Main menu

ফিকশন: বিষাদ সিন্ধু [শর্ট ভার্সন]- মীর মোশারফ হোসেন (পার্ট ৯)

১৯. “হায় হাসান! হায় হাসান!”

মারওয়ান্ নগরপ্রান্তভাগে যে স্থানে পূর্বে শিবির নির্মাণ করিয়াছিলেন, সেই স্থানে পুনরায় সৈন্যাবাস রচনা করিয়া যুদ্ধের আয়োজন করিতে লাগিলেন! কিন্তু যে পরিমাণ সৈন্য দামেস্ক হইতে ক্রমে ক্রমে আসিয়াছে, তাহার সহায়ে হোসেনের তরবারি-সম্মুখে যাইতে কিছুতেই সাহসী হইলেন না। দামেস্ক হইতে আর কোনও সংবাদ আসিতেছে না। এমরানকে কহিলেন, “ভাই এমরান! আমি ছদ্মবেশে যে সকল সন্ধান, যে সকল গুপ্তবিবরণ নগরের প্রতি ঘরে ঘরে যাইয়া প্রায় প্রতিদিন জানিয়া আসিতেছি, ওত্‌বে অলীদ আমার সেই কার্য করিবেন। আমি কয়েক দিনের জন্য দামেস্কে যাইতেছি।” এই বলিয়া মারওয়ান দামেস্কে যাত্রা করিলেন।

নিয়মিত সময়ে মারওয়ান্ দামেস্কে যাইয়াই-জায়েদা ও মায়মুনার বিচার শুনিয়া আশ্চর্যান্বিত হইলেন। সময় মত এজিদের সহিত সাক্ষাৎ করিলেন, মদিনার উপস্থিত বিবরণ সমুদয় এজিদের গোচর করিয়া পুনরায় মদিনাগমনের কথা পাড়িলেন। প্রধানমন্ত্রী হামান্ যুদ্ধে অমত প্রকাশ করিয়া কয়েক দিন মারওয়ান্‌কে মদিনা-গমনে ক্ষান্ত রাখিলেন।

সভামণ্ডপে সকলেই উপস্থিত আছেন। মারওয়ানকে সম্বোধন করিয়া এজিদ্ বলিতে লাগিলেন, “মারওয়ান্! একটি নরসিংহকে বধ করা হইয়াছে মাত্র কিন্তু তত্তুল্য আরো একটি সিংহ বর্তমান। এ সমুদয়কে শেষ করিতে না পারিলে আমার মনের আশা কখনোই পূর্ণ হইবে না। হোসেনের রোষাগ্নি ও কাসেমের ক্রোধবহ্নি হইতে রক্ষা পাওয়া সহজ কথা নহে। সে ক্রোধানল সম্যক্ প্রকারেই এক্ষণে আমাদের শিরে পড়িয়া আমাদিগকে দগ্ধীভূত করিবে। পূর্ব হইতেই সে আগুন নিবারণের চেষ্টা করা কর্তব্য। যত শীঘ্র হয়, হাসান-হোসেনের বংশ বিনাশে যাত্রা কর।”

এই সকল কথা শুনিয়া প্রধানমন্ত্রী হামান গাত্রোত্থানপূর্বক করজোড়ে বলিতে লাগিলেন, “রাজাজ্ঞা আমার শিরোধার্য! কিন্তু আমার কয়েকটি কথা আছে। অভয়দান করিলে মুক্তকণ্ঠে বলিতে পারি।”

এজিদ্ বলিলেন, “তোমার কথাতেই তো কয়েক দিন অপেক্ষা করিয়াছি।”

হামান বলিলেন, “বাদশা নামদার! হাসান আপনার মনোবেদনার কারণ-যে হাসান আপনার শত্রু,-সে তো আর ইহজগতে নাই! তবে প্রতিশোধের বাকি আছে কি? বাদশাহ নামদার! জগৎ কয় দিনের? সুখ কয় মুহূর্তের? নিরপেক্ষভাবে একবার ভাবিয়া দেখুন দেখি, হাসান কি আপনার শত্রু? একটি ভালবাসা জিনিসের দুইটি গ্রাহক হইলে পরস্পর জাতক্রোধ আসিয়া উপস্থিত হয়, তাহা আমি স্বীকার করি। কিন্তু সে ঘটনায় হাসানের অপরাধ কি, সে মীমাংসা স্বয়ং জয়নাবই করিয়াছে। তাহার শাস্তিও হইল। অধিক হইয়াছে। এক্ষণে হোসেনের প্রাণ বধ করা, কি হাসান-পুত্রের প্রাণ হরণ করা মানুষের কার্য নহে। মদিনার আবালবৃদ্ধ এমন কি পশু-পক্ষীরাও “হায় হাসান! হায় হাসান!” করিয়া কাঁদিতেছে। এই দুঃখের সময় কি অনাথা-পতিহীনা স্ত্রীগণের প্রতি কোন প্রকার অত্যাচার করিতে আছে? শত্রু বিনাশের পর শত্রুপরিবার আপন পরিবার মধ্যে পরিগণিত, – ইহাই রাজনীতি এবং ইহাই রাজপদ্ধতি। এই অকিঞ্চিৎকর অস্থায়ী জগতের প্রতি অকিঞ্চিৎরূপে দৃষ্টিপাত করাই কর্তব্য।”

