Main menu

বইয়ের লেখা: রিডিং সিনেমা ইন বাংলাদেশ

[এই লেখাগুলা মোস্টলি ২০১৩-১৬ সালের দিকে লেখা, ২০২০-২২ সালেরও কিছু লেখা আছে। লেখাগুলারে মুভি-রিভিউ হিসাবে পড়লে একটু মুশকিলই হইতে পারে। সিনেমাগুলা দেখতে গিয়া কিছু জিনিস মনে হইছে, যেইগুলা পারসোনাল এক্সপেরিয়েন্সের লগে রিলেট করা বা সিনেমারে তার টেকনিক্যালিটির জায়গা থিকা দেখার ঘটনাও না; বরং একটা সময়ে (২০১১ – ২০২১) ঢাকা শহরে বইসা কেমনে সিনেমা দেখা হইতো, সেইটার একটা উদাহারণ হিসাবেই দেখা যাইতে পারে। মানে, সিনেমা এইভাবে দেখতে হবে – এই সাজেশন হিসাবে দেখলে ঝামেলাই হবে। বরং সিনেমারে কেউ এইভাবে দেখছেন। এইরকম একটা ঘটনা।

আর এই বই পড়ার লাইগা এই সিনেমাগুলা দেখা থাকাটা মাস্ট না, তবে দেখা থাকলে কথাগুলারে রিলেট করতে তো সুবিধাই হবে। দেখা না থাকলেও আন্দাজ কইরা নিতে খুববেশি সমস্যা হওয়ার কথা না মনেহয়। তবে একটা জিনিস হইতেছে, ক্ল্যাসিক মুভি বা ভিজ্যুয়ালস খুববেশি নাই এইখানে, একটা সময়ের পপুলার সিনেমাই এইগুলা। যার ফলে অই জেনারেশনের আগের এবং পরের লোকজনের জিনিসগুলার লগে কানেক্ট করতে একটু ডিসট্যান্ট ফিল করার কথা। তবে, সিনেমা জিনিসটাও তো মনেহয় কম-বেশি এইরকমই, একটা সময়েরই ঘটনা।

তবে দেখাদেখির জায়গাতে হয়তো আরো অনেক ভ্যারিয়েশন থাকতো পারতো; বা আছে তো আসলে – অই এক্সপেক্টশনটা ব্যাকগ্রাউন্ডে রাখাটা বেটার। মানে, আমি যা বলছি বা যেইটুক দেখছি, ঘটনাগুলা এইটুকই না, সবসময়।

জানুয়ারি, ২০২২]

রিডিং হিন্দি সিনেমা ইন বাংলাদেশ

এইটা মোটামুটি বেশ চোখে পড়ার মতো ঘটনা যে, বাংলাদেশে সবচে বেশি কনজিউম হয় হিন্দি সিনেমা। বাংলাদেশি বাংলা, কলকাতার বাংলা, হলিউডি ইংলিশ এবং অন্য ভাষার সিনেমা (মানে, আর্ট ফিল্ম আর কি, যেহেতু এক টিকেটে দুই-সিনেমার মতো হংকংয়ের সিনেমা ত আর দেখায় না এখন সিনেমাহলগুলা) – এইরকম কোন দেশে বানানো, সেইটার ক্যাটাগরি করলে হিন্দি-সিনেমাই বেশি দেখা হওয়ার কথা। কিন্তু এখন পর্যন্ত বাংলাদেশে হিন্দি সিনেমার কনজামশন নিয়া তেমন কোন আলাপ দেখি নাই। (২০১৩ সালের কথা বলতেছি আমি।)

আমার দৃষ্টিশক্তির সীমাবদ্ধতা বা জানা-শোনার কমতি এইক্ষেত্রে প্রশংসার জিনিস হইতে পারে। কিন্তু ধরেন, সিনেমা নিয়া নানান ধরণের লেখা, অনুবাদ তো দেখছি; সিনেমা থিওরি, ক্লাসিক্যাল মুভিস, গ্রেট ডিরেক্টরস, ইন্টারভিউ, হলিউডের সিনেমার ইন্টারপ্রিটেশন, এমনকি স্ক্রিপ্টেরও অনুবাদ। মানে, সিনেমা নিয়া কোন আলাপ যে নাই – তা না; বরং ক্যাটাগরি হিসাবে পপুলার হিন্দি সিনেমা, বাংলাদেশে সিনেমার আলাপের ভিতর আসতে পারে না, এইটা আমার প্রথম অ্যাজাম্পশন।

কেন আসে না বা করা হয় না, সেইটা নিয়াও কিছু অনুমান করা সম্ভব। ১৯৮০র দশকে ভিসিপি যুগ থিকাই দেখছি, হিন্দিরে ইন্টেলেকচুয়ালি একটা ইনফিরিয়র ল্যাঙ্গুয়েজ হিসাবে কনসিডার করা হয়। কারণ, আমাদের ইন্টেলেকচুয়াল বেইস হইতেছে লিখিত সাহিত্য; রবীন্দ্রনাথ বাংলায় লিইখা নোবেল পাইছেন (হোক না একশ বছর আগের কথা), আবার উর্দুতে যা-ও ধরেন, মান্টো, ফয়েজ, ইকবাল… উনারা আছেন; হিন্দি’র ত সেই বেইজ-ই নাই; খুবই ফাঁপা একটা ভাষা এবং এর সিনেমাও খালি অহেতুক নাচ-গান, সুড়সুড়ি এবং হলিউডের নকল!

যদিও রিসেন্টলি ভ্যারিয়েশন বাড়ছে, হিন্দি সিনেমার; যেমন ধরেন, আমির খানের তারে জামিন পে‘র কথা ইউনির্ভাসিটির টিচারও তার ক্লাশের স্টুডেন্টদের রিকমেন্ড করেন দেখার জন্য, গ্যাংগস অফ ওয়াসিপুর অস্কারে যায়; এই কারণে কাহিনি-সংক্ষেপ লেখা হয় বিনোদন পাতায় এবং অনলাইন নিউজ পোর্টালে (মাঝে-মধ্যে, সবসময় না; যদি ইন্টেলেক্ট কোন উপাদান খুঁইজা পাওয়া যায়); তারপরও মোটামুটি হিন্দি সিনেমার মূল ট্রাডিশন একটা নেগেটিভ ফেনোমেনা হিসাবেই পারসিভড হওয়ার ঘটনা, বাংলাদেশে। কিন্তু এইরকম বাজে পারসেপশনের পরেও, গড়ে এমন কোন মধ্যবিত্ত মধ্যবয়স্ক (গড় বয়স ৭০ ধরলে, ৩৫ বছরের) মানুষ (পুরুষ এবং মহিলা) বাংলাদেশে পাওয়া সম্ভব না, যিনি সিনেমা দেখেন এবং শ’খানেক হিন্দি সিনেমা দেখেন নাই। এইটা অনেকটা হুমায়ুন আহমেদের বই পড়ার মতো ঘটনা; এন্টারটেইনমেন্টের জন্য পড়া/দেখা, টাইম-পাস; কিন্তু ইন্টেলেকচুয়াল কোন ভ্যালু আসলে নাই!

