Main menu

আমার প্রশ্ন হইল, কোনো ভাষারে তোমার কিংবা আমার কইরা তুলে আসলে কোন বিষয়টা? ঝুম্পা লাহিড়ী Featured

This entry is part 29 of 29 in the series ইন্টারভিউ সিরিজ

সত্যি কইতে, নাইন্টিস কিড হিসাবে ঝুম্পা লাহিড়ীর নামটা আমার কাছে নেমসেক সিনেমার জন্যই পরিচিত। তার গল্পটারে আমি ওইভাবেই প্রথম জানছি— যেইটা তার নিজের তেমন একটা পছন্দ ছিল না। মানে সিনেমাটা। উনি নিজের মতো কইরা নেমসেকের একটা ভার্সন করসিলেন। একেবারে মেদহীন। কিন্তু সেইটা ঠিকভাবে একসেপ্টেড না হওয়াতে উনি ওইটা নিজের কাছেই রাইখা দিসেন।

আমার কাছে মনে হয়, একজন লেখকরে জানতে পারার মাধ্যম শুধু তার লেখা বই না। তার ইন্টারভিউগুলা অনেক বেশি সাহায্য করে তারে জানতে। কোনো একটা প্রশ্নের জবাবে এই যে একটা ‘র’ উত্তর— একটা হযবরল বিষয়— হয়তো গুছায়া না কইতে পারা, এই তো। এখানেই তো তার চিন্তার ছড়ানো ছিটানো মণিমুক্তাগুলা পাওন যায়। এইখানে কোনো খসড়া নাই। বাছবিচার নাই। কাঁটাছেঁড়া নাই। জাস্ট যা ভাবতেসেন, যা ভাবতে চাইতেসেন— তা কয়া ফেলার একটা সুন্দর চেষ্টা। অবশ্যই এতে যিনি ইন্টারভিউ নিতেসেন, তার একটা বড় ভূমিকা আছে। সবাই লেখকদেরকে সেই জায়গাটা দিতে পারে না। ফলে লেখকও একটা ভড়ং ধইরা, একটু পরিশীলিতভাবে কথা কওনের চেষ্টা করবেন। হয়তোবা কথা কওনের জন্য তিনি নিজের তৈয়ার করা কোনো চরিত্ররেই বাইছা নিলেন!

এই ইন্টারভিউটাতে ঝুম্পা কী করসেন, সেইটা আমি জানি না। কিন্তু এইটার সাথে দিন কাটাইতে কাটাইতে আমার মনে হইসে, উনি নিজের মধ্যকার যে লুকানো ছাপানো কথাগুলা— এইটা ঠিক ওইভাবেই সামনে রাইখা দেয়ার একটা সুযোগ পাইসেন এইখানে। উনি এমন অনেক কথাই বলসেন, যেইটা হয়তো কোথাও না কোথাও কনট্রাডিকশন আনে। আর সেজন্যই কথাগুলা এত আসল বইলা ঠাওর হয়। কারণ আমরা তো সবসময় রিজিড না। লেখকরা তো আরো না। তার কথায় তারল্য আছে। তারল্যটা টের পাওয়া যায় বইলাই ইন্টারভিউটা আমার ভাল্লাগসে।

ঝুম্পার যে বিষয়টা আমারে বেশি আনন্দ দিসে, তা হইসে নতুন কিছু শিখবার আর করবার প্রতি তার আগ্রহটা। উনি যেমনে ইতালিয়ান ভাষা নতুন কইরা শিখার পর সেই ভাষায় লেখালেখি করতেসেন, এবং সেইটা নিয়া আনন্দ পাইতেসেন— এইটা ভাইবাই আমার ভাল্লাগসে। এইটা একটা আশা দেয়। আবারো মনে করায়া দেয় যে থাইমা যাওয়ার কিছু নাই। কিছুই না।

অনিন্দিতা চৌধুরী
মার্চ, ২০২৫

ঝুম্পা লাহিড়ীর সাথে আমার প্রথম কথা হইসিল এই বছরের জুলাই মাসে। ত্রাস্তেভায়ারের উপরের দিকে, জ্যানিকুলামের [পশ্চিম রোমের একটা পাহাড়] ধারে তার অ্যাপার্টমেন্টে বইসা আমরা কথা কইসিলাম। খুব গরম ছিল তখন। রোমের ইতিহাসে সবচাইতে গরম দিন— একেবারে ১১০ ডিগ্রি। আমরা লিভিং রুমে একটা বিশাল ফ্যান ছাইড়া বসলাম। আমাদেরকে দেখতে অনেকটা হেনরি জেমসের কোনো দৃশ্যের মতো মনে হইতেসিল।

এরপরে একেবারে বিকাল-সন্ধ্যার দিকে আইসা ছাদে দাঁড়ানো সম্ভব হইলো। অ্যাপার্টমেন্টে ছড়ায়া-ছিটায়া থাকা জিনিসপাতির মাঝে ছিল ইতালিয়ান কমিউনিস্ট পার্টির লোগোওয়ালা একটা প্ল্যাক আর কাঁচের কেসে বান্ধাইয়া রাখা সোকার প্লেয়ার দানিয়েল দে রোসির সাইন করা একটা জার্সি।