এজিদ্ নিস্তব্ধভাবে মনোনিবেশপূর্বক শুনিতেছিলেন। দুষ্ট মারওয়ান রোষভরে বলিতে লাগিলেন, “বৃদ্ধ হইলে মানুষের যে বুদ্ধিশক্তির বৈলক্ষণ্য ঘটে, তাহা সত্য। ইহাতে যে একটু সন্দেহ ছিল, তাহা আজ আমাদের প্রধান উজিরের কথায় একেবারে দূর হইল। এক ভ্রাতা শত্রু, দ্বিতীয় ভ্রাতা মিত্র-ইহা কি কখনো সম্ভবে? কোন্ পাগলে একথা না বুঝিবে? সময় পাইলেই তাহারা প্রতিশোধ লইবে। এই উপযুক্ত সময়ে যদি উহাদিগকে একেবারে সমূলে বিনাশ না করা যায়, তবে কোন-না-কোন সময়ে আমাদিগকে ইহার ফল ভুগিতেই হইবে। পরকাল ভাবিয়া, জগতের অস্থায়িত্ব বুঝিয়া, নশ্বর মানবশরীর চিরস্থায়ী নহে স্মরণ করিয়া, রাজ্যবিস্তারে বিমুখ, শত্রু দমনে শৈথিল্য, পাপভয়ে রাজকার্যে ক্ষান্ত হওয়া নিতান্তই মূঢ়তার কার্য।”

হামানকে সম্বোধন করিয়া এজিদ্ বলিলেন, “মারওয়ান্ যাহা বলিতেছেন, তাহাই যুক্তিসঙ্গত। আমি আপনার মতের পোষকতা করিতে পারিলাম না। যত বিলম্ব, ততই অমঙ্গল। এই যুদ্ধের প্রধান নায়কই মারওয়ান্। মারওয়ানের মতই আমার মনোনীত। শত্রুকে অবসর দিতে নাই, দিবও না। মারওয়ান্! যে পরিমাণ সৈন্য মদিনায় প্রেরিত হইয়াছে, আমি তাহার আর চতুর্গুণ সৈন্য সংগ্রহ করিয়া এখানে রাখিয়াছি। যাহা তোমার ইচ্ছা হয়, লইয়া মদিনায় যাত্রা কর।”

২০. অপরিচিত আগন্তুক

মারওয়ান্ সৈন্যসহ মদিনায় আসিলেন। হাসানের মৃত্যুর পর হোসেন অহোরাত্র ‘রওজা শরিফে’ বাস করিতেছেন, এ কথায় মারওয়ান্ অত্যন্ত চিন্তিত হইলেন। পবিত্র রওজায় যুদ্ধ করা নিতান্তই দুর্বুদ্ধিতার কার্য; সে ক্ষেত্রে যুদ্ধ করিতে সাহসও হয় না! কী উপায়ে হোসেনকে মোহাম্মদের সমাধিক্ষেত্র হইতে স্থানান্তরিত করিবেন, এই চিন্তাই এখন তাহাদের প্রবল হইয়া উঠিল। একদিন মারওয়ান্ ওত্‌বে অলীদের সহিত পরামর্শ করিয়া উভয়েই ছদ্মবেশে নিশীথ সময়ে পবিত্র রওজায় উপস্থিত হইলেন। রওজার চতুষ্পার্শ্বস্থ সীমানির্দিষ্ট রেল ধরিয়া হোসেনের তত্ত্ব ও সন্ধান জানিতে লাগিলেন। হোসেন ঈশ্বরের উপাসনায় মনোনিবেশ করিয়াছেন। উপাসনা সমাধা হইবামাত্রই ছদ্মবেশী মারওয়ান বলিলেন, “হজরত! আমরা কোন বিশেষ গোপনীয় তত্ত্ব জানাইতে এই নিশীথ সময়ে আপনার নিকট আসিয়াছি।”

হোসেন বলিলেন, “হে হিতার্থী ভ্রাতৃদ্বয়! কী আমি কোন গোপনীয় তত্ত্ব জানিতে চাহি না।”

ছদ্মবেশী মারওয়ান্ বলিলেন, “আপনি সেই তত্ত্বের সমুদয় বৃত্তান্ত শুনিলে অবশ্যই বুঝিতে পারিবেন যে, তাহাতে আপনার কোনরূপ ফল আছে কি না।”

হোসেন আগন্তুকের কিঞ্চিৎ নিকটে যাইয়া বলিলেন, “ভ্রাতৃগণ! নিশীথ সময়ে অপরিচিত আগন্তুকের রওজার মধ্যে আসিবার নিয়ম নাই। আপনারা বাহিরে থাকিয়াই যাহা বলিতে ইচ্ছা হয় বলুন।”

