গ্যাব্রিয়েলা মিস্ত্রালের কবিতা
গ্যাব্রিয়েলা মিস্ত্রাল (১৮৮৯ – ১৯৫৭) একজন স্প্যানিশ ভাষার কবি। ওনার সম্পর্কে আর কিছু না জেনেও আপনি ওনার কবিতাগুলা পড়ে আরাম পাইতে পারেন। কিন্তু জানার পরে দেখা যাবে আপনি ওনার ইমোশানের লগে আরো বেশি এটাচড হইতে পারতেছেন। প্রথমে আমার নিজেরও মনে হয় নাই যে তিনি কোন বাচ্চারে নিয়ে কবিতা লেখছেন, নরমালিই একটা প্রেমময় আকুলতা টের পাইছি, কিন্তু ঐটা এত বেশি টানলো আমারে পড়তে পড়তে দেখলাম, ওনি এ কবিতাগুলা ওনার সেই জাদুরে নিয়ে লেখছেন যে কখনো দুনিয়াতেই আসে নাই। এমনকি তিনি নিজেও ছিলেন সিঙ্গেল। তাঁর একসময়ের প্রেমিক যে তাঁরে খুব পছন্দ করতো,তার সুইসাইড করার পরেই মূলত গ্যাব্রিয়েলার কবিতায় মন দেন সিরিয়াসলি। তিনি তাঁর নিজের নামে প্রথমে লেখা শুরু করেন নাই। কারণ, ওনার ভিতরে চাকরী হারানোর ভয় কাজ করছিল। একজন নারীর সমাজে ইমোশনালী অপ্রকাশযোগ্য কথাগুলা ভিতর থেকে বের করে আনতে গিয়ে ওনি চাকরী হারানোর ভয় পান। তো, যেকোন নারীই আসলে তার লগে ইমোশনালি কানেক্টেড হতে পারবে, এমনকি পুরুষরাও।
তিনি জন্মান ১৮৮৯ সালে, চিলির এক গ্রামে, যেখানে নদীর চরে চাষ হতো আঙুরের। যেই গ্রামে তার বাবা ছিলেন একজন স্কুল মাস্টার আর তিনিও বাপের মতন স্কুলের টিচার হিসাবে যোগ দেন। এই স্কুলের বাচ্চাদের জন্য তিনি ছোট ছোট কবিতা লেখতেন পড়া বুঝানোর সুবিধার্থে। আর সে সময় ‘রুমেলা উরেথা’ নামে এক যুবকের প্রেমে পড়েন তিনি। কিন্তু তাদের বিয়ার আগেই সেই প্রেমিক সুইসাইড করেন। আর এই মর্মান্তিকতার পরেই ওনার প্রথম কবিতার সিরিজ পুরো ল্যাটিন আমেরিকায় বের হয়। তিনি ব্যক্তি পরিচয় ছাড়িয়ে বৈশ্বিক চরিত্র বনে যান। তার নাম ”Lucila Godoy Y Alcayaga’ হয়ে যায় ‘Gabriela Mistral’।
নিজের বাচ্চা না থাকা আর একজন নারী হিসাবে বাচ্চাদের নিয়ে এত দরদের কবিতা লেখার মাধ্যমে, তিনি একজন সিরিয়াস এডুকেটর হিসাবেই কাজ করতে থাকেন৷ তাঁর কাজের একনিষ্ঠতা তাঁরে সরকারের এডুকেশন সেক্টরের বড়পদে আসীন করে। তাঁর পয়লা বই ”Desolaction'(১৯২২) ‘Spanish Institute of Columbia University’University’ থেকে প্রকাশিত হয়। ওনার আরো কিছু বই ‘Ternura'(১৯২৪), ‘Lagar’ (১৯৫৪)। তিনি স্পেনিশে জাস্ট গ্যাব্রিয়েলা হিসাবেই পরিচিত হয়ে যান। তাঁর মাতৃভাষায় তিনি সবচাইতে জনপ্রিয়দের একজন হয়ে যান। USA বা ইংল্যান্ডের চাইতেও তাঁর কবিতা কন্টিনেন্টাল ইউরোপেই বেশি অনুবাদিত হয়। এমনকি সাহিত্যে নোবেল প্রাইজ পাওয়ার পরও।
তার বেশিরভাগ কবিতাই ছোট। আর অন্যান্য স্পেনিশ কবিদের তুলনায় যথেষ্ট সরল ও স্পষ্টভাষায় লেখা।