লাহিড়ীর জন্ম ১৯৬৭ সালে, কলকাতায়। আর [আম্রিকার] রোড আইল্যান্ডের ছোট একটা শহরে তার বাইড়া উঠা। ২০১২ সালে উনি উনার হাজব্যান্ড, সাংবাদিক আর সম্পাদক অ্যালবার্টো ভুরভোলিয়া-বুশ আর বাচ্চাকাচ্চাদের, মানে অক্টাভিও আর নূররে নিয়া রোমে চইলা আসলেন। গত দশ বছরের একটা বড় অংশই উনি কাটাইসেন আমেরিকা আর ইতালির মাঝে দৌড়াদৌড়ি কইরা। ২০১৫ থিকা ২০২২ পর্যন্ত উনি প্রিন্সটনে পড়াইসেন। আর গত ফলের পর থিকা তার নিজের কলেজ, বার্নার্ড কলেজে একটা ক্রিয়েটিভ রাইটিং প্রোগ্রামের ডিরেকশনও দিছেন।

অক্টোবরে আমাদের আবার দেখা হইল ব্রুকলিনের ফোর্ট গ্রিনে, উনার বাসায়। ব্রাউনস্টোন। একটা চারতলা বিল্ডি, চারদিক ঘিরা বড় কিচেন আর পার্লার ফ্লোরে একটা লিভিং স্পেস। একেবারে উপরের তলায় ঝুম্পার স্টাডি। এক-দুই বছর ধইরা উনি আর ভুরভোলিয়া-বুশ এই বাড়িতে থাকেন নাই। আর আমরা যখন সোফায় বইসা কথা কইতেসিলাম, তখন উনি জায়গাটা ঠিকঠাক করতেসিলেন। কিছু ফার্নিচার তখনো বাক্সে, আর কিছু আর্ট পিস, অ্যাবস্ট্রাক্ট ফটো কোলাজ আর বড় সাইজের ক্যানভাসগুলারে সাদা মার্বেলের ম্যান্টেলপিসের সাথে ঠেস দিয়া রাখা ছিল। এগুলা আবার ঝোলানো হইব। দেয়ালগুলা পুরা বেগুনি রঙের।

আমরা এই দুই শহরেই ইতালিয়ানে কথা কইসি। উনিই চাইছিলেন। আসলে উনার থার্টিসের শুরুতে ভাষা শিখা শুরু করেন, কিন্তু তার কথাবার্তার ধরন দেইখা বুঝাই যায় না যে এত দেরিতে শিখসেন। এত স্বতস্ফূর্তভাবে কথা কন উনি। কোনো ফর্মালিটি নাই, ভান নাই। (আমার সামনে উনি আর ভুরভোলিয়া-বুশও একে অন্যের সাথে ইতালিয়ানেই কথা কইসেন।) ইংরেজি শব্দগুলা উনি হঠাৎ হঠাৎ ব্যবহার করসিলেন। হয়তো অন্য কারো কোটেশন কওয়ার সময়, আর নয়তো আমেরিকান পাবলিশিংয়ের কোনো আলাপ দিবার জন্য— যার সাথে তার সম্পর্কটা আবার একটু হযবরল। তার প্রথম কালেকশন ‘ইন্টারপ্রিটার অব ম্যালাডিস’ (১৯৯৯)-এর জন্য ফিকশনে পুলিৎজার জিতার সময় উনার বয়স ছিল বত্রিশ। এই ক্যাটাগরিতে উনিই সবচেয়ে অল্পবয়সী লেখক। এই বইয়ে থাকা গল্পগুলা, কিংবা ২০০৮ সালের ‘আনঅ্যাকাস্টমড আর্থ’- এর লেখাতেও ধরাছোঁয়ার বাইরের একটা হালকা যন্ত্রণা তুইলা ধরা হইসে। মাত্র কয়টা বাক্যের ফারাকে একেকটা চরিত্রের আবেগ, তাদের বোধশক্তিরে অনেক বছরের অভিজ্ঞতা দিয়া ফালানোর মতো কিছু একটা। দুইজন প্রেমিক-প্রেমিকা বা আত্মীয়ের মধ্যকার ডাইনামিকটা কেমনে খুব ছোট ছোট বিষয়ের কারণে বিশাল সব পরিবর্তন নিয়া আসে— সেই অদ্ভুত শক্তিটার প্রতিও উনি একটা মনোযোগ টানার চেষ্টা করছিলেন।

