Main menu

কনফুসিয়াসের কথা (পার্ট ১)

এইটা কনফুসিয়াসের (৫৫১ – ৪৭৯ বি.সি.) লেখা বই না। কিন্তু কনফুসিয়াসের বলা কথাগুলার একটা কম্পাইলেশন, যেইটা উনার মুরিদ’রা লেখছিলেন। ধারণা করা হয় বইয়ের ফরম্যাটে এই লেখাগুলা চীনে চালু আছে ৪৭৫ – ২২১ বি.সি. থিকা। কনফুসিয়াস বাঁইচা থাকার সময়েই উনার মুরিদ’রা উনার কথাগুলা লেইখা রাখতেন। কিন্তু সবচে পুরান যেই টেক্সট’টা পাওয়া যায় সেইটা হইতেছে ৫০ বি.সি.’র। যেইখান থিকা ধারণা করা হয়, এই লেখাগুলা মেবি বড় একটা বইয়ের অংশ এবং উনার ফার্স্ট বা সেকেন্ড জেনারেশনের ফলোয়ার’রা লেখছেন এইগুলা। দুইটা মেজর ভার্সনও এভেইলেবল। মানে, কোনটা অরিজিনাল, সেইটা নিয়া অনেক রিসার্চ এখনো চলতেছে। ইংলিশে ফার্স্ট ট্রান্সলেট হইছিল মনেহয় ১৮৬১ সালে। এরপর থিকা নানান সময়ে নানান জন এর ট্রান্সলেশন করছেন। আমি এইখানে ফলো করতেছি ২০১৪ সালে ছাপানো Annping Chin’র ভার্সনটা। বইটা অনেক ডিটেইল, সবগুলা সেয়িং’য়ের নিচে এর বিশদ ব্যাখ্যা দিছেন উনি, অথনেসিটি লেভেল, অন্য সব ঘটনার রেফারেন্স অ্যাড করছেন, যেইটা একটা কমপ্লিট আন্ডারস্ট্যান্ডিংয়ের জন্য হেল্পফুল।

বাংলায় এর তরজমা না-থাকার কথা না। কিন্তু চোখে পড়ে নাই আমার। আমি এইখানে বেসিক টেক্সট’টাই বাংলা করতেছি। যেইটা আসলে একটা খুবই প্রাইমারি লেভেলের ঘটনা। কনফুসিয়াস নিয়া আরো ডিটেইল কাজ যে হইতে পারে, বা হওয়াটা দরকার – এই আর্জের জায়গা থিকা এই কোশিশ’টারে দেখতে পারেন।

ই. হা.

বই এক

১.১ ওস্তাদ কইলেন, “এইটা কি একটা আনন্দের ব্যাপার না জানতে-পারা’টা আর, যখন টাইম আসবে, সেইটা প্রাকটিস করতে পারাটা যা তুমি শিখছিলা? এইটা কি একটা খুশির ঘটনা না যখন বন্ধুরা আসতেছে অনেক দূর থিকা? এইটা কি ভালো-মানুশের কাজ না বেজার না হওয়া, যদি কেউ খেয়াল না করে তোমার জানতে-পারা’টারে?

১.২ ওস্তাদ ইয়ো [ইয়োজি] কইলেন, “যেই লোক তার বাপ-মা’র খেয়াল করে আর তার বড়দের রেসপেক্ট করে সে তার উপরের লোকদের লগে গ্যাঞ্জাম করতে চাওয়ার কথা না। আর একজন লোক যে তার উপরের লোকদের লগে বেয়াদবি করে না সে কখনোই ঝামেলা তৈরি করে না। একজন ভালো-মানুশ শিকড়গুলার খেয়াল করে। যেইখানে শেকড়গুলা শক্ত, সেইখানে একটা ভালো-কাজের জায়গা তৈরি হইতে পারে। তাইলে এইটা কি সত্যি না যে, যেই লোক তার বাপ-মা’র খেয়াল করে আর তার বড়দের রেসপেক্ট করে অইগুলাই হইতেছে তার মানুশ-হওয়ার [ren] শেকড়গুলা?

