস দেখায়, এক ধরণের মোরাল নার্ভ দেখায়, যেইটারে আগে চরিত্র বলা হইত সেইটা দেখায়। এই গুণটা রিসার্চ পেপারের অ্যাবস্ট্র‍্যাক্টে অ্যাপ্রুভড হইলেও অন্য যেই গুণগুলার সাথে দ্রুত নেগোশিয়েট করা যায়, সেই গুণগুলার কাছে হাইরা যায়। এর সম্মান পিছলায়া যাওয়ার কারণ হইল মানুষ মনে করে যে কেবল ভদ্র বাচ্চাকাচ্চা আর রি-ইলেকশনে প্রথমেই হাইরা যাওয়া আমেরিকান সিনেটরদের চরিত্র থাকে। যাইহোক, চরিত্র বা নিজের জীবনের দায়িত্ব নিজে নেওয়ার ইচ্ছা- এইখান থেকেই সেল্ফ-রেস্পেক্ট আসে। সেল্ফ-রেস্পেক্ট হইল এমন ব্যাপার যেইটা আমাদের দাদা-দাদিরা ভালো কইরা জানত, তাদের সেইটা থাকুক বা না থাকুক। ছোটবেলা থেকেই তাদের মধ্যে একটা কথা ঢুকায়া দেওয়া হইত যে, যেই কাজ করতে ইচ্ছা করে না সেইগুলা কইরাই মানুষ বাঁইচা থাকে। ভয় আর সন্দেহরে একপাশে রাইখা ইমিডিয়েট কমফর্টরে আরো বড়, অধরা কমফর্টের সাথে তুলনা করা হয়। চাইনিজ গর্ডন একটা পরিষ্কার, সাদা স্যুট পইরা মাহদীদের থেকে খার্তুমরে বাঁচায়া রাখসিল, উনবিংশ শতাব্দীতে এইটারে প্রশংসা করা হইছে কেবল, অসাধারণ ধরা হয় নাই। ক্যালিফোর্নিয়াতে ফ্রি জমি পাওয়ার জন্য মানুষরে মরতে হইছে, এইটাও অন্যায় মনে হয় নাই। ১৮৪৬ সালের শীতকালে বার বছর বয়সী নার্সিসা কর্নওয়াল তার ডায়রিতে ঠাণ্ডাভাবে লিখছিল, “বাবা পড়তে ব্যস্ত ছিলেন, মা বলার আগ পর্যন্ত দেখেন নাই বাসায় আজিব কিসিমের (নেটিভ) ইন্ডিয়ান ঢুইকা পড়ছে।” তার মা আসলে কী বলছিল তা জানা না গেলেও পুরা ঘটনাটা অবাক হওয়ার মতই- বাপ পড়তেছে, ইন্ডিয়ান ঢুকতেছে, মা কথা বলার জন্য সাবধানে শব্দ বাছাই করতেছে যেন খারাপ কিছু না হয়, বাচ্চাটা এইটা নিয়া লিখতেছে আর খেয়াল করতেছে “আমাদের কপাল ভালো ছিল” যে ইন্ডিয়ানগুলো উগ্র ছিল না। তারা কেবল ন্যারেটিভের একটা অংশ ছিল।