অনেকে যেইটারে উনার মূল সাবজেক্ট ম্যাটার মনে করে, উনি ওইটার জন্যও পাঠকদের কাছে ভালোই সেলিব্রেটেড হইসেন। আর সেইটা ছিল আমেরিকায় ভারতীয় ইমিগ্র্যান্টদের অভিজ্ঞতা। ২০০৩ সালে ছাপা তার প্রথম উপন্যাস ‘নেমসেক’ একইসাথে ক্রিটিক্যাল আর কমার্শিয়াল হিট ছিল। এমনকি এইটা ছাপার তিন বছরের মাথায় একটা ফিল্মও তৈরি হয়। এরপর ২০১৩ সালের লোল্যান্ড নিয়া লাহিড়ী মনে করেন, এইটা তার সবচাইতে এমবিশাস কাজ। আর ইংরেজি ভাষায় সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণও। ফ্যামিলি সাগা থিকা বেশ আলাদা, একই জায়গা আটকায়া না থাকার মতো বেশ ভাইঙা-চুইরা দেয়া কিছু বিষয় এইটাতে ছিল। আজ পর্যন্ত ইংরেজিতে লেখা উনার এইটাই শেষ ফিকশনাল কাজ।

লাহিড়ী আমারে কইলেন, “আমার মনে হয় যে আমি ইতালিয়ানে লেখি বইলা মানুষজন ভাবে যে আমি বোধহয় আর লিখতেছিই না।” কিন্তু ইতালিয়ানে চইলা আসার পর থিকা উনি শুধু ছয় বছরে নয়টা বই লেইখা খ্যাতিই কামান নাই, বরং লেখালেখির বিভিন্ন নতুন পদ্ধতি আর ধাঁচ খুঁইজা পাইছেন। এর মধ্যে আছে ইন আদার ওয়ার্ডসের ডায়েরির মতো লেখা পত্রিকার কলামগুলা (২০১৫, অনুবাদ ২০১৬-তে), এইটাতে একটা ভাষা শিখা আর তাতে লেখা শুরুর বিষয়ে অনেক কথা আছে। এইটাতে ‘হোয়ারঅ্যাবাউটস’ নামের ছোট উপন্যাস (২০১৮, অনুবাদ ২০২১-এ) লেখার গঠনের চালচিত্রও ফুইটা উঠে। এই উপন্যাসটা ছিল একজন মধ্যবয়সী ইউনিভার্সিটি প্রফেসরের জীবন নিয়া। (লাহিড়ির মতে, “ইংরেজিতে টাইটেলটা ঠিকঠাক জমতেসে না।”) এছাড়াও এর মধ্যে অবশ্যই কথা বলা উচিত রোমান স্টোরিসের তরতরায়া আগায়া যাওয়া গল্পগুলারে নিয়া (২০২২, অনুবাদ ২০২৩-এ), এইটার মধ্যে সেই শহরের বিভিন্ন প্রজাতির বিদেশীদের মধ্যকার গল্প আছে— যে শহরটা উনার কাছে নিজের ঘর। উনি হোয়ারঅ্যাবাউটস আর রোমান স্টোরিসের বেশিরভাগটাই নিজে নিজে ইংরেজিতে অনুবাদ করসেন। ডমিনিকো স্টারনানের নভেলগুলা— টাইস, ট্রাস্ট আর ট্রিকও তার অনুবাদ করা আছে। এর মধ্যে শেষের নভেলটা অনুবাদ সাহিত্যে ন্যাশনাল বুক অ্যাওয়ার্ডও পাইসে। এই কারণে উনি আবার নতুন কইরা আমেরিকায় এই লেখকরে পরিচয় করায়া দিতে পারসেন। ক্লাসিসিস্ট ইয়েলেনা বারাজের সাথে উনি আবার এখন মডার্ন লাইব্রেরির জন্য ওভিডের মেটামোরফোসিস নিয়া নতুন অনুবাদের কাজ করতেসেন।

লাহিড়ীর সাথে কথা কইলে উনার মধ্যে থাকা অস্থিরতাটা টের পাওয়া যায়। যেইটা উনার জীবন আর লেখালেখি দুইটাতেই ছড়ায়া আছে। এইটা যেন একটা কবুতরের খোপে থাকা কোনো মানুষের অনবরত লড়াই, একটা নৈতিকতার টানাটানি।

শেষবার বার্নার্ডে উনার অফিসে যখন আমাদের দেখা হইল, আমার মনে আছে রোমে উনার লিভিং রুমের মাঝখানে একটা সবুজ স্যুটকেস ছিল—ওইটা দেখায়া উনি মাফ চাইসিলেন এই বইলা যে তার জীবনটা একেবারেই আউলা ঝাউলা। অফিসেও উনি আমারে পিছন দিকে আঙ্গুল দিয়া দেখাইলেন— স্যুটকেসটা এইবারও আছে।

ফ্রান্সেসকো প্যাসিফিকো
২০২৪

​​
ইন্টারভিউয়ার: আপনি কথা কইবার সময় যেমনে হাতপা নাড়ান, সেটা খেয়াল না কইরা থাকার উপায় নাই। আপনি কি ইংরেজিতেও এইভাবেই কথা কন?

ঝুম্পা লাহিড়ী: না, এইটা আমার ইতালিয়ান পার্ট। আমরা যদি এখন ইংরেজিতে কথা কইতাম, তাইলে নিজেরে আরেকটু আঁটসাঁট লাগতো, আরেকটু বুইঝা-শুইনা কইতাম।

ইন্টারভিউয়ার: এই ফারাকটা ক্যান?