ছদ্মবেশী মারওয়ান্ বলিলেন, “আমরা যে গুপ্তভাবে এখানে আসিয়াছি, এ কথার অণুমাত্র প্রকাশ হইলে আমাদের দেহ ও মস্তক কখনোই একত্র থাকিবে না। আজ ওত্‌বে অলীদ্ ও মারওয়ান্ এজিদের আদেশ মত এই স্থির করিয়াছে যে, এই রাত্রেই রওজা মোবারক ঘেরাও করিয়া আপনাকে আক্রমণ করিবে। পরিশেষে হাসনেবানু, জয়নাব এবং আপনার পরিবারস্থ যাবতীয় স্ত্রীলোককে বদ্ধ করিয়া বিশেষ অপমানের সহিত এজিদ্ সমীপে লইয়া যাইবে।”

হোসেন একটু রোষপরবশ হইয়া বলিতে লাগিলেন, “ভাই, ইহাও নিশ্চয় জানিয়ো, আমি বাঁচিয়া থাকিতে ঈশ্বর কৃপায় আমার পরিবারের প্রতি-মদিনার কোন-একটি স্ত্রীলোকের প্রতি, কোন নরাধম নারকী জবারণে হস্তক্ষেপ করিতে পারিবে না।”

মারওয়ান্ বলিলেন, “আপনি আজ রাত্রিতে এখানে কখনোই থাকিবেন না। মারওয়ান গুপ্ত সন্ধানে জানিয়াছে যে, আপনি এই রওজা ছাড়িয়া কোনখানেই গমন করেন না; রাত্রিও শেষ হইয়া আসিল, আর অধিক বিলম্ব নাই।”

হাস্য করিয়া হোসেন বলিলেন, “ভাই রে, ব্যস্ত হইও না। আমার মরণের জন্য তোমরা ব্যাকুল হইও না, কোন চিন্তা করিয়ো না। আমি মাতামহের নিকট শুনিয়াছি, দামেস্ক কিংবা মদিনায় কখনোই কাহারো হস্তে আমার মৃত্যু হইবে না। আমার মৃত্যুর নির্দিষ্ট স্থান ‘দাস্ত কার্‌বালা’ নামক মহাপ্রান্তর। যতদিন পর্যন্ত সর্বপ্রলয়কর্তা, সর্বেশ্বর আমাকে কারবালা প্রান্তরে না লইয়া যাইবেন, ততদিন পর্যন্ত কিছুতেই কোন প্রকারে আমার মরণ নাই।”

মারওয়ান্ বলিলেন, “দেখুন! আপনার সৈন্যবল, অর্থবল কিছুই নাই; এজিদের সৈন্যগণ আজ নিশ্চয়ই আপনাকে আক্রমণ করিবে। আপনার জন্যই মদিনা আক্রান্ত হইবে;-মদিনাবাসীরা নানাপ্রকার ক্লে­শ পাইবে। আপনি যদি শত্রুহস্তে বন্দি হন, তাহা হইলে জীয়ন্তে মৃত্যুযন্ত্রণা ভোগ করিতে হইবে। আর বেশি বিলম্ব করিতে পারি না, প্রণাম করি। আমরা চলিলাম। যাহা ভাল বিবেচনা হয় করিবেন।”

লোকেরা চলিয়া গেল। হোসেন ভাবিতে লাগিল, “হায়! আজ পর্যন্ত এজিদের ক্রোধের উপশম হয় নাই। সকলই ঈশ্বরের লীলা! মদিনাবাসীরা এখনও শোকবস্ত্র পরিত্যাগ করে নাই; দিবারাত্র হাসানবিরহে দুঃখিত মনে-হা-হুতাশে সময় অতিবাহিত করিতেছে। দুঃখিত মনে, দগ্ধীভূত হৃদয়ে কোন প্রকার আশাই স্থায়িরূপে বদ্ধমূল হয় না। এই শোকসন্তপ্ত হৃদয়ে সেই স্নেহকাতর ভ্রাতৃগণকে কী বলিয়া আমি আবার এই মহাযুদ্ধে প্রবৃত্ত করাইব। এজিদের সৈন্য আজ রাত্রিতেই রওজা আক্রমণ করিয়া আমার প্রাণবধ করিবে, ইহা বিশ্বাস্যই নহে। এখানে কাহারো দৌরাত্ম্য করিবার ক্ষমতা নাই। তথাপি কিছুদিনের জন্য স্থান পরিত্যাগ করাই সুপরামর্শ। আপাততঃ কুফা নগরে যাইয়া আবদুল্লাহ্ জেয়াদের নিকট কিছুদিন অবস্থিতি করি। জেয়াদ আমার পরম বন্ধু।” এইরূপ ভাবিয়া হোসেন পুনরায় ঈশ্বরোপাসনায় মনোনিবেশ করিলেন।