কোন না কোন ভাবে তারা সবসময়ই ন্যারেটিভের অংশই থাকে। আসল কথা হইল এইটা বুঝা যে কোনকিছু পাইতে হইলে ওইটার দাম দেওয়া লাগে। সেল্ফ-রেস্পেক্টওয়ালা মানুষ ইন্ডিয়ানদের উগ্র হওয়ার রিস্ক মাইনা নেয়, মাইনা নেয় যে ব্যবসা কইরা দেউলিয়া হয়া যাইতে পারে, মাইনা নেয় ‘তোমারে বিয়া করার পর থেকে প্রত্যেকদিনই ছুটির দিন মনে হয়’ টাইপ এত ভালো সম্পর্ক নাও হইতে পারে। তারা নিজেদের কিছু ইনভেস্ট করতে চায়- তারা নাও খেলতে পারে, কিন্তু যখন খেলে, খেলার সবকিছু বুইঝাই আসে। এই ধরণের সেল্ফ-রেস্পেক্ট একটা ডিসিপ্লিন, মনের একটা অভ্যাস যেইটারে ফেইক করা যায় না কিন্তু ডেভেলপ করা যায়, ট্রেইন করা যায়, ধাক্কায়ে আগানো যায়। আমারে একবার বলা হইছিল যে কান্না পাইলে কান্নাকাটি না কইরা আমি যেন একটা কাগজের ব্যাগে আমার মাথা ঢুকায়া রাখি। যখন কান্না আসে, একটা ভালো কারণ থাকে, অক্সিজেনের সাথে রিলেটেড কিছু, ব্যাগে মাথা ঢুকাইলে একই জিনিস হয়। কিন্তু সাইকোলজিকাল ইফেক্টটা তুলনা করা যায় না। ফুড ফেয়ারের ব্যাগে মাথা ঢুকায়া নিজেরেওয়াদারিং হাইটস এর ক্যাথি ভাবাটা বেশ মুশকিল। একইরকম সব ছোট ছোট অদরকারি ডিসিপ্লিনগুলার জন্যও- কল্পনা করেন কেউ ঠাণ্ডা পানিতে গোসল করতে করতে অতিরিক্ত আবেগে অজ্ঞান হওয়ার ভান করতেছে।

কিন্তু এই ছোট ডিসিপ্লিনগুলাও ততক্ষণ পর্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ যতক্ষণ পর্যন্ত তারা বড় ডিসিপ্লিনগুলারে রিপ্রেজেন্ট করতেছে। ইটনের খেলার মাঠে ওয়াটারলুতে জিতছিল মানে এইটা না যে ক্রিকেটের একটা ক্র‍্যাশ কোর্স নেপোলিয়নরে বাঁচায়া দিছে। রেইনফরেস্টে ফরমাল ডিনার করাটা পয়েন্টলেস, যদি না লিয়ানার (এক ধরণের আগাছা) উপর মোমবাতির টিমটিম আলো আরো স্ট্রং ডিসিপ্লিনরে ডাইকা আনে, অনেক আগে থেকে থাকা মূল্যবোধরে ডাইকা আনে। এইটা এক ধরণের রিচুয়াল। আমরা কে, আমরা কী- এইসব মনে করাইতে সাহায্য করে। মনে করার জন্য একজনের সেইটা জানা থাকা উচিত।

ডিস্ক্রিমিনেট করার, ভালোবাসার, ইনডিফারেন্ট থাকার ক্ষমতা, ধীরেধীরে সব পাওয়া- ভালোর জন্য বা খারাপের জন্য, নিজের ভিতরের এই সেন্স থাকাটাই সেল্ফ-রেস্পেক্ট। সেল্ফ-রেস্পেক্ট না থাকা মানে নিজের ভিতরে আটকে থাকা, প্যারাডক্সের মত- এরা না ভালোবাসতে পারে, না ইনডিফারেন্ট থাকতে পারে। আমরা যদি নিজেদের রেস্পেক্ট না করি, তাহলে যাদের আমাদের সাথে মিলামিশা করার ক্ষমতা আছে, তাদেরকে হেইট করতে বাধ্য হই, নিজেদের ভয়াবহ দুর্বলতা চোখে দেখি না। আবার, খুব অদ্ভুতভাবে, আমরা অন্যদের থেকে নিজেদের ছোট মনে করি। যেহেতু আমাদের সেল্ফ-ইমেজ কাজ করে না, তাই অন্যরা আমাদের নিয়া যে মিথ্যা ধারণা রাখে আমরা ওইভাবেই চলতে চাই। অন্যদের খুশি রাখার এই চাপটারে একটা অ্যাট্রাক্টিভ বৈশিষ্ট্য বইলা, আমাদের কল্পনার এম্প্যাথি, আমাদের দেওয়ার মনমানসিকতা ভাইবা নিজেদের বোধ দিই। অবশ্যই আমরা ফ্রানচেস্কা থেকে পাওলো (দান্তে আলিগিয়েরিয়ের ইনফার্নো এর চরিত্র), ব্রেট অ্যাশলি থেকে জেক (আর্নেস্ট হেমিংওয়ের দা সান অলসো রাইজেস এর চরিত্র), হেলেন কেলার থেকে অ্যানি সালিভান- যে কারো রোল প্লে করব, কোন এক্সপেক্টেশনই ভুল জায়গায় না, কোন রোলই ফানি না। যাদের দেখতে পারি না তাদের জন্যই আমরা এমনসব রোলপ্লে করি যেইগুলা শুরুর আগে থেকেই ফেল করতে বাধ্য। প্রত্যেকটা হার নতুন কইরা হতাশার জন্ম দেয় যেন আমাদের উপর করা পরের ডিমান্ডগুলো আমরা গেস করতে পারি, মিটাইতে পারি।