১.৩ ওস্তাদ কইলেন, “যেই লোক সুন্দর কথা কয় আর সুন্দর চেহারা বানায়া রাখতে চায় তার ভিতরে ভালো-মানুশ হওয়ার ব্যাপারটা কম থাকার কথা।”

১.৪ ওস্তাদ জেং [জেংজি] কইলেন, “সব দিন নিজেরে আমি তিনটা পয়েন্ট দিয়া যাচাই করি। যখন আমি অন্য কারো লাইগা ভালো কিছু করতেছিলাম, আমি কি আমার বেস্ট’টা করতেছিলাম? আমার ফ্রেন্ডদের লগে রিলেশনশীপে, আমি বিশ্বাসের জায়গাটাতে পাতলা কইরা ফেলছিলাম? এমন কোন নলেজের কথা কি আমি বলছি যেইটা আমি নিজে প্রাকটিস করি নাই?

১.৫ ওস্তাদ কইলেন, “হাজারটা রথের একটা রাজ্য চালানোর সময়, সব বিষয়রে কেয়ার আর রেসপেক্টের সাথে সামলাবা, আর বিশ্বাসের যোগ্য হবা; খরচ করার সময় হিসাব কইরা করবা, আর লোকজনদের সাথে হাসি-খুশি থাকবা। খালি ঠিক সময়ে কমন লোকজনদের কাজে লাগাবা।”

১.৬ ওস্তাদ কইলেন, “একজন ইয়াং-লোক যখন বাড়িতে থাকবে সবসময় তার বাপ-মা’র খেয়াল রাখবে আর যখন বাড়ির বাইরে থাকবে তার বড়দের রেসপেক্ট করবে। কাজের ব্যাপারে বুঝদার হবে আর কথায় সমঝদার হবে। সব লোকের সাথেই সে মিশবে কিন্তু যে সবচে ভালো-মানুশ তার কাছাকাছি থাকবে। আর তারপর যদি তার আরো কিছু করার এনার্জি থাকে, তাইলে সে নিজেরে আর্টের কাজে ঢাইলা দিবে।

১.৭ জিক্সিয়া কইলেন, “যদি একজন লোক ফিজিক্যাল বিউটিরে যতোটা পছন্দ করে ভালো-গুণগুলারেও একইরকম পছন্দ করতে পারে, তার মা-বাপ’র জন্য তার পুরাটা দিয়া চেষ্টা করে আর তার খোদারে বিশ্বাস করে নিজের কোন ইন্টারেস্ট ছাড়া, আর তার ফ্রেন্ডদের লগে রিলেশনশিপে কথা-বার্তায় ইমানদার হয়, তারপরেও সে যদি মনে করে যে তার জানা-বোঝা কম, আমি শিওর হয়া বলবো সে বুঝদার লোক।”

১.৮ ওস্তাদ কইলেন, “একজন উঁচা পজিশনে থাকা মানুশের [junzi] যদি ইন্ট্রিগ্রেটি না থাকে, সে সমীহ আদায় করতে পারবে না। আর যদি সে কিছু শিখতে চায়, সেইটা শেষ পর্যন্ত সে ধইরা রাখতে পারবে না। এইরকম মানুশের তাদের কাছাকাছি থাকা দরকার যারা তাদের বেস্ট’টা করে আর যাদেরকে বিশ্বাস করা যায়। যারা তার সমান না তাদেরকে তার দোস্ত বানানো ঠিক না। আর যখনই সে ভুল করবে, তার সেইটা ঠিক করতে ডরাইলে হবে না।