ওত্‌বে অলীদ ও মারওয়ান্ উভয়ে শিবিরে গিয়া বেশ পরিত্যাগপূর্বক নির্জন স্থানে বসিয়া পরামর্শ করিতেছেন। মারওয়ান বলিলেন, “মোহাম্মদের রওজায় হোসেনের মৃত্যু নাই! আমরা এমন কোন উপায় নির্ণয় করিতে পারি নাই যে, তাহাতে নিশ্চয়ই হোসেন রওজা হইতে বহির্গত হইয়া মদিনা পরিত্যাগ করেন। এইটি যাহা হইল ইহাও মন্দ নহে। তৎবিস্তারিত কাসেদ গিয়া মুখে প্রকাশ করিবে, তাহার উপায়-কৌশল, সমুদয়ই কাসেদকে বিশেষরূপে বলিয়া দিলাম।”

লিখিবার উপকরণ লইয়া মারওয়ান্ লিখিতে বসিলেন। কিছুক্ষণ পরেই ওত্‌বে অলীদ আবার বলিলেন, “একটি কথাও যেন ভুল না হয়, অথচ গোপন থাকে এইভাবে পত্র লেখা উচিত।” মারওয়ান পত্র রাখিয়া কাসেদ্কে লইয়া গোপনে তাহাকে সমস্ত কথা বলিলেন। কাসেদ্ করজোড়ে বলিতে লাগিল, “ঈশ্বরপ্রসাদে এই কার্য করিতে করিতেই আমি বৃদ্ধ হইয়াছি, যাহা বলিবেন অবিকল তাহাই বলিব। কেবল শহরের নামটি আর একবার ভাল করিয়া বলুন, কুফার কী কুফা।”

মারওয়ান রীতিমত পত্র লেখা শেষ করিয়া কাসেদের হস্তে দিয়া বলিলেন, “কুফা।”

২১. কুফা নগরে

কয়েকদিন দিনরাত্রি অবিশ্রান্ত পর্যটন করিয়া-মারওয়ান প্রেরিত মদিনার কাসেদ্ দামেস্ক নগরে পৌঁছিল। এজিদ সভাভঙ্গ করিয়া কাসেদ্‌কে নির্জনে লইয়া গিয়া সমুদয় অবস্থা শুনিলেন। এজিদ্ তৎক্ষণাৎ আবদুল্লাহ্ জেয়াদকে একখানি পত্র লিখিলেন। কোষাধ্যক্ষের প্রতি আদেশ করিলেন, “তিন লক্ষ টাকা, তদুপযোগী বাহন এবং ঐ অর্থ রাক্ষার্থে কয়েকজন সৈনিকপুরুষ, – এই কাসেদের সমভিব্যাহারে দিয়া এখনই কুফা নগরে পাঠাইতে প্রধান কার্যকারককে আমার আদেশ জানাও।” কোষাধ্যকে এই কথা বলিয়া কাসেদ্‌কে বলিলেন, “কুফা নগরে যাইয়া আবদুল্লাহ্ জেয়াদকে বলিয়ো, আশার অতিরিক্ত ফল পাইবে, কুফা রাজ্য একচ্ছত্ররূপে আপনারই অধিকৃত হইবে। দামেস্করাজ আর কখনোই আপনাকে অধীন রাজা বলিয়া মনে করিবেন না, মিত্ররাজ্য বলিয়াই আখ্যা হইবে।”

সৈন্যচতুষ্টয়ের সহিত দামেস্কের দূত বিংশতি দিবসে কুফা নগরে উপস্থিত হইল। এই কথা আবদুল্লাহ্ জেয়াদের কর্ণগোচর হইলে, তিনি একেবারে আশ্চর্যান্বিত হইলেন।

নিতান্ত উৎসুক হইয়া অনতিবিলম্বেই সেই কাসেদ্‌কে আহ্বান করিলেন। কাসেদ্ আসিয়া সম্মুখে দাঁড়াইয়া এজিদের আদেশমত সমুদয় বৃত্তান্ত একে একে বর্ণনা করিল। এজিদের স্বহস্তলিখিত পত্রখানিও জেয়াদের সম্মুখে রাখিয়া দিল। আবদুল্লাহ্ জেয়াদ সহস্রবার পত্র চুম্বন করিয়া ভক্তির সহিত পাঠ করিলেন। কাসেদ্কে বলিলেন, “তোমরা নির্দিষ্ট স্থানে গিয়া বিশ্রাম কর, অদ্যই বিদায় করিব।”