এই ঘটনাটারে সেল্ফ-এলিয়েনেশন কওয়া যায়। এইটার অ্যাডভান্সড স্টেজে আমরা আর টেলিফোন ধরি না কারণ কেউ কিছু চাইতে পারে, আর খারাপ না ফিল কইরা আমরা যে ‘না’ করতে পারি, এই আইডিয়াটা চেনাজানা না। প্রত্যেকটা দেখাসাক্ষাৎ বেশি ডিমান্ড করে, নার্ভরে অশান্ত করে, ইচ্ছা কমায়া দেয়। একটা চিঠির উত্তর না দেওয়ার মত ছোটখাট ব্যাপারও এমন গিল্টের জন্ম দেয় যে কারো মানসিক সুস্থতা আশেপাশের মানুষের কাছে জল্পনাকল্পনার বিষয় হয়া যায়। উত্তর না লেখা চিঠিগুলার ব্যবস্থা করা, অন্যদের এক্সপেক্টেশন থেকে আমাদের মুক্ত করা, নিজেদের কাছে নিজেদের ফেরত দেওয়া- এইখানেই সেল্ফ-রেস্পেক্টের একক গ্রেট পাওয়ারটা থাকে। এইটা ছাড়া একজন অবশেষে স্ক্রু এর শেষ টার্নটা খুঁইজা পায়: নিজেরে খুঁইজা পাওয়ার জন্য বাসা ছাইড়া চইলা যায় আর বাসায় আইসা দেখে কেউ নাই।

The following two tabs change content below.
Avatar photo

রপকথা নাওয়ার

জন্ম ২০ ডিসেম্বরে, শীতকালে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অপরাধবিজ্ঞান বিভাগে পড়তেছেন। রোমান্টিক ও হরর জনরার ইপাব পড়তে এবং মিম বানাইতে পছন্দ করেন। বড় মিনি, পাপোশ মিনি, ব্লুজ— এই তিন বিড়ালের মা।