১.৯ ওস্তাদ জেং [জেংজি] কইলেন, “রিসেন্টলি যারা মারা গেছে তাদের দাফন-কাফনের রীতিগুলা অনেক কেয়ার আর রেসপেক্টের সাথে করা লাগবে, আর যারা অনেক আগে মারা গেছেন তাদেরকে স্যাক্রিফাইগুলা দেয়ার কথা ভুইলা যাওয়া যাবে না; তাইলে গিয়া মানুশ-জন তাদের ভালো-গুণগুলার আবাদ করলে অনেক বরকত পাবে তখন।

১.১০ জিকিন জিগাইলো জিগংগ’রে, “ওস্তাদ যখন আরেকটা রাজ্যে যান, তখন উনি অইখানের গর্ভমেন্ট নিয়া খবর নেন। উনি কি জিগায়া খবর নেন নাকি উনারে যা জানানো হয় সেইটা মাইনা নেন?”

১.১১ ওস্তাদ কইলেন, “যখন তোমার বাপ বাঁইচা আছে, খেয়াল করবা উনি কি করতে পছন্দ করেন। যখন তোমার বাপ মারা যাবেন, রিফ্লেক্ট করবা উনি কি কইরা গেছেন। তোমার বাপে যেমনে কইরা গেছে তিন বছর পর্যন্ত যদি তুমি এর থিকা না সইরা থাকতে পারো, তোমারে সাচ্চা লোক [filial, xiao] বলা যাইতে পারে।

১.১২ ওস্তাদ ইয়ো [ইয়োজি] কইলেন, “রীতি-নীতির [li] প্রাকটিসে মিল-মিশ হইতেছে সবচে দামি জিনিস। এর কারণেই আগের দিনের রাজাদের সুন্দর দেখায়, আর এইটা [নিয়মটা] বড় ছোট সব ব্যাপারেই খাটে। যদিও এইটা সবসময় কাজ করে না: যদি তুমি [সবকিছুতে] মিল-মিশ তৈরি করতে চাও কারণ তুমি মনে করো যে এইটা হইতেছে ঠিক আর রীতি-নীতির নিয়মগুলা দিয়া তোমার কাজরে না চালাও, এইটা কাজ করবে না।”

১.১৩ ওস্তাদ ইয়ো [ইয়োজি] কইলেন, “বিশ্বাস-করা জিনিসটা ঠিকঠাক জিনিসের কাছাকাছি আসে যখন তোমার কথাগুলার উপর ভরসা করা যায়। রেসপেক্ট-করা জিনিসটা রীতি-নীতির মালিকানার কাছে যখন এইটারে তোমারে শরম আর অপমানের ব্যাপারে ক্লিয়ার থাকতে এলাউ করে। বিয়ার পরে যারা তোমার আত্মীয়-স্বজন হইছে তাদের দিকে যদি তুমি ভালোবাসা না হারাও, তাইলে তুমি তোমার গোত্রের লোকজনদেরকে রেসপেক্ট করতে পারবা।”

১.১৪ ওস্তাদ কইলেন, “একজন ভালো-মানুশ যখন খায় সেইটা দিয়া নিজেরে ভরাট কইরা ফেলে না আর তার থাকার জায়গার আরাম নিয়া সে চিন্তা করে না। সে কাজগুলা করতে পারা নিয়া চিন্তায় থাকে আর সাবধান থাকে সে কি কইতেছে সেইটা নিয়া। যাদের ভালো ইন্ট্রিগ্রিটি আছে সে তাদের দিকে ঝুঁইকা থাকে কারণ নিজেরে ঠিক জায়গাতে রাখতে চায়। কেউ বলতে পারে সে হইতেছে এমন একজন যে শিখতে ভালোবাসে।”

১.১৫ জিগংগ কইলেন, “গরিব কিন্তু ‘জ্বী হুজুর’ করে না, ধনী কিন্তু রাগী না” – এইরকমের কথা নিয়া আপনার কি মত?”