২২. হজরতের রওজা ছাড়িয়া কোন স্থানেই যাইয়ো না

প্রণয়, স্ত্রী, রাজ্য, ধন – এই কয়েকটি বিষয়ের লোভ বড় ভয়ানক। এই লোভে লোকের ধর্ম, পুণ্য, সাধুতা, পবিত্রতা সমস্তই একেবারে সমূলে বিনাশ প্রাপ্ত হয়। অতিকষ্টে উপার্জিত বন্ধুরত্নটাও ঐ লোভে অনেকেই অনায়াসে বিসর্জন দেয়। এজিদ্ দামেস্কের রাজা, কুফা তাঁহার অধীন রাজ্য। হোসেনের সহিত আবদুল্লাহ্ জেয়াদের কেবলমাত্র বন্ধুত্বভাব সম্বন্ধ। উপরিউক্ত চারি প্রকার লোভের নিকট বন্ধুত্বভাব সর্বত্র অকৃত্রিমভাবে থাকা অসম্ভব। আবদুল্লাহ্ জেয়াদ মূর্খ ও অর্থলোভী; মূর্খের প্রণয়ে বিশ্বাস নাই, কার্যেও বিশ্বাস নাই, লোভীও তদ্রূপ।

আবদুল্লাহ্ জেয়াদ সেই রাত্রিতেই দামেস্কের দূতকে বিদায় করিলেন। প্রধান অমাত্য, সভাসদ এবং রাজসংক্রান্ত কর্মচারিগণ কেহই এই নিগূঢ় তত্ত্বের কারণ কিছুই জানিতে পারিলেন না।

আবদুল্লাহ্ জেয়াদ্ রাজসিংহাসনে উপবেশন করিয়া সমুদয় সভাসদ্গণকে সম্বোধনপূর্বক বলিতে লাগিলেন, “গত রজনীতে আমি হজরত মোহাম্মদ মোস্তফাকে স্বপ্নে দেখিয়াছি। হস্তে কৃষ্ণবর্ণ আশা (যষ্টি), শিরে শুভ্রবর্ণ উষ্ণীষ, অঙ্গে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন শুভ্র পিরহান। আমার শিয়রে দণ্ডায়মান হইয়া তিনি বলিতে লাগিলেন, ‘আবদুল্লাহ্ জেয়াদ্! তোমাকে একটি কার্য করিতে হইবে।’ আমি স্বপ্নযোগে সেই পবিত্র পদ চুম্বন করিয়া জোড়হস্তে দণ্ডায়মান থাকিলাম। নূরনবী দুঃখিত স্বরে বলিতে লাগিলেন, ‘হোসেন ভ্রাতৃহীন হইয়া আমার সমাধিক্ষেত্রে পড়িয়া, নিঃসহায়রূপে দিবারাত্রি ক্রন্দন করিতেছে। তুমি তাহার পক্ষ অবলম্বন কর। তোমার সাধ্যানুসারে তাহার সহায়তা কর।’ এই কথা বলিয়াই পবিত্র মূর্তি অন্তর্হিত হইল। আমারও নিদ্রা ভাঙ্গিয়া গেল; স্বর্গীয় সৌরভে সমুদয় ঘর আমোদিত হইয়া উঠিল।

এই রাজ্য, এই সৈন্য-সামন্ত, এই ভাণ্ডারস্থ ধনরত্ন মণিমুক্তা সকলই হোসেনের। আপনারা আজ হইতে মহামান্য ইমাম হোসেনের অধীন হইলেন। অদ্যই আমার স্বপ্ন বিবরণসহ রাজ্যপরিত্যাগ-সংবাদ ইমাম হোসেনের গোচরকরণ জন্য মদিনায় কাসেদ্ প্রেরণ করা হউক। ইহাও জানাইও,-যতদিন ইমাম হোসেন এই রাজসিংহাসনে উপবেশন না করিতেছেন, ততদিন প্রধান উজির রাজকার্য পরিচালনা করিবেন। আমার সহিত রাজ্যের আর কোন সংস্রব রহিল না।”

প্রধান উজির নতশিরে রাজাজ্ঞা প্রতিপালন করিলেন। প্রধান উজির রাজাজ্ঞানুসারে সমুদয় স্থানে ঘোষণা করিয়া দিলেন। আবদুল্লাহ্ জেয়াদের স্বপ্নবৃত্তান্তও বিস্তারিতরূপে বর্ণনা করিয়া, রাজ্যদান-সংক্রান্ত সমস্ত বিবরণ লিপিবদ্ধ করিযা হোসেন-সমীপে কাসেদ্ প্রেরণ করিলেন।

ক্রমে সর্বত্র প্রকাশ হইল যে, কুফাধিপতি আবদুল্লাহ্ জেয়াদ তাঁহার সমুদয় রাজ্য হোসেনকে অর্পণ করিয়াছেন। ক্রমে মদিনা পর্যন্ত এই সংবাদ রটিয়া গেল।

মারওয়ান আজ মদিনা আক্রমণ করিবে, রওজা আক্রমণ করিবে, হোসেনের প্রাণ হরণ করিবে, সর্বসাধারণের মুখে এই সকল কথার আন্দোলন। মদিনাবাসীরা সকলেই হোসেনের পক্ষ হইয়া এজিদের সৈন্যের সহিত যথাসাধ্য যুদ্ধ করিবে, প্রাণ থাকিতে হোসেনের পরিজনদিগকে বন্দি করিয়া দামেস্কে লইয়া যাইতে দিবে না, এ কথাও রাষ্ট্র হইয়াছে।

একদিন কুফা নগরের কাসেদ্ মদিনায় দেখা দিল। একমুখে বলিতে শত শত মুখে জিজ্ঞাসিত হইল, “কুফার সংবাদ কী?”