লাহিড়ী: এইটা বুঝাইয়া বলা প্রায় অসম্ভব– কিন্তু ইতালিয়ানে আমি ওই ঝুম্পা হইতে পারি, যে কিনা পর্তা পর্তেসে ক্যালাব্রিয়ান কাপলের কাছ থিকা স্যান্ডউইচ কিনতে যায়, যে কিনা ত্রাস্তেভায়ারের পুলে যায়। আর যখন আমি সাঁতার কাটার সময় আমার পাশের লেনের মানুষরে ‘হাই’ বলি,তখন ওগো মনে একবারও আমার অন্য জীবন নিয়া বিন্দুমাত্র ধারণা থাকে না। আর এই মুহূর্তগুলাতে আমি সবচেয়ে বেশি জ্যান্ত, সবচেয়ে বেশি সহজ বোধ করি। ইতালি থাইকা পাওয়া আমার সবচেয়ে বড় উপহার হইসে এমন একটা আওয়াজ, যেটা আমারে বলে যে কোনো ধরনের নিয়মে চলার আমার কোনো দরকার নাই। যে আমি চাইলেও যা ইচ্ছা হইতে পারি– যা ইচ্ছা করতে পারি, একেবারে নিজের শর্ত মোতাবেক। শুধু ইতালিয়ানে লেখার সময়ই আমার নিজের কণ্ঠ ছাড়া অন্য সব জাজমেন্টাল আওয়াজগুলা বন্ধ কইরা দিতে পারি।

ইন্টারভিউয়ার: এইটা কোন আওয়াজের কথা কইতেসেন?

লাহিড়ী: ইংরেজিতে লেখার সময়, সবসময় একটা চাপ কাজ করে যে আমি যদি একটা নির্দিষ্ট লক্ষ্য পূরণ করতে না পারি, তাইলেই আমি ব্যর্থ। একেবারে শুরু থিকাই আমি এই জাজমেন্টটা আমেরিকান কালচার থেকে পাইসি— ওদের মধ্যে একেবারে ঘুইলা-মিইলা যাওয়ার একটা প্রত্যাশা, আর যখন কিনা আমি ইন্ডিয়ান-আমেরিকান অভিজ্ঞতা, ইমিগ্র্যান্টদের অভিজ্ঞতাটারে ‘রিপ্রেজেন্ট’ করতে লেখক হইলাম– তখন আমার সামনে আসলো একেবারে আদি জাজমেন্ট, যেইটার কোনো শুরু কিংবা শেষ নাই– আমার নিজের বাবা-মায়ের, তাদের ইমিগ্র্যান্ট কমিউনিটির জাজমেন্ট। যেই কমিউনিটিতে আছে তাদের বহু উঁচু ডিগ্রিওলা বন্ধুরা। তাই এইটা আমার জন্য তাই একটা ঝামেলাওলা ভাষা। এই মানুষগুলা সকলেই নিজেদেরকে প্রতিষ্ঠিত করে জীবনে আগায়ে যাইতে চাইতেসে। আর সেইসাথে যে জীবনটা আমার বাপ-মা কলকাতায় ফেলে আসছে, সেই জীবনের জাজমেন্টও কিন্তু আমার চোখের সামনে ঝুলতে থাকতো। এবং এই সবগুলা জাজমেন্টই আমি আমার ভেতরে ঢুকায়া নিসি।

ইন্টারভিউয়ার: একটা মজার জিনিস হইল যে, আপনার ইংরেজিতে লেখা বইগুলাতে পরিবাররে একটা বড়সড় ফোর্স হিসেবে দেখানো হয়। কিন্তু আপনার ইতালিয়ান বইগুলাতে নারীদেরকে এককভাবে আপনি মধ্যমণি করে রাখসেন।

লাহিড়ী: ধন্যবাদ, ডক্টর প্যাসিফিকো– এইটা হয়তো এই কারণে যে শুধু ইতালিয়ানেই আমি আমার জীবনের সেন্টার হইতে পারি।

ইন্টারভিউয়ার: ঠিকাছে! সেশন শেষ! এখন তিনশো ডলার দেন!

আচ্ছা বলেন তো, আপনার কখনো নিজের আওয়াজ শুইনা আনন্দ হইসে?

লাহিড়ী: না, লক্ষ্যটা অবশ্য আমার আওয়াজে খুশি হওনের না। আমি খালি একটা আওয়াজই শুনতে চাই।

ইন্টারভিউয়ার: তাইলে আপনি যখন শুরু করসিলেন, তখন মনে হয় নাই যে বড় কিছু কইরা ফেলতেসেন?

লাহিড়ী: আমি যখন ইন্টারপ্রিটার অফ ম্যালাডিসের গল্পগুলা নিয়া কাজ করতেসিলাম, আমি এমনভাবে লিখতে চাইসি যেন তাতে কোনো ব্যক্তিত্বের ছাপ না থাকে– এমন একটা গল্প, যা একেবারে নিরপেক্ষ হবে, যতটা সম্ভব বাছবিচারহীন, মুক্ত। যেন আমি কোনো দরজা খুলতেসি, কিন্তু তালায় ঘোরানো চাবির আওয়াজটা আমি অন্য কারো কানে যাইতে দিতে চাই নাই।

আমার মনে হয় এইটার কারণ ছিল আমার ভয়, লজ্জা আর নিজের দিকে এটেনশন টানার বিষয়ে সংকোচ। আমি সবার কাছে স্বীকার করতে চাইতাম না— আমার বাপ-মা, এবং সবচেয়ে বেশি অস্বীকার যাইতাম নিজের কাছে যে আমার আসলে লেখালেখির ইচ্ছা ছিল।

ইন্টারভিউয়ার: আপনার বাবা-মা কি আপনার লেখক হওনের বিষয়ে সাপোর্টিভ ছিলেন না?