ওস্তাদ কইলেন, ”এইটা ঠিকাছে, তারপরেও ‘গরিব কিন্তু হাসি-খুশি, ধনী কিন্তু রীতি-নীতি ভালোবাসে” বেটার।

জিগংগ কইলেন, “পুরান-কবিতাগুলাতে বলা হয়: ‘হাড় যেমনে জড়ো করা, দাঁত যেমনে সমান করা; রত্ন যেমন খোদাই করা, পাথর যেমনে পলিশ করা।’ আপনি কি এমন কিছু বুঝাইতেছেন?”

ওস্তাদ কইলেন, “শি [জিগংগ] খালি তোমার লগেই কেউ পুরান-কবিতাগুলা নিয়া আলাপ করতে পারে। কেউ তোমারে কিছু কইলো আর তুমি এইটার মিল দেখতে পাইবা যা বলা হয় নাই, তার লগে।”

১.১৬ ওস্তাদ কইলেন, “এইটা নিয়া চিন্তা কইরো না যে অন্য লোকজন তোমারে চিনে না। বরং চিন্তা করবা তুমি যে তাদেরকে চিনো না।”

বই দুই

২.১ ওস্তাদ কইলেন, “ভালো-গুণ দিয়া শাসন করা হইতেছে নর্থ স্টারের মতো শাসন করা, তার নিজের জায়গাতে দাঁড়ায়া থাকা যখন অন্য সব তারা’রা তার চারপাশে ঘুরতেছে আর তার আদালতে হাজিরা দিতেছে।”

২.২ ওস্তাদ কইলেন, “দ্য বুক অফ পোয়েট্রি’র তিনশ কবিতারে একটা মাত্র ফ্রেইজ দিয়া সংক্ষেপে বলা যায়: “অরা কখনোই পথ [siwuxie] থিকা সইরা যায় নাই।”

২.৩ ওস্তাদ কইলেন, “যদি তুমি লোকজনরে যদি আদেশ দিয়া আর আইন বানায়া গাইড করতে চাও, শাস্তি দেয়ার [ডর দেখায়া] সিধা রাখতে চাও, তাইলে অরা ঝামেলা করা থিকা দূরে থাকবে কিন্তু অদের শরমের কোন সেন্স থাকবে না। যদি তুমি অদেরকে ফলো করার মতো ভালো-গুণ [de] দিয়া গাইড করো আর যদি অদেরকে রীতিনীতিগুলা [li] প্রাকটিস করার লাইনে রাখো, অদের শরমের একটা সেন্স থাকবে আর নিজেদেরকে বদলাইতে জানবে।”

২.৪ ওস্তাদ কইলেন, “পনর বছর বয়সে আমি আমার মন’রে শেখার কাজে লাগাইছি। তিরিশ বছর বয়সে আমি রীতিনীতিগুলার ভিতর দিয়া আমার ব্যালেন্সটা পাইছি। চল্লিশ বছর বয়সে আমি [নিজের ব্যাপারে] সন্দেহগুলা থিকা ফ্রি হইছি। পঞ্চাশ বছর বয়সে আমি বুঝতে পারছি নিয়তি আমারে কি কাজ করতে পাঠাইছে। ষাইট বছর বয়সে আমি যা শুনছি তার লগে মিলতে পারছি। সত্তর বছর বয়সে আমি আমার মনের বাসনারে ফলো করছি লাইনটারে পার না হয়া।”

২.৫ মেনজ ইয়েজি জিগাইলেন ফিলিয়াল [filial] (ভালো পোলা-মাইয়া) হওয়া যায় কেমনে। ওস্তাদ উত্তর দিলেন, “ছাইড়া দিও না [রীতি-নীতি’রে] [wuwei]।”

যখন ফান চি ঘোড়ার গাড়ি চালাইতেছিল, তখন ওস্তাদ তারে এই আলাপের কথা কইলেন, এইটা বইলা যে, “মেনগসুন আমারে ফিলিয়ালিটি নিয়া জিগাইছিল, আর আমি উত্তর দিছিলাম যে ‘ছাইড়া দিও না [রীতিনীতিগুলা]।”

ফান চি জিগাইলো, “এইটা দিয়া আপনি কি বুঝাইলেন?”