কাসেদ্ উত্তর করিল, “কুফাধিপতি মাননীয় আবদুল্লাহ্ জেয়াদ তাঁহার সিংহাসন, রাজ্য, ধন, সৈন্যসামন্ত সমস্তই হজরত ইমাম হোসেনের নামে উৎসর্গ করিয়াছেন। ইমাম হোসেন কোথায় আছেন আপনারা বলুন, আমি তাঁহার নিকটে যাইয়া এই সংবাদ দিব।”

আবদুল্লাহ্ জেয়াদের পত্র পাঠ করিয়া হোসেন সেই পত্রহস্তে কাসেদ সমভিব্যাহারে নিজ ভবনের প্রবেশদ্বারে উপস্থিত হইয়া মদিনাবাসীদিগকে বলিতে লাগিলেন, “ভাই সকল! যদি কুফার অন্ন-জল ঈশ্বর আমার অদৃষ্টে লিখিয়া থাকেন, তবে আপনারা আমার কৃতদোষ মার্জনা করিবেন। সময়ে আমি আপনাদের প্রত্যেকের নিকট হইতে বিদায় গ্রহণ করিব।”

জেয়াদের পত্র লইয়া হোসেন মাননীয়া বিবি সালেমার হোজ্‌রা (নির্জন স্থান) সমীপে গমন করিলেন। ইমাম হোসেন মাতামহীর (হজরত হোসেনের আপন মাতামহী বিবি খাদিজা। বিবি সালেমা হযরত মোহাম্মদের অন্য স্ত্রী।) পদধূলি গ্রহণ করিয়া জেয়াদের পত্রবিবরণ প্রকাশ ও কুফা নগরে গমন প্রসঙ্গ উত্থাপন করিলেন।

রওজা হইতে হোসেনের আগমনবৃত্তান্ত শুনিয়া পরিজন, আত্মীয়, বন্ধু অনেকেই বিবি সালেমার হোজ্‌রায় আসিয়া উপস্থিত হইলেন।

হোসেন সকলের নিকটেই কুফা-গমনসঙ্কল্পে পরামর্শ জিজ্ঞাসা করায়, বিবি সালেমা গম্ভীর স্বরে বলিতে লাগিলেন, “আবদুল্লাহ জেয়াদ্ যাহাই লিখুক, আমি তোমাকে পুনঃ পুনঃ নিষেধ করিতেছি, তুমি কখনোই কুফায় গমন করিয়ো না – হজরতের রওজা ছাড়িয়া কোন স্থানেই যাইয়ো না; হজরত আমাকে বলিয়া গিয়াছেন যে, হোসেন আমার রওজা পরিত্যাগ করিয়া স্থানান্তরে গমন করিলে অনেক প্রকার বিপদের আশঙ্কা।”

হোসেন বলিলেন, “একা আমার প্রাণের জন্য কত লোকের জীবন বিনষ্ট হইবে? তাহা অপেক্ষা আমি কিছুদিন স্থানান্তরে বাস করি, ইহাতে দোষ কি? বিশেষ কুফা নগরের সমুদয় লোক মুসলমান-ধর্মপরায়ণ, সেখানে যাইতে আর বাধা কী?”

সালেমা বিবি বিরক্তভাবে বলিতে লাগিলেন, “আমি বৃদ্ধা হইয়াছি, আমার উপদেশ তোমাদের গ্রাহ্য হইবে কেন? যাহা হয় কর।” তৎপরে হোসেনের মাতার সহোদরা ভগ্নী উম্মে কুলসুম্ বলিতে লাগিলেন, “হোসেন! সকলের গুরুজন যিনি, প্রথমেই তিনি নিষেধ করিতেছেন, তাঁহার কথার অবাধ্য হওয়া নিতান্তই অনুচিত। তোমার কি স্মরণ হয় না যে, তোমার পিতা কুফায় যাইয়া কত কষ্ট পাইয়াছিলেন? কুফা-নগরবাসীরা তাঁহাকে কতই-না যন্ত্রণা দিয়াছিল, সে কথা কি একেবারে ভুলিয়াছ?”