লাহিড়ী:
আমার পুরাটা জীবন জুইড়াই একাডেমিক হওয়ার একটা প্রেশার ছিল। বাবা আমারে কইত, “তোমার ডক্টরেট করতে হইব। টেনিউর পাইতে হবে। আর তাইলেই ইউনিভার্সিটি সারাজীবন তোমারে দেইখা-শুইনা রাখবে।” আমেরিকায় তার অভিজ্ঞতাটা এমনই ছিল। বিশ্ববিদ্যালয় ছিল তার পুরা দুনিয়া। সে কিংস্টনের রোড আইল্যান্ড ইউনিভার্সিটিতে লাইব্রেরিয়ান ছিল। আমার তিন বছর বয়সেই আমরা ঐখানে চইলা যাই। বিদেশী অনেক কর্মীরে এশিয়া থাইকা যুক্তরাষ্ট্রে আনার জন্য লিন্ডন বি জনসন একটা আইন পাস করসিলেন, যার জের ধইরাই আমার বাবার ভিসা পাওয়া হইলো। আমারে প্রায়ই জিগানো হয়, “এইটা কেমনে সম্ভব যে আপনার গল্পে থাকা সবারই ডক্টরেট ডিগ্রী আছে?” কিন্তু আমি যখন বাইড়া উঠতেসিলাম, তখন এইটা খুব স্বাভাবিকই মনে হইতো। আমার বাবা সবসময়ই স্কলার ছিল– এমনকি সে যখন কলকাতায় জেনারেল পোস্ট অফিসে পার্ট টাইম কাজ করতেসিল, তখনও ম্যান্ডারিন আর রাশিয়ান শিখতেসিল। একইসাথে নাইট স্কুলে গিয়ে লাইব্রেরি সায়েন্স ডিগ্রির পড়া পড়তেসিল। তবে তার সবচেয়ে বড় স্বপ্নটা কোনোদিন পূরণ হয় নাই— তার একটা পিএইচডি করার খুব ইচ্ছা ছিল।

ইন্টারভিউয়ার: কেন পারেন নাই?

লাহিড়ী: তার মাথার উপরে একটা পরিবার চালানোর দায়িত্ব আছিল, তাই ডিগ্রিটা দিয়া সে এমন একটা ক্যারিয়ারই বাইছা নিসে, যেটা দিয়া এইটা করা সম্ভব। সারাটা জীবন বই ক্যাটালগিং কইরাই কাটায়া দিসে। কিন্তু তার আসল প্যাশন ছিল মার্ক্স আর ইতিহাস, আর ষাইটের দশকের শুরুর দিকে ভারত সরকারের কাছ থিকা চীনের পড়তে যাওয়ার জন্য একটা স্কলারশিপও পাইসিল। কিন্তু যখনই যাওয়ার সময় হইলো, তখনই চীন-ভারত যুদ্ধ লাইগা গেল আর স্কলারশিপও আটকায়া গেল। তাই এরপর সে বৃটিশ সরকারের দেয়া একটা জব ভাউচার নিয়া লন্ডনে চইলা গেল,সেইখানেই লন্ডন স্কুল অব ইকোনমিকসে লাইব্রেরিয়ান হিসেবে কাজ করা শুরু করল। এইটা ছিল ১৯৬৪ সালে। একটা সময়ে আইসা বাবা কিছুদিনের জন্য কলকাতায় গেসিল, তার বাবা-মা যাতে তারে বিয়া দিয়ে দিতে পারে– সেইজন্য। এরপর আমার মা তার সাথে লন্ডনে আইল। যদিও মা ভাবসিল, বিদেশে থাকার বিষয়টা মাত্র কিছুদিনের জন্য। কিন্তু তারপরে আমি হয়া গেলাম। এরও দুই বছর পর বাবা এমআইটি লাইব্রেরিতে চাকরি নিল, এর কিছুদিনের মাঝেই ইউআরআই’তে [রোড আইল্যান্ড ইউনিভার্সিটি, আম্রিকা]। এখনও আমি যদি আমার কোনো বই বের হওয়ার পরে তার হাতে দেই, সে সবার আগে কপিরাইটের পাতাটা চেক করে– বইটা কেমনে ক্যাটাগরাইজ করা হইসে, এইটা দেখার জন্য।

ইন্টারভিউয়ার:
একজন মার্ক্সিস্ট বুর্জোয়া!