অথচ এই টাইম পাস এর ভিতর দিয়া যে ভ্যালুস সে সার্ভ করে; সেইটা পাবলিক এসথেটিকসরে গ্রসলি নিয়ন্ত্রণ করে। এই কারণে, বাংলাদেশে হিন্দি সিনেমারে ইগনোর করাটা কোন কাজের জিনিস বইলা মনে হয় না। কারণ এইটার একটা কনসিন্ডারেবল লেভেলে ইনফ্লুয়েন্স আছে আমাদের চিন্তা-ভাবনা এবং জীবন-যাপনে।

এইটা যে আছে সেইটা নিয়া কোন কথা বাড়াইয়া সম্ভবত কোন লাভ নাই। বরং কেন এবং কিভাবে আছে সেইটা নিয়া কথা বলা যাইতে পারে।

এর্পাট ফ্রম বড় পুঁজি এবং টেকনিক্যাল সুপিয়রিটি, হিন্দি সিনেমা ক্যান ক্রিয়েট লার্জার ইমেজ – এইটা একটা বড় দক্ষতা এবং এইটা মোটাদাগে তৈরি হয় রেদার দ্যান জীবন-ঘনিষ্ঠ হওয়ার চাইতে অবজেক্টিভ হিসাবে ইমেজের পারফেকশনের বাইছা নেয়াটার কারণে। সবক্ষেত্রে যে একজেক্টলি এইটাই ঘটে, তা না; কিন্তু এইভাবে ব্যাখ্যা করা যাইতে পারে একটা প্রবণতা হিসাবে, যা হিন্দি সিনেমারে মোটাদাগে অডিয়েন্সের কাছাকাছি নিয়া আসে। কারণ দর্শক নিজ’রে ইমেজ হিসাবে দেখতে চায় না; ইমেজরে নিজ হিসাবে পারসিভ করতে চায় আর বেশিরভাগ জনপ্রিয় হিন্দি সিনেমাই একটা স্পেস রাখে যেইখানে ব্যর্থ প্রেমিক হিসাবেও আপনি নিজেরে মহান ভাবতে পারেন, সেই কমল হাসানের ‘সাগর’ থিকা শুরু কইরা সঞ্জয় দত্তের ‘সাজন’ পর্যন্ত।

হিন্দি সিনেমার ইমেজের সর্বগ্রাসীতা আপনি টের পাইতে পারেন, ‘ওম শান্তি ওম’ সিনেমাটা দেখলে, যেইটা ইটসেলফ হিন্দি সিনেমার একটা জিস্ট’রে রিপ্রেজেন্ট করতে চায় (এই সাজেশনটা টের পাইবেন সিনেমার শুরুতে হলের ভিতরে পর্দায় যে গানটা দেখায়, সেইখানে সিক্সটিইজের থিকা শুরু কইরা রিসেন্ট সময় পর্যন্ত নায়ক-নায়িকাদের কস্টিউম এবং ষ্টাইলরে নিয়া ফানের ভিতর দিয়া; যেহেতু সে ফান করার যোগ্যতা রাখে, সে এই অ্যাক্টের ভিতর দিয়া তারে ডিফাইন করার অথরিটিও হয়া উঠে)। যেমন ধরেন, সিনেমাটাতে শাহরুখ যে দীপিকা’র প্রেমে পড়ে, তা কিন্তু না; সে দীপিকা’র যে নায়িকা-রূপ তার পূজারী, সে তার সেই ইমেজের দর্শক, দিওয়ানা (অবশ্যই শাহরুখের প্রথমদিকের সিনেমা না, বিশেষণ অর্থে, তার ক্রিয়া)। একইভাবে সেকেন্ড হাফে দীপিকা কিন্তু শাহরুখের নায়ক-ইমেজের গ্রাহক,, স্ক্রীনে তার হিরোটিক (এই অর্থে ফানি) কান্ড-কারখানা দেইখা চুম্মা খাইতে চায়। শেষ পর্যন্ত লাইফ (হিন্দি সিনেমা) এইটাই, সবকিছু সবশেষে ঠিকঠাক, ফিল্ম-ফেয়ার অ্যাওর্য়াডে শাহরুখ খানের প্রেতাত্মা শাহরুখ খানরে দিয়া যা বলাইয়া নেয়। এই সিম্বলটাও কিন্তু খারাপ না, একটু ফার্সিক্যাল আর কি!

এমন না যে, শাহরুখ খান-ই বলেন খালি; আমির খান, সালমান খান’রা নাই। সালমান খানের ক্যামব্যাক’টা দেখেন – পুরুষের ম্যাচো ভাবনারে দম তার মতো আর কে দিতে পারতেছে! নম্র, ভীতু, পুতুপুতু, নাভীর নিচে একটু মেদ জমা নায়িকারা ছাড়া কোথায় আর পুরুষ-প্রতিভা (অর্থাৎ ইট ক্যান বি ট্রান্সলেটেট অ্যাজ, আপনার নারী-ভক্ত ছাড়া আপনে কিসের লেখক মিয়া!)? আর আমির খানের সোশ্যাল রেসপন্সিবিলিটি স্কিম ছাড়া ইন্ডিয়ান কর্পোরেট পুঁজি কিভাবে নিজেরে মোর হিউম্যান কইরা তু্লবে? এইসব নায়ক-ইমেজের কথা বাদ দেন। নায়িকাদের ফিজিক্যাল অ্যাপিরিয়ান্সের কথাও বাদ দেন; এক একটা ইন্ডিভিজ্যুয়াল মুভিরেই ধরেন, দেখবেন তারা কি রকমের পাওয়ারফুল ইমপ্যাক্ট তৈরি করতেছে বাংলাদেশে।

এক একটা ইন্ডভিজ্যুয়াল মুভিরেই পড়ার চেষ্টা করেন, দেখেন তারা কি নৈতিকতা এবং নন্দন সাজেস্ট করে আপনারে। সালমান খানের ‘গর্ব ‘ সিনেমাটা’র কথা আবছাভাবে মনে হইতেছে যেইখানে পুলিশ অফিসার সন্ত্রাসীদের (এই শব্দটা নিয়া ঝামেলা আছে, এর পলিটিক্সসহই পড়া লাগবে) মতো কইরা সন্ত্রাসীদের খুন করতে পারে কোন বিচার ছাড়া, কারণ এইসব আউট ল’রা যেহেতু আইন মানে না, তাদের জন্য আইন মানা’র কি দরকার? সাউন্ডস ফিমিলিয়ার উইথ আওয়ার রেব স্ট্রাডেজি? আর এত এনকাউন্টার দেখানো হইতেছে যে, ইট শ্যুড নট বি অ্যা ম্যাটার অফ ডিসকাশন।