হোসেন বলিলেন, “আমার মন অত্যন্ত অস্থির হইয়াছে! তিলার্ধ কালও মদিনায় থাকিতে ইচ্ছা হইতেছে না। মিনতি করিয়া বলিতেছি, অনুমতি করুন, শীঘ্রই যাহাতে কুফায় যাত্রা করিতে পারি।”

উম্মে কুলসুম্ বিরক্ত হইয়া চলিয়া যাইতে যাইতে বলিলেন, “ঈশ্বর অদৃষ্টফলকে যাহা লিখিয়াছেন, তাহা রদ করিবার কাহারো সাধ্য নাই।”

হোসেনের বন্ধুবান্ধব একবাক্য হইয়া সকলেই কুফাগমনে নিষেধ করিলেন। হোসেন বলিতে লাগিলেন, “আমার স্থানান্তর হওয়ায় মদিনাবাসীরা তো এজিদের রোষাগ্নি হইতে রক্ষা পাইবে। তাহাই আমার পক্ষে মঙ্গল।”

প্রতিবেশীগণের মধ্যে একজন প্রাচীন ছিলেন, তিনি বলিতে লাগিলেন, “ঈশ্বরের নিয়োজিত কার্য অনিবার্য, এ কথা কে না স্বীকার করিবে? কিন্তু এ কথাও রাষ্ট্র হইয়াছে যে, এজিদ্পক্ষীয় কাসেদ্ তিন লক্ষ টাকা লইয়া কুফা নগরে জেয়াদের নিকট গিয়াছিল। জেয়াদ্ও দামেস্কের কাসেদ্‌কে এবং তৎসমভিব্যাহারী সৈন্যচতুষ্টয়কে বিশেষ পুরস্কৃত করিয়া বিদায় করিয়াছেন। তাহার পরদিবসই স্বপ্নবিবরণ সভায় প্রকাশ করিয়া রাজসিংহাসন ও রাজ্য আপনাকে অর্পণ করিয়াছেন। ইহারই-বা কারণ কী? জেয়াদ্ হঠাৎ নূরনবী মোহাম্মদের স্বপ্নাদেশে সেই রাজ্য অকাতরে আপনাকে দান করিল, ইহাতে আমার বিশেষ সন্দেহ আছে।”

হোসেন বলিলেন, “আবদুল্লাহ্ জেয়াদের ন্যায় আমার প্রকৃত বন্ধু মদিনা ব্যতীত অন্য কোন স্থানেই নাই। জেয়াদের বাক্য ও কার্যে আমার কিছুমাত্র সংশয় নাই।”

বৃদ্ধ পুনরায় বলিতে লাগিলেন, “জেয়াদের বাক্যে ও কার্যে আপনার কোন সংশয় হয় না, অবশ্যই না হইতে পারে। কিন্তু আমি বলি, মানুষের মনের গতি কোন্ সময় কী হয়, তাহা যাহার মন, সেও জানিতে পারে না। একটু চিন্তা করিয়া কার্য করায় ক্ষতি কী? আমার বিবেচনায় অগ্রে জনৈক বিশ্বাসী এবং সাহসী লোককে কুফা নগরে প্রেরণ করা হউক। গুপ্ত মন্ত্রণা ক’দিন গোপন থাকিবে? একটু সন্ধান করিলেই সকল জানা যাইবে। আর জেয়াদের রাজ্যদানসঙ্কল্পও যদি যথার্থ হয়, তবে আপনার কুফা গমনে আমি কোন বাধা দিব না।”

হোসেন বলিলেন, “এ কথা মন্দ নয়; কিন্তু অনর্থক সময় নষ্ট এবং বিলম্ব। তা যাহাই হউক, আপনার কথা বারবার লঙ্ঘন করিব না।”

দ্বিতীয় মোস্‌লেম নামক জনৈক বীরপুরুষ গাত্রোত্থান করিয়া করজোড়ে বলিতে লাগিলেন, “হজরত ইমামের যদি অনুমতি হয় তবে এ দাসই কুফা নগরে যাইতে প্রস্তুত আছে।” বৃদ্ধ পুনরায় বলিলেন, “একা মোস্‌লেমকে কুফায় প্রেরণ করা যুক্তিসঙ্গত বলিয়া বোধ হয় না। শিক্ষাত হউক কি অশিক্ষিত হউক, সৈন্যনামধারী কতিপয় লোককে মোস্‌লেমের সঙ্গে দিতে হইবে।”

বৃদ্ধের মুখে এই কথা শুনিবামাত্র নিতান্ত আগ্রহের সহিত অনেকে যাইতে ইচ্ছুক হইলেন। সমুদয় কথা সাব্যস্ত হইয়া গেল; অস্ত্রশস্ত্র সংগ্রহ করিয়া মোস্‌লেম এক হাজার সৈন্য লইয়া কুফা নগরাভিমুখে যাত্রা করিলেন। বীরবরের দুই পুত্রও পিতার সঙ্গে চলিল।

Series Navigation<< ফিকশন: বিষাদ সিন্ধু [শর্ট ভার্সন]- মীর মোশারফ হোসেন (পার্ট ৮)
The following two tabs change content below.
Avatar photo
কবি, গল্প-লেখক, ক্রিটিক এবং অনুবাদক। জন্ম, ঊনিশো পচাত্তরে। থাকেন ঢাকায়, বাংলাদেশে।