লাহিড়ী: দেখেন, আমাদের বাড়িতে মার্ক্স ছিল দুনিয়ার সবচাইতে স্মার্ট মানুষটা, এইটাই শেষকথা। আমার বাবা-মা, দুইজনের পরিবারই ছিল ব্রাহ্মণ, কিন্তু তাদের দিন আনতে দিন খাইতে হইতো তাই তাদের আসল জাতটা ছিল কম্যুনিজম। আমার মায়ের তিন ভাইয়ের মধ্যে একজন আসলেই মিলিট্যান্ট ছিলেন, একজন এমন সংগঠক– যে কিনা একটা বন্দুকের কোম্পানির জন্য কাজ করত। তার শোবার ঘরে লেনিনের ছবি ছিল। সত্তরের দশকে আমার বংশের অনেকেই, আমার মায়ের কাজিনদের বেশিরভাগই নক্সাল আন্দোলনে জড়ায়া পড়ছিলেন। আমার এখনো ছোটবেলায় শোনা একটা গল্প মনে পড়ে। আমার দিদা রান্না করতেসিল, তখনই দরজায় জোরে জোরে আওয়াজ শুনা যায়। পুলিশ আইসা দুইজনরে খুঁজতেছিল। দিদা তাদেরকে ছাদের উপরের জলের ট্যাংকে লুকায়া রাখসিল।

ইন্টারভিউয়ার: আপনার বড় হইয়া উঠার জার্নিতে কি তাইলে আপনার বাবা-মায়ের রাজনীতি একটা বড় অংশ ছিল?

লাহিড়ী: একটা সময়ে আমার বাবার বিশ্বাস এত বেশি একগুঁয়ে হয়া গেসিল যে বার্নার্ডে [ম্যানহাটনের একটা লিবারেল আর্টস কলেজ] যখন বাবা-মা আমার সাথে দেখা করতে আসলো, আমি তাদেরকে ফিফথ এভিনিউতে হাঁইটা শপউইন্ডোস ঘুইরা দেখার কথা কওয়াতে মানা কইরা দিসিল। শুধু তাই না, টাকা খরচের আলাপে সে এতটাই খেইপা গেসিল যে বইলা লাভ নাই। আজ পর্যন্ত, তার সব কামাই– এর প্রায় সবকিছুই তার গরিব আত্মীয়-স্বজনের সাহায্য এবং ভারতের বিভিন্ন জায়গায় অনুদানের জন্য দেয়া হইসে। আমার বাবা ১৯৪৩ সালে বাংলার দুর্ভিক্ষ নিজের চোখে দেখসে, যখন ইংরেজরা কলকাতারে না খাওয়াইয়া মারতেসিল। তাই ছোটবেলায় আমি আমার জন্মদিনের পার্টিগুলাতে আমেরিকান বন্ধুদেরকে ডাকতে একটু ইতস্তত করতাম। কারণ তারা যখনই খাবার-দাবার না খাইয়া প্লেটে রাইখা দিবে বা ফালায়া দিবে, আমার বাবা-মা তাদেরকে দুইটা কথা শুনায়া দিবে। ছোটবেলায় আমার বাবা-মা প্রতিটা জিনিস কিনার আগে লম্বা আলাপ-আলোচনা কইরা নিত। আমরা কিংস্টনে আসি মাত্র কয়েকটা স্যুটকেস নিয়া, সেইসাথে রান্নার দুয়েকটা বাসন-কোসন। আমি বাড়ায়া বলতে চাই না, কিন্তু আমার লালন-পালনে সবসময়েই একটা মিতব্যয়িতার ছাপ ছিল এবং কখনো কখনো আমার মনে হইতো যে আমরা শুধু দিন পার কইরাই যাইতেছি।

ইন্টারভিউয়ার: একজন লেখক হিসেবে আপনার বাবা-মায়ের অতীতটারে খুঁইড়া দেখার কোনো দায় কি বোধ করেন?

লাহিড়ী:
যে জগতটা তাদেরকে ছাইড়া চলে গেসে, সেইটা আমি কোনো না কোনোভাবে খুঁইজা বেড়াইতে চাই— যতটা বেশি খুঁটিনাটি জানা যায়, ততটাই জানতে চাই। এর কারণ আমার মনে হয়, আমি অনুভব করতে পারসিলাম যে ঘর ছাইড়া আসার জন্য তাদের মধ্যে কতটা অপরাধবোধ আর দুঃখ আছে। আমরা কয়েক বছর পর পরই কলকাতায় ঘুরতে যাইতাম এবং ফিইরা আসার দিনগুলা সববারই আমার কাছে আতঙ্কের ছিল। কারণ আমার বাবা যখন তার বাবা-মারে বিদায় দিত, তা দেখা খুবই কষ্টকর ছিল। এছাড়া আর কখনোই আমি তারে কান্নায় ভাইঙা পড়তে দেখি নাই। কোনো সান্ত্বনায় সে বাঁধ মানতো না— তারে দেইখা আমার ভয় লাগত। আর এরপরে ট্যাক্সিতে কইরা এয়ারপোর্ট যাওয়ার সময় ছিল সুনসান নীরবতা, মনে হইতো যেন সে আস্তে আস্তে তার নতুন বাস্তবতার সাথে অভ্যস্ত হইতেসে। একবার যখন আমরা যুক্তরাষ্ট্রে ফিইরা আসতাম আর তার কাজকর্ম শুরু হয়ে যাইত, তখন সে ঠিকঠাক। কিন্তু আমার মায়ের জন্য রোড আইল্যান্ড ছিল এক নিঃসঙ্গ নরক। তার কলকাতার জন্য পেট পুড়তো, সেইখানকার খাবার, গন্ধ, গাছপালা আর সবচাইতে বেশি তারে ভোগাইত তার পরিবারের স্মৃতি।