তাঁর কবিতা মারাত্মকভাবে নারীসুলভ হওয়ায় একজন নারীর জন্যেই এটা অনুবাদ করা সহজ ইমোশনালী। পুরুষের জন্যে বরং কিছুটা অস্বস্তিকরই। এই অনুবাদটা আমি করছি ‘Indiana University Press’ থেকে বের হওয়া ‘ Langston Hughs’এর ইংরেজী অনুবাদ থেকে। তিনিও বলতেছেন, এটা ওনি ভার্সিটির তদবীরে করলেও কাজটা ওনার জন্যে পুরুষ হিসাবে কিছুটা অস্বস্থিদায়ক ছিল। শুধুমাত্র কবিতাগুলা ভালো লাগাতেই এই অনুবাদ করেন ওনি।
গ্যাব্রিয়েলার বেশিরভাগ কবিতাই শিশু, মাতৃত্ব এবং ভালোবাসা নিয়ে। এক্ষেত্রে আমার মনে আসতেছিল ওরিয়ানা ফাল্লাচির ‘হাত বাড়িয়ে দাও’ বইটা আর কানে বাজতেছিল ‘নয়নমনি’ সিনেমায় ফেরদৌসি রহমানের গাওয়া ‘এত সুন্দর হেরেম বাদশা’ গানটা, আর চোখে ভাসতেছিল রওশন জামিলের দরদমাখা মুখটা। কারণ বাস্তবের অভিজ্ঞতার বাইরে মনে দাগকাটার মতন করে সাহিত্যে শিশু, মাতৃত্ব এসব কেন্দ্রিক লেখা তেমন চোখে পড়ে নাই আমার। আর এই কাজে বন্ধু লাবিব ওয়াহিদেরও ভূমিকা আছে বেশ। তিনি গ্যাব্রিয়েলা মিস্ত্রালের একটা কবিতার খসড়া করতে না বললে হয়তো আমি এ কাজে মনই দিতাম না। খসড়া করার পরে ওনিই আবিষ্কার করলেন একটা খটকা আছে, এই কবিতা ওনার তুলনায় আমার স্বরেই ঠিকাছে। আমারই অনুবাদগুলা করা উচিত। আমারে টানলো আসলে, এত মিষ্টি আর দরদী এই কবিতাগুলা। ফলে যতটুকু নিজের ভাষায় এদেরকে ধারণ করতে পারছি মূলভাব বজায়েই তরজমার চেষ্টা করছি। তারপরও ইংরেজী অনুবাদের চাইতে যদি স্পেনিশ থেকে সরাসরি তরজমা করতে পারতাম তাহলে হয়ত গ্যাব্রিয়েলাকে আরো অনেকটা পাইতাম মনে হয়।
গ্যাব্রিয়েলা মিস্ত্রাল বেশ নামডাক করার পরে সরকারীভাবে নানাদেশে ঘুরতে থাকেন। এবং অনেক গুরুত্বপূর্ণ পদে নারী হিসেবে রিপ্রেজেন্ট করেন। ১৯৩১ সালে তিনি USA তে ”Spanish History and Civilization’ এর উপর ইন্সট্রাক্টর হিসেবে যোগ দেন Middle Burry and Burnard Colleges এ। এরপরে কূটনৈতিক পদে তিনি সাউথ আফ্রিকা ও ইউরোপেও কাজ করেন। তিনি ‘United Nations Subcommittee’ এর মেম্বার হিসাবেও ছিলেন। ম্যাক্সিকোতে জাতীয় অতিথি হিসেবে থাকেন দুই বছর। ১৯৫৩ তে তিনি USA যান আবার। সেখানেই Roslyn Harber এ তিনি মৃত্যু পর্যন্ত স্থায়ী হন। আর ১৯৫৭ সালেই তিনি মারা যান। এ খবর চিলি পৌঁছালে রাষ্ট্রীয়ভাবে তিনদিনের শোক পালন করা হয়।
তো, তিনি এমন একজন কবি যিনি যতটা না কবি তার চাইতে বেশি যেন একজন মা হয়ে আছেন কবিতায়। এটাই কবিতাগুলার সার্থকতা। বাকিটা আপনারাই বলবেন কবিতাগুলা পড়ার পরে। হ্যাপি রিডিং…
– রাবিয়া সাহিন ফুল্লরা
…
ঘুমপাড়ানি গান
কিনারে আসো
~
আমার মাংস থেকে উঠে আসা ছোট্ট লোমেরা
আমার এত ভিতর থেকে গজানো—
তারা ঠান্ডারে নিতে পারতেছে না
আমার কিনারে ঘুমাও, (সোনা)!