অথবা একটু ‘ভালো’ সিনেমারে নেন- ‘দিল চাহতা হ্যায়’ অথবা ‘জিন্দেগী না মিলেগি দুবারা’। বন্ধু দিবসের ভাবনা। লাইফ ইজ অ্যান ইন্ডিভিজ্যুয়াল ফেনোমেনা শেষ পর্যন্ত। নো আদার আনস্মার্ট পলিটিক্যাল ঝামেলা! অথবা পলিটিক্যাল মুভিগুলাতে আসেন- ‘নায়ক’, ‘রং দে বাসন্তী’ অথবা ‘লাগান’। এর্পাট ফ্রম দ্য নেরেশান অফ নেশন, তারা ইন্টায়ারলি যা বলে সেইটার সামারি করলে দাঁড়ায় যে, রাষ্ট্রের একমাত্র কাজ হইলো, উন্নয়ন। ইনফ্রাস্ট্রাকচার বানানো, যাতে বিদেশী বিনিয়োগ আসতে পারে স্মুথলি; বুড়া আমলাগুলা যাতে তাড়াতাড়ি চাকরি ছাড়ে অথবা ক্রিকেট – এইটাই দেশপ্রেমের ঘটনা, এইরকমের রাজনৈতিক ফেটিসিজম তৈরি করা।

মানে, এইরকম একটা একটা বাক্য দিয়া একটা একটা সিনেমারে ডিফাইন করার বাজে টেনডেন্সির কথা বলতে চাইতেছি না আমি। কিন্তু এইরকমের জিনিসগুলা আছে, যা আমরা আমাদের (অফকোর্স মধ্যবিত্ত এবং আল্টা পুওর বাদ দিয়া বাকিরা কমবেশি) ডেইলি লাইফে এবর্জভ কইরা যাইতেছি, আর বলতেছি, এইসব আমরা দেখি না; দেখলেও মাঝে-মধ্যে! কিন্তু কোন ইন্টার-অ্যাকশন দাঁড়া করাইতে চাই না, কারণ মার্ক্সসিস্ট থিওরি’র মধ্যে এইটার মোকাবিলা জরুরি না! এইগুলা কোন সিনেমা হইলো নাকি, এইগুলা তো কমন পাবলিকের জিনিস!

কিন্তু যা কিছু পাবলিক খায়, সেইটারে শুধুমাত্র পাবলিকের বাজে রুচি বইলা ইগনোর করলে, পাবলিকের রুচি’রে বা টেনডেন্সিরে কেমনে বুঝা সম্ভব?

[এই লেখা ‘লাল জীপের ডায়েরি’ নামে একটা ওয়েবসাইটে ছাপানোর পরে কয়েকজন কমেন্ট করছিলেন, অই কমেন্টগুলার জবাবে কিছু জিনিস বলা হইছিল, সেইগুলা এইখানে রাখা হইলো।]

কমেন্টস:

লেখাটার উদ্দেশ্য বিষয়টারে হাইলাইট করা পর্যন্তই সীমাবদ্ধ রাখতে চাইছি আমি, এইটা যে অনেকেই নিতে পারেন নাই এইটা পজিটিভ একটা ঘটনাই। কারণ আপনি যদি মনে কইরা থাকেন যে বিষয়টা গুরুত্বপূর্ণ, তাইলে ‘আর্থ-সামাজিক প্রেক্ষাপটে’ আপনিও ‘বিচার’ করতে পারবেন; আপনি আপনার এনালাইসিসটারে হাজির করতে চাইবেন যা এইখানে বলা হয় নাই; কথা-বার্তা শুরু হওয়া সম্ভব।

‘আমরা জাস্ট প্লেইন কনজুমার’ না এবং ‘প্রডাক্ট থেকে ইউটিলিটি’ নেয়ার ভিতর দিয়াই আমরা আমাদের এথিকস এবং এসথেটিকস’রে ডিফাইন করতে থাকি – এইটাই আমার লেখার মূল প্রস্তাব।

‘গর্ব’ থিকা ‘র্যাব’ শিখছে – এইটা আমার প্রস্তাব না; সিনেমার ইমেজের যে ইনফ্লুয়েন্স সেইটা ‘মিথ্যা’ না – এইটা বলতে চাওয়া। যেমন, ‘৮০ এ ‘আশিকি’ সিনেমার পরে সেলুনে ‘রাহুল কাট’ এর ধুম পড়ছিলো; কেয়ামত সে কেয়ামত তক এর পরে ‘পলাইয়া বিয়া’ করার; কিন্তু এমন না যে এর আগে ও পরে কেউ ব্যাকব্রাশ করতো না এবং পালাইতো না, কিন্তু ইট হ্যাজ গট দ্য এনক্যারেজমেন্ট। আর এইটা যদি কেউ খেয়াল করতে না চান, তাইলে তো বলার কিছু নাই।

ব্যক্তি আমির খান এবং তার এক্টিভিটি নিয়াও আমার কোন অবজারভেশন নাই, বরং তার সিনেমা কি কি ধরণের নৈতিকতার সাজেশন দেয়, সেইটারে ইন্ডিকেট করার চেষ্টা আছে। রং দে বাসন্তী’র জাতীয়তাবাদ – রাষ্ট্রীয় ‘উন্নয়ন’ এর যে ধারণারে সাজেস্ট করে সেইটা ‘আমরা’ বাংলাদেশে নিতে পারছি এবং এইরকম আরো কিছু। তবে স্পেসিফিক আলোচনা তখনই সম্ভব যখন ইস্যুটারে আপনি মাইনা নিতে রাজি হইবেন।

২.
মুন্সি প্রেমচাঁদের নাম বাদ গেছে, এইটা বলা যাইতো; যেহেতু মান্টো’র নাম আছে। তারপরও, উনাদের ‘প্রতিষ্ঠা’ আমাদের পারসেপশনে বেশ কম-ই, রবীন্দ্রনাথের নোবেলের তুলনায়। এইটা মার্জিনাল একটা জিনিস হইলেও গুরুত্বপূর্ণ যে কিভাবে ‘ইন্টেলেকচুয়াল সুপিয়রিটি’র ধারণাটা সমাজে এস্টাবলিশ হইতেছে। ব্যাপারটা এই রকম না যে, কারো ইন্টেলেক্ট আছে বা নাই; কিন্তু ধরেন, মান্টো বা প্রেমচাঁদ যদি নোবেল প্রাইজ পাইতেন, আমরা কি উনাদের সাহিত্যরে একইভাবে দেখতে পারতাম? মানে, এইটা নিয়া আরো কথা-বার্তা সম্ভব এবং জরুরিও।

এখন আমার বক্তব্যও এইটা না যে, হিন্দি সিনেমা বাংলাদেশের সমাজরে চেইঞ্জ কইরা দিতেছে এবং এই বিষয় নিয়া কথা-বার্তা বলা শুরু না করলে তা আরো বেশি কইরা সেইটা হইতে থাকবো। একইরকম ভাবে, সমাজে সিনেমার কোন ইমপ্যাক্টই নাই, এইটা বলাটাও কিছুই মিন করে না।

আমার উদ্দেশ্য সেই কনজামশনের জায়গাটারে হাইলাইট করা, শৈল্পিক গুরুত্ব/অ-গুরুত্ব পুরাটাই ভিন্ন একটা ব্যাপার। এইটুকু জায়গা যেইখানে স্পষ্ট করা যায় নাই সেইখানে বিষয়টা নিয়া দ্বিতীয় কিস্তি লেখা, এই প্রতিক্রিয়াগুলার কোন ‘সমাধান’ দিতে পারবে না। কারণ সমস্যাটা ‘আন্ডারস্ট্যান্ডিং’ এর, ‘মত-ভিন্নতার’ই শুধু না। হিন্দি-সিনেমা নিয়া কথা-বলা এখনো ইন্টেলেকচুয়াল এরিনায় ট্যাবু একটা ব্যাপারই।