ওস্তাদ কইলেন, “যখন তোমার বাপ-মা বাঁইচা আছেন, তাদেরকে সেবা করার সময় রীতি-নীতিগুলা মানবা; যখন উনারা মারা যাবেন, উনাদেরকে কবর দেয়ার রীতি-নীতিগুলা মানবা; উনাদের জন্য মানত করার সময় রীতি-নীতিগুলা মানবা।

২.৬ মেনগ ওয়োবো জিগাইলেন ফিলিয়াল হওয়ার ব্যাপারে। ওস্তাদ কইলেন, “খালি তুমি অসুখে পড়া ছাড়া তোমার মা-বাপ’রে আর কোন কষ্ট দিবা না।”

২.৭ জিইয়ো জিগাইলেন ফিলিয়াল হওয়ার ব্যাপারে। ওস্তাদ কইলেন, “এখনকার দিনে মা-বাপ’রে খাওয়ানোটাই বুঝায়। কিন্তু কুত্তা আর ঘোড়াও এই কাজ করতে পারে। যদি তোমার রেসপেক্ট না থাকে, তুমি কেমনে আলাদা হইলা?”

২.৮ জিক্সিয়া জিগাইলেন ফিলিয়াল হওয়ার ব্যাপারে। ওস্তাদ কইলেন, “সবচে কঠিন জিনিস হইলো মুখের ভাব ঠিক রাখা। যখন কাজকাম বেশি তখন ইয়াংদের বেশি কাজ কইরা কাজটারে শেষ করা আর যখন খাবার আর ওয়াইন আছে তখন বয়স্কদের আগে খাইতে দেয়া, এরে কি বলা যাইতে পারে ফিলিয়াল আচরণ করা?”

২.৯ ওস্তাদ কইলেন, “হুই’র [ইয়ান হুই] লগে যদি সারাদিন আমি কথা কই, সে কোন কথাতেই সে আমার লগে অমত করে না বা আমি যা কইছি সেইটা নিয়া কোন সওয়াল করে না। এই কারণে এইরকম মনেহয় যে সে বেক্কল। কিন্তু পরে, যখন আমি তারে নিজের কাজ করার সময় খেয়াল করলাম, আমি বুঝতে পারলাম যে সে যা শিখছে তার পুরাটাই সে এস্তেমাল করতে পারতেছে। হুই কোনভাবেই বেক্কল না।”

২.১০ ওস্তাদ কইলেন, “খেয়াল করবা [shi] একজন মানুশ কি করে। ভালো কইরা ভাববা [guan], [তোমার লগে] সে কি করছে। কন্সিডার করবা [cha] কোথায় সে ঘরের মতো ফিল করে। তারপরে, কিভাবে সে তার কারেক্টার লুকায়া রাখতে পারবে?”

২.১১ ওস্তাদ কইলেন, “একজন লোক একজন টিচার হইতে পারবে, যখন সে অলরেডি যা জানে সেইটা থিকা নতুন ইনসাইট বাইর কইরা আনতে পারে।”

২.১২ ওস্তাদ কইলেন, “ভালো-মানুশ [junzi] একটা ভ্যাসেল [qi] না।”

২.১৩ জিগংগ ভালো-মানুশের [junzi] ব্যাপারে জিগাইলেন। ওস্তাদ কইলেন, “সে পয়লা তার কথারে কাজে লাগায়। এরপরে সে তার কথারে তার কাজরে ফলো করতে বলে।”

২.১৪ কনফুসিয়াস কইলেন, “ভালো-মানুশ [junzi] হইতেছে দূরের জিনিস দেখেন আর শান্ত মনের; সে দলবাজ বা বিভেদ-বাড়ানোর লোক না। একজন ছোটলোক[xiaoren] হইতেছে দলবাজ আর বিভেদ বাড়ানোর লোক; সে দূরের জিনিস দেখে না আর শান্ত মনের না।