এডিটর, বাছবিচার।
View Posts →
কবি, গল্প-লেখক, ক্রিটিক এবং অনুবাদক। জন্ম, ঊনিশো পচাত্তরে। থাকেন ঢাকায়, বাংলাদেশে।
View Posts →
কবি। লেখক। চিন্তক। সমালোচক। নিউ মিডিয়া এক্সপ্লোরার। নৃবিজ্ঞানী। ওয়েব ডেভলপার। ছেলে।
View Posts →
মাহীন হক: কলেজপড়ুয়া, মিরপুরনিবাসী, অনুবাদক, লেখক। ভালোলাগে: মিউজিক, হিউমর, আর অক্ষর।
View Posts →
দর্শন নিয়ে প্রাতিষ্ঠানিক পড়াশোনা, চাকরি সংবাদপত্রের ডেস্কে। প্রকাশিত বই ‘উকিল মুন্সীর চিহ্ন ধরে’ ও ‘এই সব গল্প থাকবে না’। বাংলাদেশি সিনেমার তথ্যভাণ্ডার ‘বাংলা মুভি ডেটাবেজ- বিএমডিবি’র সহপ্রতিষ্ঠাতা ও সমন্বয়ক। ভালো লাগে ভ্রমণ, বই, সিনেমা ও চুপচাপ থাকতে। ব্যক্তিগত ব্লগ ‘ইচ্ছেশূন্য মানুষ’। https://wahedsujan.com/
View Posts →
কবি। লেখক। কম্পিউটার সায়েন্সের স্টুডেন্ট। রাজনীতি এবং বিবিধ বিষয়ে আগ্রহী।
View Posts →
গল্পকার। অনুবাদক।আপাতত অর্থনীতির ছাত্র। ঢাবিতে। টিউশনি কইরা খাই।
View Posts →
জন্ম ২০ ডিসেম্বরে, শীতকালে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অপরাধবিজ্ঞান বিভাগে পড়তেছেন। রোমান্টিক ও হরর জনরার ইপাব পড়তে এবং মিম বানাইতে পছন্দ করেন। বড় মিনি, পাপোশ মিনি, ব্লুজ— এই তিন বিড়ালের মা।
View Posts →
জন্ম ১০ নভেম্বর, ১৯৯৮। চট্টগ্রামে বেড়ে ওঠা, সেখানেই পড়াশোনা। বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগে অধ্যয়নরত। লেখালেখি করেন বিভিন্ন মাধ্যমে। ফিলোসফি, পলিটিক্স, পপ-কালচারেই সাধারণত মনোযোগ দেখা যায়।
View Posts →
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগে শিক্ষকতা করেন। সংঘাত-সহিংসতা-অসাম্যময় জনসমাজে মিডিয়া, ধর্ম, আধুনিকতা ও রাষ্ট্রের বহুমুখি সক্রিয়তার মানে বুঝতে কাজ করেন। বহুমত ও বিশ্বাসের প্রতি সহনশীল গণতান্ত্রিক সমাজ নির্মাণের বাসনা থেকে বিশেষত লেখেন ও অনুবাদ করেন। বর্তমানে সেন্টার ফর স্টাডিজ ইন সোস্যাল সায়েন্সেস, ক্যালকাটায় (সিএসএসসি) পিএইচডি গবেষণা করছেন। যোগাযোগ নামের একটি পত্রিকা যৌথভাবে সম্পাদনা করেন ফাহমিদুল হকের সাথে। অনূদিত গ্রন্থ: মানবপ্রকৃতি: ন্যায়নিষ্ঠা বনাম ক্ষমতা (২০০৬), নোম চমস্কি ও এডওয়ার্ড এস হারম্যানের সম্মতি উৎপাদন: গণমাধম্যের রাজনৈতিক অর্থনীতি (২০০৮)। ফাহমিদুল হকের সাথে যৌথসম্পাদনায় প্রকাশ করেছেন মিডিয়া সমাজ সংস্কৃতি (২০১৩) গ্রন্থটি।
View Posts →
তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞানের ছাত্র, তবে কোন বিষয়েই অরুচি নাই।
View Posts →
পড়ালেখাঃ রাজনীতি বিজ্ঞানে অনার্স, মাস্টার্স। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়। বর্তমানে সংসার সামলাই।
View Posts →
মাইক্রোবায়োলজিস্ট; জন্ম ১৯৮৯ সালে, চট্টগ্রামের সীতাকুন্ডে। লেখেন কবিতা ও গল্প। থাকছেন চট্টগ্রামে।
View Posts →
জন্ম: টাঙ্গাইল, পড়াশোনা করেন, টিউশনি করেন, থাকেন চিটাগাংয়ে।
View Posts →
বিনোদিনী দাসী (১৮৬২/৩ - ১৯৪১): থিয়েটার অভিনেত্রী, রাইটার। ১৮৭৪ থেকে ১৮৮৬ এই ১২ বছর তিনি কলকাতার বিভিন্ন থিয়েটারে অভিনয় করেন। কবিতার বই – বাসনা এবং কনক ও নলিনী। আত্মজীবনী - ‘আমার কথা’ (১৯২০)।
View Posts →