৪.
কিন্তু আমার ধারণা (যেইটা এই লেখার ভিতরেও একভাবে এমবেডেড আছে যে), ‘ভারতের আরোপিত অতি-জাতীয়তাবাদ তাদের চলচ্চিত্রকে প্রভাবিত করছে’ না, বরং হিন্দি সিনেমাই ‘ভারতীয় আরোপিত অতি-জাতীয়তাবাদ’ তৈরি করতেছে। এইভাবে দেখতে পারলেই বিষয়টার রিলিভেন্সগুলি আরো স্পষ্টভাবে দেখা সম্ভব আসলে।

অগাস্ট ২৯, ২০১৩

কারনান

কারনান, ২০২১। রাইটার ও ডিরেক্টর – মারি সেলভারাজ।

Karnan (2021) Hindi Dubbed Movie WEB - DL 480p 720p For Download

Karnan না দেইখা তো আর থাকা গেল না!

ভাল্লাগছে সিনেমাটা। এখন আমার যা হয়, সিনেমার টেকনিক্যালিটির চাইতে কাহিনির সোশ্যাল রিলিভেন্সের দিকে নজর বেশি যায়। তো, তিনটা ঘটনার কথা বলি। (স্পয়লার থাকবে একটু।)

এক নাম্বার ঘটনা হইলো, মিলিটারিতে ভর্তি-পরীক্ষা দিয়া বাসে যখন ফিরতে নেয় নায়ক-নায়িকা, তখন বাস-কন্টাক্টার যে অদের গ্রামের নামে যে গ্রাম আছে, সেইটাই মানতে চায় না। কয়, আরে এই নামে কোন গ্রাম আছে নাকি! এই-সেই। তো, দেখেন, ব্যাপার’টা “ক্যান সাব-অল্টার্ন স্পিক?” না, বরং আপনি-আমি তো নাই আসলে। আমরা যত কথাই বলি, জীবন দিয়া দিলেও কিছু যায় আসে না। ইনসিগনিফেকেন্সের লেভেলটা এইরকমের।

সেকেন্ড ঘটনা হইলো, কাবাডি খেলাতে রেফারি যে দুই নাম্বারিটা করে, তখন নায়ক যে খেইপা যায়; তখন নায়করে দোষ দেয় সবাই। যে, সে এইটা মাইনা নেয় না কেন! মানে, বাটপার বাটপারি করবে, আর সেইটা আপনে বলতেও পারবেন না। বলতে গেলে, দোষ আপনার। তো, পরিচিত লাগতেছে ব্যাপার’টা, কিছুটা? 😛

থার্ড হইলো, পুলিশ যে কয়, ঠিকাছে, বাস-মালিক মামলা তুলে নিছে, কিন্তু থানা’তে গিয়া একটা স্টেটম্যান্ট দেয়া লাগবো। অইটা হইতেছে ট্রিক’টা। এইটা মনে রাখবেন, শয়তানের লগে কোন নেগোশিয়েশন করা তো দূর কি বাত, শয়তান থিকা সবসময় দশ হাত দূরে থাকবেন। চাল দিয়া, ট্রিকস কইরা, ষড়যন্ত্র কইরা শয়তানের মোকাবেলা হয় না। জিতেন আর হারেন শয়তানের লগে সবসময় ফাইটই করতে হয়। এইটা ছাড়া অন্য কোন রাস্তা নাই।

তো, অবভিয়াসলি এইগুলা এই সিনেমার ‘শিক্ষা’ না 🙂 এর বাইরেও আরো অনেক কাহিনি আছে।

২.
দুইটা মুশকিলের কথাও বলি। নায়ক দিয়া আসলে হবে না! 🙁 আর ট্রাডিশনাল ইমেজগুলা কানেক্ট করতে হেল্প করে, কিন্তু অইটা আবার এস্থেটিক্যাল সাবমিশনের লাগেজগুলারেও ক্যারি করে। তবে অই জিনিসগুলা যে ডমিনেন্টিং হয়া উঠতে পারে নাই, এইটা ভালো ঘটনাই।

৩.
আরেকটা জিনিস কি খেয়াল করছেন এই সিনেমা, সালমান খান আর অজয় দেবগনের পুলিশি-মাস্তানির ন্যারেটিভ’টারে যে বাতিল কইরা দেয়? 🙂

এই নর্থ-ইন্ডিয়ান ইন্ডিয়া রাষ্ট্ররে সাউথ-ইন্ডিয়ান’রা কখনোই কেয়ার করে নাই। ১৯৪৭’র পরে দিল্লী’র লোকজন যখন হিন্দিরে ইন্ডিয়ার রাষ্ট্রভাষা করতে নিছিল তামিলনাডু আর মাদরাজে ফার্স্টেই মানে নাই।

এই না-মানা’র জায়গাটা ধইরা না রাখলে হবে না বস!

মে ২৯, ২০২১

মিডিয়ার স্টোরিই হইতেছে ঘটনা

নাইট ক্রাউলার, ২০১৪। রাইটার ও ডিরেক্টর – ড্যান গিলরয়।

What is your review of Nightcrawler (2014 movie)? - Quora

মিডিয়ায় ‘শিশুহত্যা’ নিয়া যাঁরা চিন্তিত আছেন, তাঁরা এই মুভি’টা দেখতে পারেন। নিউজ ইন্ডাস্ট্রি কেমনে ফাংশন করে সেইটার একটা স্টোরি আছে: প্রফিট > টিআরপি > নিউজ প্রডিউসারের চাকরি > রিপোর্টারের শিকার কাহিনি > ঘটনা। উল্টাভাবে ঘটনা খুব কমই ঘটে। মানে, ঘটনা তো মিডিয়াতেই ঘটে।

বেশ আগে একবার মনে হইতেছিল, ধরেন বাংলাদেশ পুরুষ ক্রিকেট টিম ইন্ডিয়া পুরুষ ক্রিকেট টিমের সাথে জিতলো। তারপরে আপনার জাতীয়তাবাদী মাইন্ড থাকলেই হয় না, সেইটা যে আছে তারে বলা লাগে, বাংলাদেশ জিতছে! আটার করা লাগে। ইভেন মোর একসাইটেটমেন্ট ক্রিয়েট হয়, পরের দিন নিউজপেপারে বা নিউজপোর্টালগুলিতে নিউজটা পড়তে থাকলে। এইরকম বারবার বলার ভিতর দিয়া ঘটনাটা ক্রিয়েট হয় আসলে। যা ঘটতেছে সেইটা যতোটা না সত্যি, যা বলতেছি সেইটা তার চাইতে বেশি সত্যি! এমনকি না কইলে মনে হইতে পারে যেন ঘটনাটা ঘটেই নাই। বিশ্বজিৎ মার্ডারের ঘটনা নিয়াও কইছিলাম, কিভাবে ইনটেন্স হইতে পারে ব্যাপারটা।