তিতির ঘুমায় যেমন সবুজ চাদরে
আর ভয় পায় ঘাউরা কুত্তারে:
কিন্তু আমার নাকডাকার ভয় তুমি নিয়ো না
আমার কিনারে ঘুমাও!
ঘাসের ফলাগুলা যেমন কাঁপতেছে ভীত জীবনে
আমার ব্রেস্টও—দলিত কইরো না গো,
ঘুমাও আমার কিনারে!
আমি—যে সব হারাইছি
ঘুমের চিন্তায় কাঁপতেছি এত—
আমার আজাত্তুন সরি যাইয়ো না
ঘুমাও আমার কিনারে!
আমি তো একা না
~
এই রাত পাহাড় থেকে সাগর পর্যন্ত
নিঃসঙ্গতা বিছায়ে রাখছে
কিন্তু যেই আমি তোমারে আজার মধ্যে পুষি
আমি তো একা না!
এই আসমান একাকীত্বে লীন করে রাখছে
চাঁদ যেন বা সাগরে পড়ে যাবে
কিন্তু যেই আমি তোমারে আঁকড়ায়ে ধরে আছি
আমি তো একা না!
এই দুনিয়া নির্জনতা ছড়ায়ে রাখছে
আর সকলে জানে দুর্দশা
কিন্তু যেই আমি কলিজার লগে গাঁথলাম তোমারে
আমি তো একা না!
ঘুমপাড়ানি গান
~
দরিয়া এত সুন্দরতায় দোলায়
তার লাখ লাখ তারকারে—
দরিয়ার দরদিয়া সুরে
আমি ঢুলাই আমার নিজের মানিকরে।
নিশি রাইতের মুসাফির হাওয়া দোল দেয় গমের খেতে;
বাতাসের ননাইয়া সুরে
আমি দোল দিই আমার কলিজার ধনরে।
খোদা—আমাদের পালনকর্তা
তাঁর হাজারো দুনিয়ারে শান্ত রাখেন নিরবে;
আন্ধারে তার হাতের পরশে
আমি শান্ত করি আমার খোকনসোনারে।
রাইত
~
আমার ছোট্টসোনা, তুমি ঘুমে বলে
এই সূর্যাস্ত আর ঝলমলাবে না
এখন শিশিরের চাইতে না আর উজ্জ্বল কিছু আছে
না তোমার চেনা আমার এই মুখের চাইতে কিছু।
তুমি ঘুমে বলে, আমার জাদুমণি
রাস্তায় কিছুই নাই যে আমরা দেখবো—
না নদী ছাড়া কিছু দীর্ঘশ্বাস ফেলতেছে
না আমি ছাড়া কিছু।
সমস্ত পষ্টতা খোয়ায় লীন হয়ে যাইতেছে
আকাশে নীলের শ্বাস এখনও আছে—
দুনিয়ার উপরে তোলা একটা হাতের মতন
নিরবতা আছে, থাকবে।
শুধু আমি না—আমার জাদুও
আমার গানের লগে লগে ঝিমাইতেছে ঘুমে
এমনকি পুরা দুনিয়াও ঘুমায়
আমার ঘুমপাড়ানি গানের দোলায়।
আম্মু আছি
~
ঘুমাও, আমার মানিক
ঘুমাও আর হাসো মিটিমিটি
রাতজাগা তারা হয়ে
তোমারে ঢুলাই আলতো করি।
আলোতে পিয়ো আর খুশি থাকো
যত ভালো তুমি পাইলা
সব আমারে পাওয়ার মধ্যেই ।
ঘুমাও, আমার লক্ষ্মীটি
ঘুমাও আর হাসো মিটিমিটি
ননাইয়ের দুনিয়া হয়ে