ইন্টারভিউয়ার: আপনার মায়ের কথা কিছু বলেন।

লাহিড়ী: আমার মায়ের পরিবার গরিব ছিল, কিন্তু সে বাইড়া উঠসিল পরিচালক, শিল্পী আর সঙ্গীতজ্ঞদের দুনিয়ায়। তার বাবা– ফণি ভূষণ স্যান্যাল ছিলেন একজন চিত্রশিল্পী। সত্যজিৎ রায়ের সঙ্গে সেট ডিজাইনে তার বহু ফিল্মে তিনি কনসালটেন্ট হিসাবে কাজ করসেন। রোড আইল্যান্ডে আমাদের বাড়িতেও তার কিছু পেইন্টিংস ছিল। সেই ছবিগুলারে ফ্রেম করাইতেই মনে হয় আমার বাবা-মা যা হোক কিছু টাকাপয়সা খরচ করসিল। আমার মা নাটকে অভিনয় করত। একসময় তারে পথের পাঁচালির দুর্গার জন্যও ভাবা হইসিল। ওই পার্টটা যদি পাইত, তাইলে জীবন হয়তো তারে পুরা অন্যদিকে নিয়া যাইত। কিন্তু সে আবার অধ্যাপকও হইতে চাইত। বিয়ের আগে মা বাংলা সাহিত্যে মাস্টার্স করসিল, কখনো-সখনো কবিতাও লিখত। এই ভবিষ্যতটা সে চাইলেই পাইতে পারত। কলকাতার কোনো ভালো স্কুল বা ইউনিভার্সিটিতে শিক্ষকের ভূমিকায়, নতুন প্রজন্মের কাছে বাংলা কবিতারে নতুন রূপে আনার মাধ্যমে। কিন্তু এর বদলে কী হইলো? সে আইসা পড়ল আমেরিকার এই নির্জন, প্রাদেশিক আর কখনো-সখনো বেশ দুশমনমার্কা একটা এলাকায়– যেখানেই যাইত, সেখানেই প্রায় সময় তারে আনাড়ি বিদেশীর নজরে দেখা হইতো।

তবে শেষমেশ সে একটা এলিমেন্টারি স্কুলের টিচার’স অ্যাসিস্ট্যান্টের চাকরি নেয় আর বাচ্চাদের নিয়া কাজ করতে তার অনেক ভালোও লাগতো। কিন্তু শুরুর বছরগুলায়, আমার বোনের জন্মের আগে আমরা দুইজন একেবারে একলা বাসায় থাকতাম। আমি যেন তার বিষণ্ণতা,তার একাকিত্ব নিজের মধ্যে নিয়ে নিসিলাম। তার গল্পগুলা শুনতে শুনতে আমার মনে হইতো, আমারে বড় কইরা তোলাটা তার কাছে কত অদ্ভুত! মা বলত, “আমি আঠাইশ জন ভাইবোনের সাথে বড় হইসি ঝুম্পা। স্কুলের পর একটা না একটা পিসি-জ্যাঠার বাড়িতে যাইতাম। ছয়জনের সাথে একটা ঘর ভাগাভাগি কইরা আমার বড় হওয়া।” তার জন্য, ছোট পরিবার মানে অনেক বড় কিছুর ভগ্নাংশ। আমার মা আর আমি অনেক ঘনিষ্ঠ ছিলাম, অনেকটা একে অপরের উপর নির্ভরশীলও। কিন্তু তারপরও আমি তার কাছে অচেনা রয়ে যাইতাম। আমি আমেরিকানদের মতো ইংরেজি বলা শিখতেসিলাম এবং তার কাছে আমি দিন দিন আরো বেশি কইরা আমেরিকান হয়ে উঠতেসিলাম। এইটা ছিল সবচেয়ে খারাপ বিষয়– এই অনুভূতিটা, আমার বাবা-মা আর আমার মধ্যকার এই তলানিবিহীন খাদটা, যেভাবে আমরা নিজেদের আশপাশের লগে চলাফেরা করতাম, সেইটা।

[ইন্টারভিউ’র অংশ…]

Series Navigation<< থামতে পারার আর্টটা জানা খুবই দরকারি – মিলান কুন্দেরা
The following two tabs change content below.
Avatar photo

অনিন্দিতা চৌধুরী

জন্ম ১৯৯৭ সালের ২রা মার্চ, সিলেটে। গদ্য-পদ্য দুইটাতেই নিজের মতো কইরা কলম চালায়া যাইতে ভালোবাসেন। অনুবাদ আর উর্দু সাহিত্যে বিশেষ আগ্রহ আছে।