খুন যে হয় না – তা তো না। হয়। বা ঘটনাগুলি যে ঘটে না – তাও তো না। কিন্তু ঘটার পরেও অনেক সময় কোন ঘটনা ঘটনা হইতে পারে না। আবার ঘটতে থাকা না-ঘটনাগুলিই একটা সময়ে গিয়া ঘটনা হইয়া উঠে। একটা ঘটনা কেমনে ঘটনা হইয়া উঠে বা উঠে না – সেইটার লাইনটা বুঝতে পারা’টা দরকারি আসলে।

সিনেমার এই কাহিনিটা ফ্যাক্ট তো না, স্টোরি-ই; কিন্তু স্টোরিগুলির রিয়ালিটির ভিতরেই থাকতে থাকি আমরা। এমনকি আমরা নিজেরা নিজেদেরকে যা বলি সেইটাও ‘স্টোরি’-ই। তো, এই জায়গাটা আরো ব্যাপক। গল্প-কাহিনি’র জায়গাগুলি।

এর বাইরেও, এখনকার নিউজগুলিরেও তো ‘স্টোরি’-ই কয়, নিউজরুমে। মানে, টার্ম হইলেও, যা আমরা কইতে থাকি সেইটা একভাবে ইম্পোজ হইতে থাকে। ইন ফ্যাক্ট, ওইটাতেই কনভার্ট হইতে থাকে। নিউজগুলাও একটা স্টোরি বলারই ট্রাই করে, যদিও সাহিত্যের বাতিল ভাষাই ইউজ করে। এইজন্য ইনফিরিয়র স্টোরি হয় ওইগুলা।

এমনিতে স্টোরি’র জায়গাটাতে ফোকাস দিলে মেবি অন্য রকমও হইতে পারতো। কিন্তু আল্টিমেট অবজেক্টিভটা ঠিক স্টোরি’টা বলা না, বরং স্টোরিগুলারে খুঁইজা বাইর করা। তো, মুশকিল হইলো যে, এইরকম খুঁইজা খুঁইজা বাইর করতে থাকলে একটা টাইমে গিয়া খোঁজাখুঁজি বন্ধ কইরা দিলে মনে হইতে পারে যেন ঘটনাগুলি ঘটতেছে না আর।

অগাস্ট ০৬, ২০১৫

সংজ্ঞা দিয়া কোন জিনিস বুঝতে পারবেন না আপনি ঠিকঠাক, বরং উদাহারণ দিয়া বুঝতে পারবেন

স্যুটস, টিভি সিরিজ, ২০১১ – ২০১৯। ক্রিয়েটর – অ্যারন ক্রস।

Suits - Rotten Tomatoes

Suits পছন্দ হওয়ার একটা কারণ হইতেছে ডায়ালগে একটু পরে পরে মুভি-কোটস ইউজ করে অরা। সিনেমাগুলা না দেখলে বা না জানা থাকলে সবসময় ‘ফান’টা টের পাওয়া যাবে না; কিন্তু খেয়াল করা যায়, মুভি বা আর্ট দিয়া যে লাইফ’রে ভালোভাবে বুঝি বা রিলেট করতে পারি আমরা।

যেমন সিজন ৭-এ অ্যালেক্স নামে হার্ভি’র এক ফ্রেন্ড জয়েন করে অর ল’ফার্মে; জয়েন করার পরেই বুঝে লুইসের কোন ঝামেলা আছে হার্ভির লগে। তো, একদিন বিয়ার বা কফি খাইতে খাইতে হার্ভি’রে জিগায়, ঘটনা’টা কি? হার্ভি হাসে, কয়, ব্যাপার’টা কমপ্লিকেটেড; লুইস লোক খারাপ না, হার্ভি’রে হেইট করে, আবার চায় হার্ভি তারে পছন্দ করুক, একটু উইয়ার্ড আছে সে কিন্তু ভালো ফ্রেন্ডই… মানে, বইলা বুঝাইতে পারে না; পরে কয়, আরে, অই সিনেমার অই কারেক্টার’টার মতো আর কি! তখন অ্যালেক্স সাথে সাথে বুঝতে পারে; আরে, আগে বলবা তো! এতো কথা বলার কি আছে, এইটা কইলেই বুঝা যাইতো! এখন তো ক্লিয়ার পুরা!…

মানে, সংজ্ঞা দিয়া কোন জিনিস বুঝতে পারবেন না আপনি ঠিকঠাক, বরং উদাহারণ দিয়া বুঝতে পারবেন। 🙂 আর্ট বা সিনেমা হইতেছে উদাহারণ’টা, লাইফের। বেটার ওয়ে, লাইফ’রে বুঝার, এক্সপ্লেইন করারও।

তবে, সিনেমা দিয়া লাইফ’রে বুঝতে গেলে ঝামেলাও আছে; উদাহারণ’টা যদি ঠিকঠাক না হয়, না মিলে, বা আন্ডারস্ট্যান্ডিং যদি সেইম লেভেলে না থাকে। যেমন, লুইস’রে একবার তার সেক্রেটারি কয়, তোমার তো কয়দিন আগে ব্রেকাপ হইছে, একটা ভ্যাকেশন নাও, ঘুইরা আসো; ভাল্লাগবো। লুইস মুখ গোমড়া কয়, না, যামু না! কেন? তখন সে কয়; আগেরবার সে যখন ঘুরতে যাইতে চাইছিল, তখন তার ট্রাভেল এজেন্সি তারে বাংলাদেশ পাঠায়া দিছিলো; স্লামডগ মিলিওনিয়ার দেইখা সে ভাবছিলো বাংলাদেশে খালি ফ্রিদা পিন্টো ঘুরতেছে; কিন্তু আসলে তো তা না! সেক্রেটারি কয়, ফ্রিদা পিন্টো তো লন্ডনে থাকে! লুইসের তো আরো মেজাজ খারাপ হয়; কোন জায়গায় যে সে ধরা খাইছিল, সেইটা তো আরো বুঝাইতে পারে না! 🙁

তো, ইটস কমপ্লিটকেটেড! 😛

সেপ্টেম্বর ২১, ২০২০

রূপবান, সুজাতা ও ভাষা-আন্দোলন

রূপবান, ১৯৬৫। রাইটার (লোক-কাহিনি থিকা নেয়া) ও ডিরেক্টর – সালাহউদ্দিন।

Rupban (1965) - IMDb

 

আমরা যে বাংলাদেশের হিস্ট্রি তেমন জানি না, এর কারণ হইতেছে, বাংলাদেশের নানান বিষয়ে হিস্ট্রির লগে যারা রিলেটেড তাদের কথা আমরা শুনি না, বা তাদের লগে কোন ধরণের যোগাযোগ নাই আমাদের। মানে, অইগুলা তো সাহিত্য হিসাবে ভালো না! – এইরকম একটা ঘটনা।