২.১৫ ওস্তাদ কইলেন, “যদি তুমি জানো কিন্তু চিন্তা করতে না পারো, তুমি হতবাক হয়া থাকবা। যদি তুমি চিন্তা করো কিন্তু না জানো, তুমি বিপদের মধ্যে থাকবা।”

২.১৬ ওস্তাদ কইলেন, “অদ্ভুত থিওরির পিছনে যাওয়া বা তোমার পড়াশোনা’তে সাইডট্রাক হয়া যাওয়াটা খালি ক্ষতিই করতে পারে।”

২.১৭ ওস্তাদ কইলেন, “তুমি [জিলু], কি জানো আমি তোমারে কি জিনিস শিখাইতে চাইতেছি? যখন তুমি কোনকিছু জানো তখন বলা যে তুমি এইটা জানো আর যখন তুমি কোনকিছু জানো না তখন বলা যে তুমি এইটা জানো না – এইটা হইতেছে আসল জানা [zhi]।”

২.১৮ জিজহ্যাং একটা অফিসিয়াল পজিশন পাওয়ার জন্য পড়াশোনা করতেছিল। ওস্তাদ কইলেন, “তোমার কানগুলারে ঠিকমতো আর ব্যাপকভাবে ইউজ করবা, আর যেইটা নিয়া সন্দেহ হয় তারে বাদ রাখবা; বাকিদের ব্যাপারে সাবধানে কথা বলবা, তাইলে তুমি কম ভুল করবা। তোমার চোখগুলারে ঠিকমতো আর ব্যাপকভাবে ইউজ করবা, আর যা কিছু বিপদের হইতে পারে তার থিকা দূরে থাকবা; সাবধানের সাথে কাজ করবা, যদি বিপদগুলা সাগরে ফেলে দেয়া হয়, তারপরেও, তাইলে তোমার কম রিগ্রেট হবে। তোমার কথায় কম ভুল করার জন্য আর তোমার কাজে কম রিগ্রেট রাখার জন্য – এইগুলা দরকারি জিনিস একজন বেতনভুক্ত অফিসিয়াল হিসাবে একটা ভালো ক্যারিয়ার করতে হইলে।”

২.১৯ ডিউক আই জিগাইলো, “আমি কি করতে পারি যাতে কমন পিপল আমার কথা শোনে?” কনফুসিয়াস জবাব দিলেন, “ন্যায়বান লোকরে প্রমোট করবা আর বজ্জাত লোকদের উপরে তাদেরকে জায়গা দিবা, তাইলে লোকজন তোমার ব্যাপারে বিশ্বাস করবে আর তোমার শাসনের [fu] আন্ডারে আসবে। উল্টা’টা ঘটবে যদি বজ্জাতদেরকে প্রমোট করো আর তাদেরকে ন্যায়বান লোকদের উপরে জায়গা দিতে থাকো।”

২.২০ জি কানগজি জিগাইলো, “কি করলে কমন পিপল রেসপেক্টফুল হবে, তাদের বেস্ট’টা করবে আর একজন আরেকজনরে আগায়া যাওয়ার জন্য এনকারেজ করবে?” ওস্তাদ কইলেন, “যেইসব লোকের ডিগনিটি আছে, তাদের সমাদর করবা আর লোকজন তোমারে রেসপেক্ট করবে। বয়স্কদের সম্মান করবা, ইয়াংদের আগলায়া রাখবা, আর লোকজন তাদের বেস্ট’টা করবে। ভালোদেরকে কবুল করবা, কম-জানাদেরকে শিখাবা, আর তাইলে লোকজন একজন আরেকজনরে সামনে আগায়া যাওয়ার জন্য এনকারেজ করবে।”