তোমারে ঢুলাই আলতো করি।
টকটকা গোলাপটারে দেখো,
যতটা পারো লাল হও এমন
আর পুরা দুনিয়ায় পাল্লা দাও
যেভাবে তুমি আমার নাগাল চাও।
ঘুমাও, আমার জাদুমণি
ঘুমাও আর হাসো মিটিমিটি
খোদার ছায়া হয়ে
তোমারে ঢুলাই আলতো করি।
সুন্দরতা
~
বাবুটা এত যে ননাইয়া
যেমন মিষ্টি এই বইতে থাকা হাওয়া।
যদি সে আমার মাই পেয়ে যায় আর আমি ঘুমাইতে থাকি
সে টানে আর আমি টেরও পাই না।
বাবুটা ঐ নদীর চাইতেও সুরেলা
যে তার বাঁকে চক্কর দেয় পাহাড়টারে।
আমার জাদু ঐ দুনিয়ার চাইতেও সুন্দর
যেখানে সে একটা নজর চুরি করে নেয়।
বাবুটা অনেক অনেক দামী
বেহেশতে যাওয়া বা পুরা দুনিয়া পাওয়ার চাইতেও।
আমার মাইয়ে সে পায় জন্তুতা
আর আমার গানে মখমলতা।
তার ছোট্ট শরীর এতটাই ছোট
লাগে যে একটা ছোট্ট বীজ যেন
স্বপ্নে যতটা না ভারী তার চাইতেও কম ওজন;
কেউই তারে দেখে নাই, তবুও সে আমার!
ভদ্রতা
~
যখন আমি গান শুনাই তোমারে,
দুনিয়ার অন্যায়গুলা থামি যায়:
সবই মিষ্টি লাগে তোমার মন্দিরে:
ঝরনা গড়ানো ক্ষত আর বনগোলাপের আঁচড়ও।
যখন আমি তোমারে গান শুনাই,
শয়তান পলায়ে যায় সবখান থেকে:
ভদ্র হয়ে যায় তোমার চোখের পাতার মতন
সিংহ হয় আর হয় শিয়াল।
দুঃসহগীতি
~
ছোট্টসোনা, চলো আমরা খেলি
রাজা আর রাণী হয়ে।
এই সবুজ খেত তোমার,
এটা আর কার হতে পারে?
এই উচ্ছল শস্যের খেত
তোমার জন্যেই তড়তড়ায়ে বাড়তেছে।
এই পুরা চরই তোমার,
আর কারই বা হতে পারে এটা?
ফলের বাগানগুলা আমাদের মধু দেয়,
যাতে আমরা ওদের পেয়ে খুশি হতে পারি।
(না, এটা সত্য না যে বেথেলহামের শিশুটার মতন তুমি ঠকঠকায়ে কাঁপো—
আর এটাও ভুয়া যে
তোমার আম্মুর মাই শুকায়ে যাইতেছে!)
ভেড়াগুলা বাড়তেছে পশমে,
ভেড়ার লোমে আমি এত শক্ত কাপড় বুনব—
আর এই সবগুলা পালই তোমার
এগুলা আর কার হতে পারে, সোনা?
গীর্জার সন্ধ্যাগীতির সময়ে
আস্তাবলে গড়গড়ায়ে দুধ নামতেছে বাঁট থেকে।
আর ধানের এই গাদাগুলা—
আর কারই বা হতে পারে এরা?
(না, এটা সত্য না যে বেহেলহামের শিশুর মতন তুমি ঠকঠকায়ে কাঁপো—
আর এটাও ভুয়া যে
তোমার আম্মুর মাই শুকায়ে যাইতেছে!)