এডিটর, বাছবিচার।
View Posts →
কবি। লেখক। চিন্তক। সমালোচক। নিউ মিডিয়া এক্সপ্লোরার। নৃবিজ্ঞানী। ওয়েব ডেভলপার। ছেলে।
View Posts →
কবি, গল্প-লেখক, ক্রিটিক এবং অনুবাদক। জন্ম, ঊনিশো পচাত্তরে। থাকেন ঢাকায়, বাংলাদেশে।
View Posts →
মাহীন হক: কলেজপড়ুয়া, মিরপুরনিবাসী, অনুবাদক, লেখক। ভালোলাগে: মিউজিক, হিউমর, আর অক্ষর।
View Posts →
গল্পকার। অনুবাদক।আপাতত অর্থনীতির ছাত্র। ঢাবিতে। টিউশনি কইরা খাই।
View Posts →
দর্শন নিয়ে প্রাতিষ্ঠানিক পড়াশোনা, চাকরি সংবাদপত্রের ডেস্কে। প্রকাশিত বই ‘উকিল মুন্সীর চিহ্ন ধরে’ ও ‘এই সব গল্প থাকবে না’। বাংলাদেশি সিনেমার তথ্যভাণ্ডার ‘বাংলা মুভি ডেটাবেজ- বিএমডিবি’র সহপ্রতিষ্ঠাতা ও সমন্বয়ক। ভালো লাগে ভ্রমণ, বই, সিনেমা ও চুপচাপ থাকতে। ব্যক্তিগত ব্লগ ‘ইচ্ছেশূন্য মানুষ’। https://wahedsujan.com/
View Posts →
কবি। লেখক। কম্পিউটার সায়েন্সের স্টুডেন্ট। রাজনীতি এবং বিবিধ বিষয়ে আগ্রহী।
View Posts →
জন্ম ১০ নভেম্বর, ১৯৯৮। চট্টগ্রামে বেড়ে ওঠা, সেখানেই পড়াশোনা। বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগে অধ্যয়নরত। লেখালেখি করেন বিভিন্ন মাধ্যমে। ফিলোসফি, পলিটিক্স, পপ-কালচারেই সাধারণত মনোযোগ দেখা যায়।
View Posts →
জন্ম ২০ ডিসেম্বরে, শীতকালে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অপরাধবিজ্ঞান বিভাগে পড়তেছেন। রোমান্টিক ও হরর জনরার ইপাব পড়তে এবং মিম বানাইতে পছন্দ করেন। বড় মিনি, পাপোশ মিনি, ব্লুজ— এই তিন বিড়ালের মা।
View Posts →
পড়ালেখাঃ রাজনীতি বিজ্ঞানে অনার্স, মাস্টার্স। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়। বর্তমানে সংসার সামলাই।
View Posts →
জীবিকার জন্য একটা চাকরি করি। তবে পড়তে ও লেখতে ভালবাসি। স্পেশালি পাঠক আমি। যা লেখার ফেসবুকেই লেখি। গদ্যই প্রিয়। কিন্তু কোন এক ফাঁকে গত বছর একটা কবিতার বই বের হইছে।
View Posts →
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগে শিক্ষকতা করেন। সংঘাত-সহিংসতা-অসাম্যময় জনসমাজে মিডিয়া, ধর্ম, আধুনিকতা ও রাষ্ট্রের বহুমুখি সক্রিয়তার মানে বুঝতে কাজ করেন। বহুমত ও বিশ্বাসের প্রতি সহনশীল গণতান্ত্রিক সমাজ নির্মাণের বাসনা থেকে বিশেষত লেখেন ও অনুবাদ করেন। বর্তমানে সেন্টার ফর স্টাডিজ ইন সোস্যাল সায়েন্সেস, ক্যালকাটায় (সিএসএসসি) পিএইচডি গবেষণা করছেন। যোগাযোগ নামের একটি পত্রিকা যৌথভাবে সম্পাদনা করেন ফাহমিদুল হকের সাথে। অনূদিত গ্রন্থ: মানবপ্রকৃতি: ন্যায়নিষ্ঠা বনাম ক্ষমতা (২০০৬), নোম চমস্কি ও এডওয়ার্ড এস হারম্যানের সম্মতি উৎপাদন: গণমাধম্যের রাজনৈতিক অর্থনীতি (২০০৮)। ফাহমিদুল হকের সাথে যৌথসম্পাদনায় প্রকাশ করেছেন মিডিয়া সমাজ সংস্কৃতি (২০১৩) গ্রন্থটি।
View Posts →
তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞানের ছাত্র, তবে কোন বিষয়েই অরুচি নাই।
View Posts →
মাইক্রোবায়োলজিস্ট; জন্ম ১৯৮৯ সালে, চট্টগ্রামের সীতাকুন্ডে। লেখেন কবিতা ও গল্প। থাকছেন চট্টগ্রামে।
View Posts →
জন্ম: টাঙ্গাইল, পড়াশোনা করেন, টিউশনি করেন, থাকেন চিটাগাংয়ে।
View Posts →