২.২১ কেউ একজন কনফুসিয়াসরে জিগাইছিল, “আপনি গর্ভমেন্টে কেন অংশ নিলেন না?” ওস্তাদ কইলেন, “দ্য বুক অফ ডকুমেন্ট কয়, ‘ফিলিয়াল, খালি ফিলিয়াল হওয়া আর তোমার বড়দের আর ছোটভাইদের দোস্ত হওয়া – গর্ভমেন্ট কি রকম হবে তার উপরে একটা ইনফ্লুয়েন্স রাখে।’ এইটা করাটাই হইতেছে গর্ভমেন্টে অংশ নেয়া। ‘গর্ভমেন্টে অংশ নেয়ার’ লাইগা আমারে একটা পজিশন কেন নেয়া লাগবে?”

২.২২ ওস্তাদ কইলেন, “একজন মানুশ যদি অন্য মানুশদের বিশ্বাস না পায়, আমি দেখি না সে কোথাও যাইতে পারবে। একটা বড় ঘোড়ার গাড়ির জোড়ার মধধ্যে যদি খিল না থাকে আর একটা ছোট ঘোড়ার গাড়ির কান্ধে যদি জোয়াল না থাকে – তারা কেমনে কোথাও যাইতে পারে?”

২.২৩ জিজহ্যাং জিগাইলো, “আমরা কি জানতে পারি আরো দশটা জেনারেশন পরে কি হবে?”

ওস্তাদ কইলেন, “ইয়ন’রা [Yin] জিয়াদের [Xia] রীতি-নীতি ফলো করছে, আর কোনটা যোগ করছিল আর কোনটা বাদ দিছিল, সেইটা জানা যায়। জহু’রা [Zhou] ইয়ন’দের [Yin] রীতিনীতিগুলা ফলো করছে, আর কোনটা অ্যাড করছে আর কোনটা বাদ দিছে, সেইটা জানা যায়। যারা জহু’দের [Zhou] পরে আসবে, এখন থিকা একশ বছর পরেও সেইটা জানা যাবে [কোনটা যোগ করা হইছিল আর কোন কোনটা বাদ দেয়া হইছিল জহুদের [Zhou] থিকা।]

২.২৪ ওস্তাদ কইলেন, “যেই আত্মারা তোমার বংশের আগের লোক না তাদের জন্য দোয়া-মিলাদ পড়ানোটা হইতেছে তোষামুদি করা। যা কিছু ঠিক তার মুখামুখি হওয়া আর এইটা নিয়া কিছু না করা’টা হইতেছে একটা সাহস না-থাকা’র ঘটনা।

The following two tabs change content below.
Avatar photo
কবি, গল্প-লেখক, ক্রিটিক এবং অনুবাদক। জন্ম, ঊনিশো পচাত্তরে। থাকেন ঢাকায়, বাংলাদেশে।