হুম্মম—সোনামানিক, চলো আমরা খেলি
রাজা আর রাণী হয়ে।
শিশির
~
এটা ছিল শিশিরে ছোঁয়ানো একটা গোলাপ
আমার জাদু তো জানতো, এটা ছিল আমার মাই।
হালকা মাংস ছাড়ানো,
নরম—যাতে তার ক্ষতি না হয়,
আর বাতাসও ঘুরতিপথ বানায়
যাতে সে ছের্বা না খায়।
এক রাইতে বিশাল আসমান থেকে সে নামলো,
তার জন্যেই তো মউত থেকে ফিরি আসলো তার মা,
ফলে সে আর কান্দে নাই।
খুশিমনে এত শান্ত হয়ে ছিল
কোঁ শব্দটাও করে নাই;
যেন গোলাপের মধ্যেই একটা গোলাপ—
এত চমৎকার কিছু কখনোই হয় না আসলে।
এটা ছিল শিশিরে ছোঁয়ানো একটা গোলাপ
আমার মনি তো জানতো, এটা আমার মাই।
কম্প
~
আমি চাই না তারা আমার খুকুরে
পালা করে নিয়ে খাদে ফেলুক।
শে উড়ি যাইতে পারে আকাশে
আবার আর কখনো তো নাও নামতে পারে আমার পাপোশে—
বা আমার হাতের নাগালে কার্নিশে—খোপগুলার মধ্যে,
তার চুল আঁচড়ানিও না হইতে পারে।
আমি চাই না তারা আমার জাদুরে
পালা করে নিয়ে খাদে ফেলুক।
আমার খুকুরে রাজকন্যা বানানোর জন্যে
আমি চাই না তাদেরকে।
ছোট্ট সোনালি স্লিপারে কিভাবে যে
মাঠে শে খেলবে—
আর যখন রাইত ঘনাবে, সে কী আর
মিছা মাততে পারবে আমার লগে!
আমি চাই না তারা আমার খুকুমণিরে রাজকন্যা বানাক।
আর আমি এমনকি খুব কমই চাই যে
একদিন তারা তাদের রাণীরে মুকুট পরাক।
তারা তারে একটা কাঁটাতে তুলবে,
যেখানে আমার ঠ্যাঙ্গের তালুও চইড়তো ন।
যখন রাইত ঘনাবে
তারে ঘুমানোর জন্যে আমি দুলাইতেও পারুম না।
আমার খুকুরে রাণী বানানোর জন্যে
চাই না আমি তাদেরকে।
ছোট্ট ভেড়া
~
এমন কোমল রহমতের মতন
ছোট্ট ভেড়া আমার,
তোমার মখমলি মসের মনোহর গুহা-ই
আমার মাই।
চান্নি পশরের মতন ধবধবা
সাদাটে মাংস,
আইজ রাইতে তোমার দোলনা হতে গিয়ে
অন্য সবকিছুই আমি ভুলি যাব।
আমি দুনিয়ারেই ভুলি যাই
আর চাই আরো বেশি করি শুধু আমার মাইয়েই
তোমার খিদা মিটাইতে।
জাদু আমার, তোমার ছুটির জন্যে
বাকিসব সব ছুটিই শেষ হয়ে যায়—
আমি শুধু জানি যে
আমার ভরসাতেই তুমি আছো।
হদিস
~
আমি এই মনাটারে পাইছি।
যখন আমি দেশে গেছিলাম—
তারে শস্যের কাঁটার ভিতরে
কুড়ায়ে পাইছি—ঘুমন্ত।
বা হতে পারে যখন
আঙ্গুরখেত কাটতে নিছিলাম :
এর ডালে ডালে খুঁজতে গেছিলাম:
আমি তার গালে পিটাইছি।
এই কারণে, আমি ডরাই
যখন আমি ঘুমাই—
সে খোয়ার মতন লীন হয়ে যাইতে পারে
ঐসব আঙুরলতায়।
আমার গান
~
যে গান আমি গাইলাম
বিমর্ষ বাচ্চাগুলার জন্যে,
করুণার সীমা ছাড়ায়ে তা
আমার জন্যে গাই।
যে গান আমি বিলাপ করলাম
পীড়িত শিশুর জন্যে,
এখন আমিই পীড়িত হয়ে
আমার জন্যে গাই।
নিষ্ঠুর আলোটা আমার চোখে ছুরির মতন লাগে।
আর যেকোন শব্দই আমারে আউলায়ে দেয়।
যেই গানে তারে ঢুলাইতাম আমি
তা আমার জন্যে গাই।
যখন আমি তাদেরকে বুনতেছিলাম
মথের মতন এত তুলতুলা নরম লাগতো—
আমি জানতাম না আমার গরীব আত্মাটা যে
এতটা শিশু।
যেই গান আমি গাইলাম
বিমর্ষ বাচ্চাদের জন্যে
করুণার সীমা ছাড়ায়ে তা
আমার জন্যে গাই।
ফুল্লরা
Latest posts by ফুল্লরা (see all)
- মরম আল মাসরী’র কবিতা - মার্চ 12, 2024
- ফোরো ফারোখজাদের কবিতা ২ - অক্টোবর 21, 2023
- ফোরো ফারোখজাদের কবিতা - নভেম্বর 28, 2022