এইটা নতুন কইরা মনে হইলো আবার, নায়িকা সুজাতা’র মেমোয়ার্স’টা পড়তে গিয়া। বাংলাদেশের সিনেমা নিয়া জানতে গেলে তো আপনারে অই সময়ের ডিরেক্টর, নায়ক-নায়িকা, মিউজিশিয়ান, টেকনিশিয়ানদের কথাই তো খেয়াল করতে হবে, কিন্তু আপনার কেবলা যদি হয় কলকাতায় ছাপা-হওয়া ইন্ডিয়ান-বাংলার বই, সেইখানে তো বাংলাদেশের ঘটনা পাইবেন না। এই কারণে মনে হবে, আরে, এইগুলা ঘটছিল নাকি দুনিয়ায়! যেমন ধরেন, ১৯৫২ সালের ভাষা-আন্দোলন নিয়া জীবনানন্দ দাশ কি কইছিলেন? – সেইটা খুঁজতে গেলে তো দেখবেন, এইরকম কোন ঘটনা হিস্ট্রিতেই নাই! এইটা জীবনানন্দ দাশ বা কলকাতার দোষ না। কারণ, এই ঘটনা তো ইন্ডিয়ান-বাংলাতে ঘটে নাই, আর উনি তো ইন্ডিয়ান-বাংলাতে ছিলেন।
এই রিয়ালিটি আমাদের নাই বইলা, আমাদের দেখাদেখির মধ্যে বাংলাদেশের হিস্ট্রি জায়গাগুলা দেখবেন নাই বা খুব ‘প্রান্তিক’ ঘটনা।

এইটা খুব কনফিডেন্টলি বলতে পারতেছি কারণ বাংলাদেশি সিনেমা নিয়া লেখা ৮০/৯০টা বই আমি ঘাঁটছি, ব্রাউজ করছি। রূপবান সিনেমা নিয়া দুই-চাইর লাইনের বেশি কোন কথা নাই। ইভেন, যেইটা ক্ল্যাসিক বই, অনুপম হায়াৎ’র, সেইখানেও। যারা এই জিনিস নিয়া লেখছেন, উনারা কি রূপবান সিনেমার সিগনিফিকেন্সটা আসলেই খেয়াল নাই? না, বরং এইটা খেয়াল করাটারে খুবই ‘আন-ইউজ্যুয়াল’ ভাবছিলেন, এবং এখনো অনেকেই সেইটা ভাবেন। আর এই ভাবনার গোড়া আসলে জিওগ্রাফিক্যালি সেন্টার পয়েন্ট হিসাবে বাংলাদেশরে না নিতে পারার ঘটনা। যদি বাংলাদেশরে আপনি সেন্টার করেন, দেখবেন রূপবানের চাইতে বড় কোন ঘটনা বাংলাদেশের সিনেমাতে ঘটে নাই।

এইটা অনুমান হিসাবে আমি আমার বইয়ে দুই বছর আগে লেখছি।* (কমেন্টে লিংক দিতেছি।) ডেটা দেখলেই জিনিসটা খেয়াল করা যায়। বাংলাদেশে সিনেমা বানানো আসলে একভাবে শুরুই হয় রূপবানের পরে। এর আগে একটা হেসিটেশন ছিল দুইটা জায়গা থিকা।

এক হইলো, বাংলা বলতে যেই কলোনিয়াল আইডেন্টিটিতে আমরা সাবস্ক্রাইব করি, অইটা তো ইন্ডিয়ান-বাংলা, আমাদের কি সেইটা করার দরকার আছে? চাইলেই কি সেইটা করতে পারি নাকি আমরা? অই অথরিটি তো নাই আমাদের! ১৯৬৫/৬৬ সালেও বাংলা একাডেমি ‘আঞ্চলিক ভাষার অভিধান’ ছাপাইতেছে, বাংলা-ভাষার কোন ডিকশনারি ছাপানোর কথা ভাবতেও পারে নাই। মানে, বাংলা মানে তো ইন্ডিয়ান-বাংলা! উইকিপিডিয়া ও গুগুলের সেক্যুলার-বলদগুলাও এইটাতে আটকায়া আছে, নানান ইনফরমেশনেই টের পাইবেন।

সেকেন্ড জিনিস হইলো, উর্দু সিনেমা বানাইলে তো লাভ বেশি। পশ্চিম পাকিস্তানেও বেচা যায়। জহির রায়হান নিয়া এই বাহাদুরি দেখবেন আছে, উনি পাকিস্তানের ফার্স্ট রঙিন সিনেমা বানাইছিলেন ‘সঙ্গম’, উর্দু সিনেমা ছিল অইটা। আর্ট-ফিল্ম বানাইতে গিয়া কর্মাশিয়ালি ধরা খাওয়ার পরে। কিন্তু রূপবানের পরেই উনি টার্ন ব্যাক করেন। চাইরটা ‘ফোক-সিনেমা’তে ইনভেস্ট কইরা অই প্রফিট দিয়া বাংলা-সিনেমা বানাইতে শুরু করেন। মানে, বাংলাদেশের মার্কেটই তো হিউজ! বাংলাদেশের মানুশ-জন যদি সিনেমা দেখে তাইলেই হয়। তখন বাংলাদেশের মানুশের জন্য সিনেমা বানাইতে শুরু করেন বাংলাদেশের ফিল্ম-ডিরেক্টর’রা।

বাংলাদেশের মানুশের জন্য যে সিনেমা বানাইতে হবে বা বানানো যে যায় – এইটা হইতেছে রূপবান সিনেমার কন্ট্রিবিউশন। এইভাবে রূপবান সিনেমার ভিতর দিয়া বাংলাদেশি আইডেন্টিটি’টা ফার্স্ট পলিটিক্যালি ভিজ্যুয়ালাইজ হইতে পারছে।

বাংলাদেশি নাটক, সিনেমা এখনো বাংলাদেশের মানুশ-জনরে তার অডিয়েন্সরে নিতে পারে না। আর রূপবান সিনেমার প্রতি ডিনায়াল’টা এখনো এগজিস্ট করে এই জায়গাটা থিকাই মোস্টলি।

২.
নতুন কইরা যেই কথাটা এর লগে অ্যাড করতে চাইতেছি, সেইটা হইতেছে ভাষা-আন্দোলনের লগে এর কানেকশনটা। রূপবান সিনেমাটা বানাইছেন ডিরেক্টর সালাহউদ্দিন। উনি একজন ইম্পর্টেন্ট ফিগার। উনারে নিয়া আলাপ নাই তেমন। কিন্তু এই কাহিনি নিয়া যে সিনেমা বানানো যায়, এই আইডিয়া দিছিলেন সফদার আলী ভূঁইয়া, উনি ফিল্ম টেকনিশিয়ান। এর আগে অবশ্য সিনেমাটা বানানোর কথা ছিল আবু তাহের মোহাম্মদ ফজলুল হক সাহেবের। উনি হইতেছেন, সাহিত্যিক রাবেয়া খাতুনের জামাই, চ্যানেল আইয়ের ফরিদুর রেজা সাগর আর কেকা ফেরদৌসী’র বাপ। ১৯৫০ সালে বগুড়া থিকা উনি ‘সিনেমা’ নামে একটা পত্রিকা ছাপাইতেন, পরে ঢাকা থিকা। জহির রায়হান উনার পত্রিকাতেই লেখালেখি করতেন। কিন্তু উনি নিজে খুব একটা সিনেমা বানাইতে পারেন নাই। দুই-একটা ট্রাই করছিলেন, ফেইলওরই হইছিলেন।…