এডিটর, বাছবিচার।
View Posts →
কবি, গল্প-লেখক, ক্রিটিক এবং অনুবাদক। জন্ম, ঊনিশো পচাত্তরে। থাকেন ঢাকায়, বাংলাদেশে।
View Posts →
কবি। লেখক। চিন্তক। সমালোচক। নিউ মিডিয়া এক্সপ্লোরার। নৃবিজ্ঞানী। ওয়েব ডেভলপার। ছেলে।
View Posts →
মাহীন হক: কলেজপড়ুয়া, মিরপুরনিবাসী, অনুবাদক, লেখক। ভালোলাগে: মিউজিক, হিউমর, আর অক্ষর।
View Posts →
দর্শন নিয়ে প্রাতিষ্ঠানিক পড়াশোনা, চাকরি সংবাদপত্রের ডেস্কে। প্রকাশিত বই ‘উকিল মুন্সীর চিহ্ন ধরে’ ও ‘এই সব গল্প থাকবে না’। বাংলাদেশি সিনেমার তথ্যভাণ্ডার ‘বাংলা মুভি ডেটাবেজ- বিএমডিবি’র সহপ্রতিষ্ঠাতা ও সমন্বয়ক। ভালো লাগে ভ্রমণ, বই, সিনেমা ও চুপচাপ থাকতে। ব্যক্তিগত ব্লগ ‘ইচ্ছেশূন্য মানুষ’। https://wahedsujan.com/
View Posts →
কবি। লেখক। কম্পিউটার সায়েন্সের স্টুডেন্ট। রাজনীতি এবং বিবিধ বিষয়ে আগ্রহী।
View Posts →
গল্পকার। অনুবাদক।আপাতত অর্থনীতির ছাত্র। ঢাবিতে। টিউশনি কইরা খাই।
View Posts →
জন্ম ২০ ডিসেম্বরে, শীতকালে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অপরাধবিজ্ঞান বিভাগে পড়তেছেন। রোমান্টিক ও হরর জনরার ইপাব পড়তে এবং মিম বানাইতে পছন্দ করেন। বড় মিনি, পাপোশ মিনি, ব্লুজ— এই তিন বিড়ালের মা।
View Posts →
জন্ম ১০ নভেম্বর, ১৯৯৮। চট্টগ্রামে বেড়ে ওঠা, সেখানেই পড়াশোনা। বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগে অধ্যয়নরত। লেখালেখি করেন বিভিন্ন মাধ্যমে। ফিলোসফি, পলিটিক্স, পপ-কালচারেই সাধারণত মনোযোগ দেখা যায়।
View Posts →
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগে শিক্ষকতা করেন। সংঘাত-সহিংসতা-অসাম্যময় জনসমাজে মিডিয়া, ধর্ম, আধুনিকতা ও রাষ্ট্রের বহুমুখি সক্রিয়তার মানে বুঝতে কাজ করেন। বহুমত ও বিশ্বাসের প্রতি সহনশীল গণতান্ত্রিক সমাজ নির্মাণের বাসনা থেকে বিশেষত লেখেন ও অনুবাদ করেন। বর্তমানে সেন্টার ফর স্টাডিজ ইন সোস্যাল সায়েন্সেস, ক্যালকাটায় (সিএসএসসি) পিএইচডি গবেষণা করছেন। যোগাযোগ নামের একটি পত্রিকা যৌথভাবে সম্পাদনা করেন ফাহমিদুল হকের সাথে। অনূদিত গ্রন্থ: মানবপ্রকৃতি: ন্যায়নিষ্ঠা বনাম ক্ষমতা (২০০৬), নোম চমস্কি ও এডওয়ার্ড এস হারম্যানের সম্মতি উৎপাদন: গণমাধম্যের রাজনৈতিক অর্থনীতি (২০০৮)। ফাহমিদুল হকের সাথে যৌথসম্পাদনায় প্রকাশ করেছেন মিডিয়া সমাজ সংস্কৃতি (২০১৩) গ্রন্থটি।
View Posts →
তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞানের ছাত্র, তবে কোন বিষয়েই অরুচি নাই।
View Posts →
পড়ালেখাঃ রাজনীতি বিজ্ঞানে অনার্স, মাস্টার্স। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়। বর্তমানে সংসার সামলাই।
View Posts →
মাইক্রোবায়োলজিস্ট; জন্ম ১৯৮৯ সালে, চট্টগ্রামের সীতাকুন্ডে। লেখেন কবিতা ও গল্প। থাকছেন চট্টগ্রামে।
View Posts →
জন্ম: টাঙ্গাইল, পড়াশোনা করেন, টিউশনি করেন, থাকেন চিটাগাংয়ে।
View Posts →
বিনোদিনী দাসী (১৮৬২/৩ - ১৯৪১): থিয়েটার অভিনেত্রী, রাইটার। ১৮৭৪ থেকে ১৮৮৬ এই ১২ বছর তিনি কলকাতার বিভিন্ন থিয়েটারে অভিনয় করেন। কবিতার বই – বাসনা এবং কনক ও নলিনী। আত্মজীবনী - ‘আমার কথা’ (১৯২০)।
View Posts →