এডিটর, বাছবিচার।
View Posts →
কবি, গল্প-লেখক, ক্রিটিক এবং অনুবাদক। জন্ম, ঊনিশো পচাত্তরে। থাকেন ঢাকায়, বাংলাদেশে।
View Posts →
কবি। লেখক। চিন্তক। সমালোচক। নিউ মিডিয়া এক্সপ্লোরার। নৃবিজ্ঞানী। ওয়েব ডেভলপার। ছেলে।
View Posts →
মাহীন হক: কলেজপড়ুয়া, মিরপুরনিবাসী, অনুবাদক, লেখক। ভালোলাগে: মিউজিক, হিউমর, আর অক্ষর।
View Posts →
গল্পকার। অনুবাদক।আপাতত অর্থনীতির ছাত্র। ঢাবিতে। টিউশনি কইরা খাই।
View Posts →
দর্শন নিয়ে প্রাতিষ্ঠানিক পড়াশোনা, চাকরি সংবাদপত্রের ডেস্কে। প্রকাশিত বই ‘উকিল মুন্সীর চিহ্ন ধরে’ ও ‘এই সব গল্প থাকবে না’। বাংলাদেশি সিনেমার তথ্যভাণ্ডার ‘বাংলা মুভি ডেটাবেজ- বিএমডিবি’র সহপ্রতিষ্ঠাতা ও সমন্বয়ক। ভালো লাগে ভ্রমণ, বই, সিনেমা ও চুপচাপ থাকতে। ব্যক্তিগত ব্লগ ‘ইচ্ছেশূন্য মানুষ’। https://wahedsujan.com/
View Posts →
কবি। লেখক। কম্পিউটার সায়েন্সের স্টুডেন্ট। রাজনীতি এবং বিবিধ বিষয়ে আগ্রহী।
View Posts →
জন্ম ২০ ডিসেম্বরে, শীতকালে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অপরাধবিজ্ঞান বিভাগে পড়তেছেন। রোমান্টিক ও হরর জনরার ইপাব পড়তে এবং মিম বানাইতে পছন্দ করেন। বড় মিনি, পাপোশ মিনি, ব্লুজ— এই তিন বিড়ালের মা।
View Posts →
জন্ম ১০ নভেম্বর, ১৯৯৮। চট্টগ্রামে বেড়ে ওঠা, সেখানেই পড়াশোনা। বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগে অধ্যয়নরত। লেখালেখি করেন বিভিন্ন মাধ্যমে। ফিলোসফি, পলিটিক্স, পপ-কালচারেই সাধারণত মনোযোগ দেখা যায়।
View Posts →
পড়ালেখাঃ রাজনীতি বিজ্ঞানে অনার্স, মাস্টার্স। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়। বর্তমানে সংসার সামলাই।
View Posts →
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগে শিক্ষকতা করেন। সংঘাত-সহিংসতা-অসাম্যময় জনসমাজে মিডিয়া, ধর্ম, আধুনিকতা ও রাষ্ট্রের বহুমুখি সক্রিয়তার মানে বুঝতে কাজ করেন। বহুমত ও বিশ্বাসের প্রতি সহনশীল গণতান্ত্রিক সমাজ নির্মাণের বাসনা থেকে বিশেষত লেখেন ও অনুবাদ করেন। বর্তমানে সেন্টার ফর স্টাডিজ ইন সোস্যাল সায়েন্সেস, ক্যালকাটায় (সিএসএসসি) পিএইচডি গবেষণা করছেন। যোগাযোগ নামের একটি পত্রিকা যৌথভাবে সম্পাদনা করেন ফাহমিদুল হকের সাথে। অনূদিত গ্রন্থ: মানবপ্রকৃতি: ন্যায়নিষ্ঠা বনাম ক্ষমতা (২০০৬), নোম চমস্কি ও এডওয়ার্ড এস হারম্যানের সম্মতি উৎপাদন: গণমাধম্যের রাজনৈতিক অর্থনীতি (২০০৮)। ফাহমিদুল হকের সাথে যৌথসম্পাদনায় প্রকাশ করেছেন মিডিয়া সমাজ সংস্কৃতি (২০১৩) গ্রন্থটি।
View Posts →
তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞানের ছাত্র, তবে কোন বিষয়েই অরুচি নাই।
View Posts →
মাইক্রোবায়োলজিস্ট; জন্ম ১৯৮৯ সালে, চট্টগ্রামের সীতাকুন্ডে। লেখেন কবিতা ও গল্প। থাকছেন চট্টগ্রামে।
View Posts →
জন্ম: টাঙ্গাইল, পড়াশোনা করেন, টিউশনি করেন, থাকেন চিটাগাংয়ে।
View Posts →
বিনোদিনী দাসী (১৮৬২/৩ - ১৯৪১): থিয়েটার অভিনেত্রী, রাইটার। ১৮৭৪ থেকে ১৮৮৬ এই ১২ বছর তিনি কলকাতার বিভিন্ন থিয়েটারে অভিনয় করেন। কবিতার বই – বাসনা এবং কনক ও নলিনী। আত্মজীবনী - ‘আমার কথা’ (১৯২০)।
View Posts →