তো, সালাহউদ্দিন সাহেব জিনিসটারে একটা কালাচারাল জায়গা থিকা দেখছিলেন। এইটা সফদার আলী ভূঁইয়া বা ফজলুল হক সাহেবের এতোটা ছিল বইলা মনেহয় না। সুজাতা হইতেছেন এই ঘটনার সাক্ষী। উনার মেমোয়ার্সে এইটা পাইবেন। আর সত্যি সত্যি এইটা ঘটছিল। রূপবান ছিল ভাষা-আন্দোলনের, বাংলা-ভাষার একটা রেজারেকশন এবং বাংলাদেশি কালচারের শুরু। এইটা এখনো যদি রিকগনাইজ না করতে পারি আমরা, সেইটা আমাদের না-দেখতে-চাওয়ারই ঘটনা; ঘটনা’টার না-ঘটা না।

সবাই মোটামুটি জানি আমরা ব্যাপার’টা। যে, এইটা একটা হিউজ সাকসেস ছিল, কিন্তু এর সিগনিফিকেন্স বা সোশ্যাল-ইমপ্যাক্ট কি ছিল, অই জিনিসগুলা বলাবলি বা রিকগনিশনের জায়গাটাতে নাই। কেন নাই? এইটা ভাবতে পারলে বাংলাদেশের কালচারাল বাটপারিগুলা নিয়া অনেক জিনিস আমাদের সামনে ক্লিয়ার হইতে পারবে বইলা আমি মনে করি।

৩.
সেকেন্ড জিনিস, যেইটা আমি সুজাতা’র কথা থিকা পাইলাম, খুবই ইম্পর্টেন্ট। আগে অইভাবে খেয়াল করা হয় নাই। রূপবান সিনেমার আগে হলে গিয়া সিনেমা-দেখার অধিকার আসলে মেয়েদের ছিল না অইরকম। মানে, সিনেমা-দেখা ব্যাপারটাই তো একটা লাক্সারি, আপার-ক্লাস ঘটনা হিসাবে থাকার কথা। সেইখানে আপার-ক্লাস উইমেনদের হয়তো এক ধরণের একসেস থাকার কথা, কিন্তু গেরস্থ-বাড়ির মেয়ে-বউদের সিনেমা দেখা জিনিসটা ‘নষ্ট’ হয়া যাওয়ার শুরু হিসাবেই থাকার কথা একভাবে।

তো, রূপবান অই একসেস’টা ক্রিয়েট করছিল। যে, মেয়ে-বউদেরও এই সিনেমা দেখতে দেয়া দরকার! এইটা তো উনাদেরই সিনেমা! কারণ হইতেছে, রূপবানের কাহিনি’টা। একজন মেয়ের জীবন কি রকম কষ্টের, সাফাংরিসের, সেইটা একটা ঘটনা। রূপবান সিনেমা দেখার ভিতর দিয়া বাংলাদেশের মেয়েরা সিনেমাহলে ঢোকার পারমিশন পাইছিল। এইটাও মনে রাখা দরকার।

কিন্তু কাহিনিতে কি-ফ্যাক্টর হইতেছে ‘সতী’ থাকার ব্যাপারটা আসলে। এইটা হইতেছে টুইস্ট’টা। আপনে গুড-ওয়াইফ চাইলে তারে তো সিনেমা দেখতে দিতে হবে! নারীর স্ট্রাগল থিকা ছলা-কলা বা স্টাইল তো তারে শিখতে দিতে হবে! তাই না? মীরা বাঈ (১৪৯৮ – ১৫৪৭) যখন গান-কবিতা লেখতে শুরু করেন, তখনো এইরকমের একটা টুইস্ট উনারে করা লাগছিল। যে, উনি তো কালা’র লগে পীরিতে আছেন, দুনিয়ার বেটা-মানুশ দিয়া উনার কি হবে! এইভাবে উনি বেটা-মানুশের সমাজ উতরাইতে পারছিলেন। একটা হায়ার-গ্রাউন্ড ক্লেইম করার ভিতর দিয়া। এই কারণে ফেমিনিজম ভালো, যখন এইটা কোন হায়ার-গ্রাউন্ডে গিয়া অপারেট করতে পারে।…

যাত্রা’তে অনেক ফিমেইল-লিড স্টোরি যে পাওয়া যায়, এর একটা কারণ মেবি এইটাও যে, অডিয়েন্স হিসাবে উনারা ইনক্লুড না হইলে তো জিনিসটা ছড়াইতে পারবে না, সাকসেসফুল হইতে পারবে না। তো, এইটা কোন ‘মুক্তবুদ্ধি’র ঘটনা না, প্রাকটিক্যাল জায়গা থিকাই দরকারি জিনিস।…

সুজাতারা যখন সিনেমার শুটিং থিকা ফিরতেছিলেন, তখন সিলেট স্টেশনে কিছু হিন্দু-মহিলা, বউরা, তারে বসায়া পূজা দিছিল। উনারা বলতেছিলেন, রূপবান তো হইতেছে একজন দেবী, সতী-নারীর! আমাদের সমাজে পূজা দেয়া বা মাথায় তুইলা নাচার ব্যাপারটা এইটা থিকা টের পাওয়া যাবে। ইমোশনটা একস্ট্রিম এইখানে।…

তো, বাংলা-ভাষা আন্দোলন ও নারী-অধিকার ইস্যুগুলার লগে রূপবানরে মিলায়া দেখলেও এর সিগনিফিকেন্সরে নতুন কইরা দেখা পসিবল। কিন্তু বাংলা-ভাষা যেহেতু কলোনিয়াল চক্কর থিকা বাইর হইতে পারে নাই** বাংলাদেশি সিনেমার জায়গাটারে দেখতে পাবে – এই আশা তো কমই।

৪.
আরেকটা ছোট জিনিস আছে। কেউ যদি রূপবান (১৯৬৫ সালেরটার কথা বলতেছি, এইটা বাদেও আরো ৫/৭টা রূপবান আছে) সিনেমা’টা দেখেন, একটা ‘বাড়তি’ সিন আছে। ৫৪ মিনিটের দিকে। রূপবান ঘাটে আসছে, জঙ্গলের দিকে যাবে; কিন্তু নৌকার মাঝি তো তাঁরে পার করতে চায় না, তাঁর কাছে পয়সা নাই বইলা। তখন রূপবান কয়, তাঁর কাছে পয়সা নাই, কিন্তু বখশিস দিতে পারবে। তো, নৌকা থিকা নামার পরে তাঁর একটা গয়না দেয়। অইটা নিয়া তো মাঝি খেইপা যায়, এই পিতল দিয়া আমি কি করবো! তখন এক ঠগ লোক আসে, কয়, ঠিকাছে জিনিসটা আমারে দিয়া দেও, আমি তোমারে পয়সা দিতেছি। পয়সা’টা দিয়া, গয়না’টা নিয়া অই ঠগ লোক দৌড় মারে।

রূপবান মাঝিরে কয়, কি ভুলটা তুমি করলা! কয়টা পয়সার জন্য এইরকম দামি গয়না হাতছাড়া করলা! তখন মাঝি মাথায় হাত দেয়।

তো, এইটা বাঙালি-কারেক্টারের ডিপিকশন একটা। যে, কোথাও না কোথাও একটা ঠগ উৎ পাইতা আছে আপনার জন্য, যখন আপনি নিজের ভালো’টা না বুঝেন।

৫.
ও, এই ব্যাপারটা ইগনোর কথা ঠিক হবে না এখন, আজিম-সুজাতা মনেহয় বিএনপি করতেন। উনার ছেলের গাড়ি ছিনতাই হয়া যাওয়ার পরে সাদেক হোসেন খোকা’রে দিয়া পুলিশে রিকোয়েস্ট করাইছিলেন। এখন শেখ হাসিনার লগে ছবি দিয়া বই ছাপাইলে, অই ‘পাপ’ মনেহয় ধামাচাপা দিতে পারবেন না পুরাপুরি!

*বইটা আমি লেখছি জুলাই, ২০২০ – ফেব্রুয়ারি ২০২১ সময়ের মধ্যে। এখন ড্রাফট’টাতে কিছু জিনিস ইনক্লুড করতেছি। এই লেখাটাও এর একটা হইতে পারে।

**১৯৫২ সালের ভাষা-আন্দোলনের সময় একটা পপুলার গান ছিল “অরা আমার মুখের ভাষা কাইড়া নিতে চায়”… তো, বাংলা একাডেমির ডিকশনারিতে দেখছিলাম ‘কাইড়া’ শব্দটা ডিকশনারিতেই নাই!

/২০২২

The following two tabs change content below.
Avatar photo
কবি, গল্প-লেখক, ক্রিটিক এবং অনুবাদক। জন্ম, ঊনিশো পচাত্তরে। থাকেন ঢাকায়, বাংলাদেশে।

এডিটর, বাছবিচার।
View Posts →
কবি, গল্প-লেখক, ক্রিটিক এবং অনুবাদক। জন্ম, ঊনিশো পচাত্তরে। থাকেন ঢাকায়, বাংলাদেশে।
View Posts →
কবি। লেখক। চিন্তক। সমালোচক। নিউ মিডিয়া এক্সপ্লোরার। নৃবিজ্ঞানী। ওয়েব ডেভলপার। ছেলে।
View Posts →
মাহীন হক: কলেজপড়ুয়া, মিরপুরনিবাসী, অনুবাদক, লেখক। ভালোলাগে: মিউজিক, হিউমর, আর অক্ষর।
View Posts →
দর্শন নিয়ে প্রাতিষ্ঠানিক পড়াশোনা, চাকরি সংবাদপত্রের ডেস্কে। প্রকাশিত বই ‘উকিল মুন্সীর চিহ্ন ধরে’ ও ‘এই সব গল্প থাকবে না’। বাংলাদেশি সিনেমার তথ্যভাণ্ডার ‘বাংলা মুভি ডেটাবেজ- বিএমডিবি’র সহপ্রতিষ্ঠাতা ও সমন্বয়ক। ভালো লাগে ভ্রমণ, বই, সিনেমা ও চুপচাপ থাকতে। ব্যক্তিগত ব্লগ ‘ইচ্ছেশূন্য মানুষ’। https://wahedsujan.com/
View Posts →
কবি। লেখক। কম্পিউটার সায়েন্সের স্টুডেন্ট। রাজনীতি এবং বিবিধ বিষয়ে আগ্রহী।
View Posts →
গল্পকার। অনুবাদক।আপাতত অর্থনীতির ছাত্র। ঢাবিতে। টিউশনি কইরা খাই।
View Posts →
জন্ম ২০ ডিসেম্বরে, শীতকালে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অপরাধবিজ্ঞান বিভাগে পড়তেছেন। রোমান্টিক ও হরর জনরার ইপাব পড়তে এবং মিম বানাইতে পছন্দ করেন। বড় মিনি, পাপোশ মিনি, ব্লুজ— এই তিন বিড়ালের মা।
View Posts →
জন্ম ১০ নভেম্বর, ১৯৯৮। চট্টগ্রামে বেড়ে ওঠা, সেখানেই পড়াশোনা। বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগে অধ্যয়নরত। লেখালেখি করেন বিভিন্ন মাধ্যমে। ফিলোসফি, পলিটিক্স, পপ-কালচারেই সাধারণত মনোযোগ দেখা যায়।
View Posts →
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগে শিক্ষকতা করেন। সংঘাত-সহিংসতা-অসাম্যময় জনসমাজে মিডিয়া, ধর্ম, আধুনিকতা ও রাষ্ট্রের বহুমুখি সক্রিয়তার মানে বুঝতে কাজ করেন। বহুমত ও বিশ্বাসের প্রতি সহনশীল গণতান্ত্রিক সমাজ নির্মাণের বাসনা থেকে বিশেষত লেখেন ও অনুবাদ করেন। বর্তমানে সেন্টার ফর স্টাডিজ ইন সোস্যাল সায়েন্সেস, ক্যালকাটায় (সিএসএসসি) পিএইচডি গবেষণা করছেন। যোগাযোগ নামের একটি পত্রিকা যৌথভাবে সম্পাদনা করেন ফাহমিদুল হকের সাথে। অনূদিত গ্রন্থ: মানবপ্রকৃতি: ন্যায়নিষ্ঠা বনাম ক্ষমতা (২০০৬), নোম চমস্কি ও এডওয়ার্ড এস হারম্যানের সম্মতি উৎপাদন: গণমাধম্যের রাজনৈতিক অর্থনীতি (২০০৮)। ফাহমিদুল হকের সাথে যৌথসম্পাদনায় প্রকাশ করেছেন মিডিয়া সমাজ সংস্কৃতি (২০১৩) গ্রন্থটি।
View Posts →
তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞানের ছাত্র, তবে কোন বিষয়েই অরুচি নাই।
View Posts →
পড়ালেখাঃ রাজনীতি বিজ্ঞানে অনার্স, মাস্টার্স। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়। বর্তমানে সংসার সামলাই।
View Posts →
মাইক্রোবায়োলজিস্ট; জন্ম ১৯৮৯ সালে, চট্টগ্রামের সীতাকুন্ডে। লেখেন কবিতা ও গল্প। থাকছেন চট্টগ্রামে।
View Posts →
জন্ম: টাঙ্গাইল, পড়াশোনা করেন, টিউশনি করেন, থাকেন চিটাগাংয়ে।
View Posts →
বিনোদিনী দাসী (১৮৬২/৩ - ১৯৪১): থিয়েটার অভিনেত্রী, রাইটার। ১৮৭৪ থেকে ১৮৮৬ এই ১২ বছর তিনি কলকাতার বিভিন্ন থিয়েটারে অভিনয় করেন। কবিতার বই – বাসনা এবং কনক ও নলিনী। আত্মজীবনী - ‘আমার কথা’ (১৯২০)।
View Posts →